করোনাভাইরাসের কারণে চলমান পরিস্থিতিতে গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলায় ঈদের আগে ১৮০০ পরিবারের মধ্যে ঈদ সামগ্রী (সেমাই, চিনি, মুড়ি, গুঁড়া দুধ) বিতরণ করা হয়েছে। স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার উদ্যোগে গঠিত 'ফুডব্যাংক' থেকে এসব খাদ্যসামগ্রী দেওয়া হয়।
উপজেলার কর্মহীন মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে গঠিত এই ফুডব্যাংক থেকে প্রায় দুই মাস ধরে দুই হাজারেরও বেশি কর্মহীন পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে। সহায়তা হিসেবে পরিবার প্রতি ১০ কেজি চাল, এক কেজি ডাল, এক কেজি লবণ, দুই কেজি আলু দেওয়া হয়। এরই অংশ হিসেবে পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগে কর্মহীন দরিদ্র পরিবারগুলোর মধ্যে ঈদ সামগ্রী বিতরণ করা হলো।
ফুলছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আবু রায়হান দোলন ভলান্টিয়ারদের সাথে নিয়ে উপজেলার বিভিন্ন স্পটে উপস্থিত থেকে এসব ঈদ সামগ্রী বিতরণ করেন। এ ছাড়া একইদিন একযোগে উপজেলার অন্যান্য এলাকায় ভলানটিয়ারদের মাধ্যমে কর্মহীন দরিদ্রদের মাঝে ঈদ সামগ্রী বিতরণ করা হয়।
এই ফুডব্যাংকের উদ্যোগে উপজেলার কর্মহীনদের ভবিষ্যত পুষ্টি চাহিদার কথা বিবেচনায় নিয়ে এর আগে প্রায় চার হাজার পরিবারের মধ্যে পাঁচ ধরনের (পুই শাক, লাউ, মিষ্টি কুমড়া, ঢেঁড়স ও ধুন্দল) শাক-সবজির বীজ বিতরণ করা হয়। এ ছাড়া সবজি ও ফলের উৎস বিবেচনা করে গত ২৩ এপ্রিল উপজেলার ৪ টি ইউনিয়নে ৬০০০ পেঁপে চারা দেওয়া হয়।
উদাখালী ইউনিয়নের ভলানটিয়ার মুন বলেন, বিদ্যমান করোনা পরিস্থিতি দীর্ঘায়িত হলে মানুষ খাদ্য ও পুষ্টি সংকটে পড়তে পারে। সম্ভাব্য সেই সংকট মোকাবিলায় অগ্রিম প্রস্তুতি হিসেবে এসব চারা রোপণ করা হয়। এলাকাবাসীদের মাঝে বীজ সরবরাহ এবং সবজির চারা রোপণের উদ্যোগ বিদ্যমান সরকারি সহায়তা কার্যক্রমেও বিস্তার ঘটানো হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু রায়হান দোলন বলেন, দেশে গত মার্চ মাসে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর ঢাকার বাইরে গাইবান্ধা এপিসেন্টার এলাকা হিসেবে আবির্ভূত হয়। তখনই ফুলছড়ি উপজেলায় ফুডব্যাংক গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। করোনা পরিস্থিতিতে দেশের অন্যতম দরিদ্রপীড়িত এ অঞ্চলের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তাই মূল চ্যালেঞ্জ বিবেচনা করে এ কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়। পাশাপাশি খাদ্য সংগ্রহ, অগ্রাধিকার নির্বাচন এবং সুষ্ঠু বিতরণের জন্য ফুলছড়ি ভলানটিয়ার্স গঠন করা হয়। বর্তমানে প্রায় ৫০০ ভলানটিয়ার উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন কার্যক্রমে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, মূলত সমাজের বিত্তবানদের সহায়তা নিয়ে ফুড ব্যাংক গঠন করা হয়েছে। তাদের সহায়তা অব্যাহত রয়েছে।
আরও পড়ুন:
কর্মহীনদের সহায়তায় 'ফুডব্যাংক' স্থাপন