বর্ষায় ভাঙা সড়ক সংস্কারে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা

ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডের ভেড়াখালী গ্রামের পাকা সড়ক ভেঙে বড় গর্ত তৈরি হয়েছিল। রাস্তা সংস্কারে কাজ করছে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের সংগঠন ভেড়াখালী যুব উন্নয়ন সংঘ। ছবি: লেখক
ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডের ভেড়াখালী গ্রামের পাকা সড়ক ভেঙে বড় গর্ত তৈরি হয়েছিল। রাস্তা সংস্কারে কাজ করছে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের সংগঠন ভেড়াখালী যুব উন্নয়ন সংঘ। ছবি: লেখক

ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু থানার ভেড়াখালী গ্রামের পাকা সড়কে বেশ কিছু জায়গায় ভেঙে বড় গর্ত তৈরি হয়। এই রাস্তা থানার যানবাহন চলাচলের অন্যতম পথ। এ কারণে থানার এক অংশের মানুষের যাতায়াতে দূর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। আর এ রাস্তা সংস্কারে কাজ করছে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের সংগঠন ভেড়াখালী যুব উন্নয়ন সংঘ।

জানা গেছে, থানার প্রধান সড়কের প্রায় দুই কিলোমিটার রাস্তা এই গ্রামের ওপর দিয়ে গেছে। প্রতিদিন এ রাস্তা দিয়ে ছোট-বড় প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ যানবাহন চলাচল করে। বর্ষার আগেই গ্রামের মধ্যে রাস্তায় ছোট ছোট ভাঙা ছিল। টানা বৃষ্টির কারণে রাস্তার এসব জায়গা ভেঙে বড় গর্ত তৈরি হয়েছে।

রাস্তা ভেঙে যাওয়ার কারণে যানবাহন স্বাভাবিকভাবে চলাচল করতে পারছে না। অনেক সময় ইজিবাইক বা ছোট ধরনের যানবাহন রাস্তার বড় ভাঙা গর্তে আটকে যায়, তখন গাড়ি ওঠাতে যাত্রী অথবা স্থানীয় ব্যক্তিদের সহযোগিতা নিতে হয়। এ ছাড়া এসব স্থানে প্রায় সময় ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটে। এ ভাঙা রাস্তা সংস্কারের জন্য গতকাল বুধবার ও আজ বৃহস্পতিবার ২৫ জন যুবককে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত কাজ করতে দেখা গেছে।

বুধবার ও বৃহস্পতিবার রাস্তা সংস্কারে কাজ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ছবি: লেখক
বুধবার ও বৃহস্পতিবার রাস্তা সংস্কারে কাজ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ছবি: লেখক

শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘গ্রামের রাস্তার বেহাল দেখে আমরা নিজ উদ্যোগেই রাস্তা সংস্কারের কাজ করছি। রাস্তায় প্রায় ১০ টলি ইটের টুকরা ও ২ টলি বালু ব্যবহার করা হয়েছে। এ কাজের মালামাল তিন কিলোমিটার দূর থেকে গাড়িতে করে নিয়ে আসা হয়েছে।’ যুবকেরা আরও জানিয়েছে, মালামাল গাড়িতে ওঠানো ও নামানোর জন্য কোনো শ্রমিক ভাড়া করা হয়নি। স্বেচ্ছাশ্রমে যুবকেরা মালামাল ওঠানো, নামানো ও সংস্কারের সব কাজই করেছে।

রাস্তার গাড়িচালকেরা বলেন, ‘গ্রামের মধ্যে রাস্তার ভাঙা অংশগুলো খুবই ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। এ রাস্তা সংস্কারে আমাদের সবার জন্য অনেক ভালো হয়েছে।’ তাঁরা আরও বলেন, গ্রামের মধ্যে সংস্কার করে চালকদের কাছ থেকে যুবকেরা টাকা না নেওয়া, এটা একটি বিরল ঘটনা।

এই সংস্কারকাজে অংশগ্রহণ করেন রাসেল, অনিক, তরিকুল, ইমন, সুলতান, সিফাত, সাইদ, নয়ন, শাইম, অন্তর, হারুন, স্বপন, পারভেজ, শান্তসহ আরও অনেক শিক্ষার্থী।

ঢাকা কলেজের ছাত্র মো. মঞ্জুর রশীদ বলেন, ‘রাস্তায় যানবাহন যাতে স্বাভাবিকভাবে চলাচল করতে পারে, এ জন্য দেশের সচেতন নাগরিক হিসেবে আমরা এ সংস্কারকাজ করছি।’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাইমুর রশীদ বলেন, শহর বা গ্রামের যেসব রাস্তা বৃষ্টির কারণে ভেঙে বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেসব স্থানে যুবকেরা নিজ দায়িত্বে কাজ করলে সাময়িকভাবে হলেও দেশের মানুষের উপকার হবে।