করোনায় বেড়েছে শালবনে পাখির কিচিরমিচির

শালবনের ভেতরের দৃশ্য। ছবি: লেখক
শালবনের ভেতরের দৃশ্য। ছবি: লেখক

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার নওদাবাস এলাকায় প্রাকৃতিকভাবে গড়ে উঠেছে বিস্তীর্ণ শালবন। দূর থেকে উঁচু উঁচু শালগাছ চোখে পড়ে। বনের ভেতর পথ। সে পথ ধরে ঢুকলে পাওয়া যাবে নিভৃত সবুজ বন। পাখির কিচিরমিচির ডাকের সঙ্গে একটু পরপর ডেকে যাচ্ছে নানা রকম পতঙ্গ। নানা রঙের ফড়িং, ভিমরুল, মাকড়সা, বুনো ফল দেখে অন্য রকম স্বাদ পাওয়া যায়। এখানের গাছগুলোই পাখিদের নিরাপদ বাস। সকাল ও বিকেল হলেই গাছের ডাল ও পাতার ফাঁকে ফাঁকে শুধু পাখিই দেখা যায়। করোনা মহামারির কারণে অনেক দিন ধরেই বন্ধ আছে শালবনটি। এ সময় পাখিরা যেন নিরাপদভাবে অবাসস্থল গড়ে তুলেছে মাঝারি আকারের বনটিতে।

যানবাহনের ভেঁপুর প্যাঁ পোঁতে ঘরমুখী মানুষ যখন ক্লান্ত। ঠিক তখনই ঝাঁকে ঝাঁকে পাখির এদিক-ওদিক ওড়াউড়ি দেখে থেমে যায় পথচারীরা। শত ব্যস্ততার মাঝেও এমন দৃশ্য এক পলক দেখার লোভ সামলাতে পারে না তারা। তবে সেটি বনের বাইরে থেকে। এ সময় ক্লান্ত মুখে তাকিয়ে তাকিয়ে পাখির ডাক শুনে আনন্দ পায় তারা। এলাকাবাসী বলেন, সকালে তাঁদের ঘুম ভেঙে যায় পাখির কিচিরমিচির শব্দে। আবার সন্ধ্যা নামলেই পাখির কিচিরমিচির শব্দে মুখর হয়ে ওঠে এলাকাটি।

সকাল সকাল ডাকে পাখি। ছবি: লেখক
সকাল সকাল ডাকে পাখি। ছবি: লেখক

শালবনের ভেতরে ঢুকতেই চোখে পড়ে হরেক রকম গাছের সারি। বৃষ্টির মৌসুম হওয়ায় বনের সজীবতাও বেড়েছে। ফলে গাছে গাছে দেখা মেলে হরেক রকম পাখি। পাখির শব্দে মুখর হয়ে থাকে জায়গাটি। করোনা মহামারির জন্য অনেক দিন থেকে বন্ধ থাকার কারণে শালবনের ভেতরে লোকজনের প্রাবেশাধিকার সংরক্ষিত। এ সময় পাখিরা তাদের আপন মনে বনের মধ্যে বাস করছে।

শালবনের দায়িত্বরত বনরক্ষী জানান, প্রকৃতি মা যেন আপনভাবে পরম যত্নে পাখিদের লালন করছে। প্রাবেশাধিকার সংরক্ষিত হওয়ার কারণে পাখিগুলোকে কেউ কোনো সমস্যা করতে পারছে না। এখন পাখিরাই আমার পরিবার তাদের নিয়েই আমি আছি পরম আনন্দে। দুরন্ত শিশুরা পাখির উল্লাস দেখেই মুগ্ধ হয়।

নাম না–জানা পাখি তাকিয়ে আছে ক্যামেরার দিকে। ছবি: লেখক
নাম না–জানা পাখি তাকিয়ে আছে ক্যামেরার দিকে। ছবি: লেখক

পাখিদের এমন দুষ্টুমিতে একটুও অতিষ্ঠ হয় না এলাকার লোকজন। উল্টো কেউ যেন পাখির কোনো ক্ষতি করতে না পারে, সেদিকে কড়া নজর তাদের। এলাকার এক দোকানদার জানান, সারা দিন যখন পাখিগুলো থাকে, তখন মনে হয় তাদের মাঝে কী যেন আছে। বিকেলে ক্লান্ত মনে যখন পাখির কিচিরমিচির শব্দ শোনা যায়, তখন তাদের মন প্রশান্ত হয়ে যায়।

লেখক: শিক্ষার্থী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়।