বিনা মূল্যে টেলিমেডিসিন সেবা দিচ্ছে 'সাড়া'

‘সাড়া’র সংবাদ সম্মেলনে অতিথিরা। ছবি: বিজ্ঞপ্তি
‘সাড়া’র সংবাদ সম্মেলনে অতিথিরা। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

কোভিড-১৯ মহামারিতে বিপর্যস্ত বিশ্বের পাশাপাশি বাংলাদেশেও হুমকির মুখে পড়ে গেছে মানুষের স্বাস্থ্যসেবা। এ সংকট থেকে উত্তরণে বিশ্বব্যাপী ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে টেলিমেডিসিন স্বাস্থ্যসেবা। এবার বাংলাদেশেও সবার জন্য বিনা মূল্যে টেলিমেডিসিন চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসেবা দিতে এগিয়ে এসেছে চিকিৎসকদের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘প্ল্যাটফর্ম অব মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল সোসাইটি’ এবং বুয়েটিয়ানদের চ্যারিটি সংগঠন ‘অঙ্কুর ইন্টারন্যাশনাল’–এর স্বেচ্ছাসেবী উদ্যোগ ‘সাড়া’।

দেশে-বিদেশে যেকোনো স্থান থেকে ‘সাড়া’-এর হটলাইন নম্বর ০৯৬১২৩০০৯০০-এ ফোন করে ২৪ ঘণ্টাই বিনা মূল্যে পাওয়া যাবে এই চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসেবা। গত রোববার (২৬ জুলাই) সকাল আটটা থেকেই চালু হয়ে গেছে সাড়ার এই হটলাইন নম্বর ও টেলিমেডিসিন স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম। এ অভিযাত্রায় সাড়ার স্লোগান, ‘আমরা দেখছি, আমরা শুনছি, সাড়া দিচ্ছি’। ওই দিন রাত আটটায় সাড়ার পক্ষ থেকে আয়োজিত ভার্চ্যুয়াল লাইভ সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ‘সাড়া’ উদ্যোগের পেছনের উদ্যোক্তারা।

সম্মেলনে বক্তারা জানান, সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে ঘরে বসেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ ও স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার সুযোগ থাকায় বিশ্বব্যাপী দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে টেলিমেডিসিন চিকিৎসা। বাংলাদেশের মানুষের জন্য এ সেবা নিশ্চিত করতে এবার আমরা, দেশের প্রকৌশলী ও চিকিৎসকেরা এক হয়েছি। এক পক্ষ দেবে স্বাস্থ্যসেবা আর অন্য পক্ষ দেবে এই সেবা প্রদান ও প্রাপ্তির জন্য প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি।

তাঁরা বলেন, সংক্রমিত হওয়ার ভয়ে মানুষ হাসাপাতালে যেতে ভয় পাচ্ছে। ঘরের বাইরে যেতে ভয় পাচ্ছে। জরিপে দেখা গেছে ৮৫ ভাগ মানুষই ঘরে বসে চিকিৎসা পেতে আগ্রহী। তবে অনেক সময় দেখা যায়, যথাসময়ে সঠিক চিকিৎসকের পরামর্শ না পাওয়ার কারণে তাঁর রোগ-পরিস্থিতি গুরুতর রূপ ধারণ করেছে। আমরা চাই, কেউ চিকিৎসকের পরার্মশ চাইলে তিনি যেন সে পরামর্শটি সহজে বিনা মূল্যে পেতে পারেন। আমরা প্রস্তুত হয়েছি। হটলাইন নম্বরে আমাদের ডাকলেই আমরা সাড়া দেব।

‘সাড়া’র সংবাদ সম্মেলনে অতিথিরা। ছবি: বিজ্ঞপ্তি
‘সাড়া’র সংবাদ সম্মেলনে অতিথিরা। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে আরও জানা যায়, এই স্বাস্থ্যসেবা পেতে মানুষের একটি টাকাও খরচ হবে না। স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে যাঁরা সাড়ার সঙ্গে কাজ করবেন, এসব সেবা দেবেন, তাঁদের সম্মানী দেবে অঙ্কুর ইন্টারন্যাশনাল। যত দিন দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হবে, তত দিন এ সেবা চালু থাকবে। প্রয়োজনবোধে ফ্রি অ্যাম্বুলেন্স সেবাও দেওয়া হবে সাড়ার পক্ষ থেকে। শুধু করোনা নয়, অন্য যেকোনো রোগের জন্য এই স্বাস্থ্যসেবা দেবে সাড়া।

প্ল্যাটফর্ম বিষয়ে বক্তারা বলেন, বহুদিন ধরে তারা কাজ করছে। দেশের মধ্যে বুয়েট ছাড়াও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও এটুআই প্রকল্পের সঙ্গে কাজ করেছে। সাড়া প্রকল্পে সহযোগিতা দিচ্ছে বুয়েট অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সংযোগ; এবং গোটা কার্যক্রমের কারিগরি সহযোগিতা দিচ্ছে বিনির্মাণ টেকনোলজিস।

সংবাদ সম্মেলনে ছিলেন ইন্টেল করপোরেশনের প্রিন্সিপাল ইঞ্জিনিয়ার ও অঙ্কুর ইন্টারন্যাশনালের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শায়েস্তাগীর চৌধুরী, পিএইচডি এবং ইন্টেল করপোরেশনের সিনিয়র প্রোডাক্ট ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার ও অঙ্কুর ইন্টারন্যাশনালের কোষাধ্যক্ষ ও পরিচালক মাহমুদ আলম; স্বেচ্ছাসেবী চিকিৎসকদের ফোরাম প্ল্যাটফর্মের সহপ্রতিষ্ঠাতা আহমেদুল হক কিরণ ও সাধারণ সম্পাদক ফয়সল বিন সালেহ; সংযোগ-এর সহপ্রতিষ্ঠাতা কাইজার ওয়াটার্স এবং হারিস অ্যান্ড মেনুকের হেড অব সেলস আহমেদ জাভেদ জামাল; বুয়েট অ্যালামনাইয়ের ট্রাস্টি কাজি এম আরিফ; বুয়েট শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে শিল্প ও উৎপাদন প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক এ কে এম মাসুদ; বুয়েট ব্যাচ ’৯০-এর পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের এসএফডব্লিউএমডির লিড ইঞ্জিনিয়ার ফাহমিদা খাতুন; বুয়েটিয়ান ডব্লিউআরইয়ের কানিজ ফাতেমা, সেন্টার ফর রিনিউয়েবল এনার্জি সার্ভিস লিমিটেডের চেয়ারম্যান শাহরিয়ার আহমেদ চৌধুরী; কোভিড-১৯ বিশেষজ্ঞ ও কনসালট্যান্ট বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক নাহিদ ফাতেমা এবং কর্নেল ইউনিভার্সিটির ক্লিনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট অধ্যাপক ও লন্ডন মেডিকেল সেন্টারের কার্ডিওলজিস্ট সিরাজুম মুনিরা এবং বিনির্মাণ টেকনোলজিসের পক্ষ থেকে এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর তানভির আরাফাত ধ্রুব এবং নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ ইমতিয়াজ আহমেদ। বিজ্ঞপ্তি