ভার্চুয়াল কোর্টে জামিন পেল ২০৫ শিশু

ভার্চ্যুয়াল আদালতের মাধ্যমে জামিন পেল সমাজসেবা অধিদপ্তরের অধীন ৩টি শিশু উন্নয়নকেন্দ্রের ২০৫ শিশু। ইতিমধ্যে বিশেষ সরকারি ব্যবস্থাপনায় জামিনপ্রাপ্ত ১৩৫ শিশুকে তাঁদের অভিভাবকের ঠিকানায় পৌঁছে দেওয়া হয়েছে, বাকি শিশুদের ঈদের আগেই ঘরে ফেরা নিশ্চিত করা হবে। বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থায় এটি একটি যুগান্তকারী ঘটনা হিসেবে সব মহলে প্রশংসিত হচ্ছে।

সমাজসেবা অধিদপ্তরের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলা হয়েছে।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সমাজসেবা অধিদপ্তর দেশের তিনটি শিশু উন্নয়নকেন্দ্রে পরিচালনা করে আসছে। কেন্দ্র তিনটি গাজীপুর জেলার টঙ্গী ও কোনাবাড়ী এবং যশোরে অবস্থিত। এর মধ্যে টঙ্গী ও যশোরের কেন্দ্র দুটি বালক শিশুদের জন্য ও কোনাবাড়ীর কেন্দ্রটি বালিকা শিশুদের জন্য নির্ধারিত। শিশু আইন ২০১৩ অনুযায়ী আদালত আইনের সঙ্গে সংঘাতে বা সংস্পর্শে আসা শিশুদের জেলখানায় না পাঠিয়ে তাঁদের উন্নয়নের জন্যই শিশু উন্নয়নকেন্দ্রে পাঠানো হয়ে থাকে।

করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) প্রাদুর্ভাবের পূর্ব পর্যন্ত ৩০০ আসনবিশিষ্ট শিশু উন্নয়নকেন্দ্র, টঙ্গী, গাজীপুরে ৬৯৫ শিশু অবস্থান করছিল, যা ধারণক্ষমতার দ্বিগুণেরও বেশি। অন্য দুটি প্রতিষ্ঠানেও ধারণক্ষমতার অনেক বেশি শিশু অবস্থান করছিল। ফলে শিশুরা করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকির মধ্যে ছিল।

এদিকে কোভিড-১৯ দুর্যোগে সরকার ৯ মে ‘আদালত কর্তৃক তথ্য–প্রযুক্তি ব্যবহার অধ্যাদেশ ২০২০’ জারি করে। একই সঙ্গে উচ্চ আদালত থেকে জারি করা হয় বিশেষ নির্দেশনা। এর ফলে তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভার্চ্যুয়াল আদালত পরিচালনার পথ উন্মুক্ত হয়। ১২ থেকে ১৯ মে পর্যন্ত মাত্র ৮ দিনে ভার্চ্যুয়াল কোর্টের মাধ্যমে জামিন পেয়েছে ২০৫ শিশু। এর মধ্যে শিশু উন্নয়নকেন্দ্র, টঙ্গীর ১২৭ ছেলেশিশু, যশোর কেন্দ্রের ৬৬ ছেলেশিশু এবং কোনাবাড়ী কেন্দ্রের ১২ মেয়েশিশু রয়েছে।

ভার্চ্যুয়াল আদালতের মাধ্যমে শিশুদের জামিনে মুক্ত করতে সমাজসেবা অধিদপ্তর নানামুখী উদ্যোগ ও যোগাযোগ রক্ষা করে। এ কাজে ‘সুপ্রিম কোর্ট স্পেশাল কমিটি অব চাইল্ড রাইটস’–এর চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের এপিলেড ডিভিশনের বিচারপতি মো. ইমান আলী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। জামিনপ্রাপ্ত শিশুদের এই কমিটির উদ্যোগে সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে ইউনিসেফ, বাংলাদেশ-এর সহযোগিতায় অভিভাবকের ঠিকানায় পৌঁছে দেওয়া নিশ্চিত করে। ১৩৫ শিশুকে অভিভাবকের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে। বাকি শিশুরা ঈদের আগেই বাড়ি ফিরতে পারবে।
*লেখক: উপপরিচালক, গবেষণা, মূল্যায়ন, প্রকাশনা ও গণসংযোগ শাখা, সমাজসেবা অধিদপ্তর