সাবলেট

.
.

অফিসের তিনতলার বারান্দায় নতুন এক পরিবার এসেছে। তাদের বাসাটাও সুন্দর, গোছালো! আমাদের মতো তারাও এখন মিরপুর ডিওএইচএসের বাসিন্দা! আমি শখ করে বাসাটির নাম দিয়েছি চড়ুই ভিলা!
মা পাখি এবং বাবা পাখি দুজনেই মস্ত বড় কর্মী! সারা দিন অফিসে তাদের অনেক অনেক কাজ! বাসায় আসার সময় হয় তাদের অনেক রাতে! আজ হয়তো মা ও বাবা চড়ুই দুজনের অফিসই ছুটি ছিল! তাই আজ তাদের দেখা পেলাম! দুজনেই বিদ্যুতের তারের ওপর বসে ছুটির দিন কাটাচ্ছে! নতুন এই পরিবারকে ঘিরে আমাদের অফিসে প্রতিদিন নতুন নতুন মজার কথার উদ্ভব হয়! আমাদের মধ্যে সবচেয়ে মজার মানুষ হিরো মনিরুল স্যার বলেন, ‘মাসে ৭০ হাজার টাকা বাসা ভাড়া দিয়ে এরা আমাদের সঙ্গে বসবাস করছে!’ এত দামি বাসিন্দা আমাদের সঙ্গে আছে বলে তিনি নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করেন! চড়ুই ভিলার আগামী প্রজন্মকে তিনি নিজের ভাষা শেখাতে চান! নাম ধরে ডাক দিয়ে আদর করতে চান! কেননা তাঁর ডেস্ক থেকে চড়ুই ভিলার দূরত্ব মাত্র ১.৫ মিটার! আর এ কারণেই হয়তো তাঁর এতটা কৌতূহল! আর হবেই বা না কেন! চড়ুই পাখিরা যে এখানে বাসা বেঁধেছে, সেটা তিনিই প্রথমে আবিষ্কার করেছেন!
বাচ্চাগুলোর নাম কী রাখা হবে, তা নিয়ে আমাদের পরিকল্পনা চলছে! হয়তো বাচ্চা ফোটার আগেই আমাদের মুখ থেকে তাদের জন্য নাম ফুটে বেরোবে! নতুন এই বাসিন্দাদের পেয়ে সবাই ছোট্ট বেলায় ফিরে গেছি! যেখানে ছিল শৈশবের সোনালি আনন্দ!
সেই আনন্দ আবার আমাদের মাঝে ফিরিয়ে দিয়েছে এই চড়ুই পাখির বাসা! এ যেন ব্যস্ততার মাঝেও অন্য রকম আনন্দের পরশ! ব্যস্ততার এই শহরে যেখানে ইট-পাথরের বন্দিখানায় মানুষ বসবাস করে, সেখানে আমরা নতুন এই পরিবারকে পাশে পেয়ে অনেক অনেক আনন্দে আছি! আমরা এখন গর্ব করে বলতে পারি, ‘আমরা সবাই ভালো আছি!’
অপেক্ষায় আছি কবে আমাদের এই প্রতিবেশীর ঘরে নতুন অতিথি আসবে! নতুন অতিথিরা এলেই আমরা আপনাদের খুশির সংবাদটি জানাব! তবে কেউ যদি আমাদের এই নতুন অতিথিদের দেখতে আসতে চান, তাহলে তাঁকে অবশ্যই এক হাঁড়ি মিষ্টি সঙ্গে আনতে হবে!
রুপম আহমেদ, মিরপুর