একটি বিবর্ণ ঈদ

‘ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ।’ কবি কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর গানে খুশির ঈদ বললেও এবারের ঈদ বাংলাদেশসহ বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের জন্য খুশি নিয়ে আসেনি। বিশ্বে আজ এক ভয়াবহ করোনা মহামারি চলছে। বিশ্বের বেশির ভাগ দেশে আজ স্বাভাবিক জীবনযাপন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এই করোনা মহামারি নিকট ভবিষ্যতে যে শেষ হবে তার কোনো নিশ্চয়তাও নেই। কারণ এখন পর্যন্ত এর কোনো প্রতিষেধক আবিষ্কৃত হয়নি।

আমাদের দেশে শহরের অধিকাংশ মানুষ নাড়ির টানে গ্রামে ঈদ করতে ভিড় করেন। ঈদে গ্রামে একটি সাজ সাজ রব তৈরি হয়। গ্রামের কাপড়ের দোকান ও মুদির দোকানগুলোতে থাকে প্রচুর ভিড়। গ্রামে ঈদে বাল্যবন্ধুদের সঙ্গে তৈরি হয় মিলনমেলা। সবাই একে অপরের বাড়িতে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে যায়।

কিন্তু এবারের ঈদে এসব কিছুই করা সম্ভব হচ্ছে না। ঈদে এবার গ্রামে তেমন মানুষের ভিড় নেই। কারণ গ্রামের অধিকাংশ মানুষই দিন আনে দিন খায় শ্রেণির। করোনার কারণে দুই মাস ধরে তাদের কোনো কাজ নেই। তাদের হাতে কোনো টাকাপয়সাও নেই।

শহর থেকে খুব কম লোকই এবার গ্রামে ঈদ করতে এসেছেন। যারা গ্রামে ঈদ করতে এসেছেন তাঁরাও অজানা এক আতঙ্কে কারও সঙ্গে মিশতে পারছেন না। আনন্দ উপভোগ করতে পারছে না। ঈদগাহে এবার সবাই একসঙ্গে নামাজও পড়তে পারেনি। সবাই নিজ নিজ গ্রামের মসজিদে নামাজ আদায় করছেন। মানুষ সব বিভেদ ভুলে একে অপরের সঙ্গে কোলাকুলিও করতে পারেনি।

একটি তীব্র ঝড়ের পর শিগগিরই আমরা একটি রোদ–ঝলমলে নতুন সকাল দেখব। আমরা নিশ্চয় করোনা মহামারিকে পরাজিত করতে পারব। পৃথিবী আবার স্বাভাবিক হবে। সামনের ঈদ আমরা বর্ণময়ভাবেই আবার পালন করব, এটাই সবার আশা।

* লেখক: শিক্ষার্থী, সরকারি তিতুমীর কলেজ, ঢাকা