গবেষক হিসেবে আমেরিকার গ্রিনকার্ড পাওয়ার উপায়

শুধু নিজের গবেষণাকর্ম দিয়ে কারও স্পনসরশিপ ছাড়াই আমেরিকার গ্রিনকার্ড পাওয়া সম্ভব। ন্যাশনাল ইন্টারেস্ট ওয়েভারের (এনআইডব্লিউ) আওতায় এ সুযোগ পাওয়া যায়। এর আগে প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার ১৫ জুন সংখ্যায় এনআইডব্লিউ সম্পর্কে একটি ধারণা দেওয়া হয়েছে। মূলত এনআইডব্লিউ পাওয়ার প্রক্রিয়া, প্রয়োজনীয় ফি ও সংযুক্তিগুলোর কথাই ওই আলোচনায় উঠে এসেছিল। আজকের আলোচনায় এই প্রতিটি বিষয় নিয়েই বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। এতে জার্নাল, সাইটেশন, রিভিউয়ার, প্রফেশনাল মেম্বারশিপ, রিকমেন্ডেশন লেটার, ইকোনমিক ইমপ্যাক্টসহ বিভিন্ন বিষয়ের ওপর বিশেষভাবে আলোকপাত করা হবে।

জার্নাল
এনআইডব্লিউয়ের প্রধান কয়েকটি যোগ্যতার মাপকাঠির একটি হলো প্রকাশনা (পাবলিকেশন)। এ ক্ষেত্রে কিছু বিষয়ের ওপর বিশেষভাবে গুরুত্ব দিতে হবে—
১। অনেকেই মনে করেন এনআইডব্লিউয়ের আবেদন করতে হলে জার্নালের প্রথম অথর (লেখক) হতে হবে; এটি খুবই ভুল কথা। জার্নালের দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ লেখককেও বিবেচনায় নেওয়া হয়। তবে কোনো কোনো পরামর্শক তৃতীয়, চতুর্থ বা তার পরের ধাপের অথরদের ক্ষেত্রে একটি কন্ট্রিবিউশন লেটার দিতে বলেন, যেখানে আপনি ওই গবেষণায় ঠিক কী কী ভূমিকা পালন করেছেন, তা উল্লেখ করতে হয়।
২। জার্নালের র‍্যাঙ্কিং একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সাধারণত আইনজীবীরা কয়েকটি নামকরা ওয়েবসাইটে (Scimago, Google Scholar) আপনার জার্নালের র‍্যাঙ্কিংটা সংযুক্ত করে দেন।
৩। মনে রাখতে হবে এনআইডব্লিউয়ের জন্য আবেদন করার সময় প্রকাশিত গবেষণা নিন্ধগুলোই শুধু বিবেচনায় নেওয়া হয়। জার্নালে পাঠানো হয়েছে কিন্তু প্রকাশিত হয়নি কিংবা পর্যোলোচনাধীন কোনো গবেষণাপত্র বিবেচনায় নেওয়া হয় না।
৪। ভালো মানের জার্নালে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ হতে সময় লাগে। গড়ে এক থেকে দেড় বছর সময় প্রয়োজন হতে পারে। এ কারণে এনআইডব্লিউয়ের আবেদন করার পরিকল্পনা থাকলে মাস্টার্স বা পিএইচডি পর্বের শুরু থেকেই গবেষণাপত্র প্রকাশের দিকে মনোযোগ দিতে হবে।
৫। কম্পিউটার সায়েন্স, ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মতো কিছু বিষয়ে কনফারেন্স প্রসিডিংসকে বিবেচনায় নেওয়া হয়। মনে রাখতে হবে সাধারণ কনফারেন্স নয়, শুধু স্বীকৃত কনফারেন্সগুলোর প্রসিডিংসই কেবল বিবেচনায় নেওয়া হয়।
৬। এনআইডব্লিউ প্যাকেজের সঙ্গে শুধু জার্নালের প্রথম পাতাই দিতে হয়।
অনেকের ধারণা ১০-১২টা প্রকাশনা না থাকলে আবেদন করা যায় না, যা সম্পূর্ণ ভুল। এনআইডব্লিউ একটা প্যাকেজ, যার মধ্যে রয়েছে পেপার (প্রকাশিত গবেষণাপত্র), রিভিউ, রিকমেন্ডেশন লেটার, প্রফেশনাল কমিটির মেম্বার, মিডিয়া কাভারেজ)। কারও হয়তো একটা দিক দুর্বল, আরেকটা দিক একটু ভালো। এ জন্য কোনোটির জন্যই কোনো নির্দিষ্ট সংখ্যা নেই। এক কথায় অন্য যোগ্যতাগুলোর মতো জার্নালে প্রকাশনা একটা যোগ্যতাই শুধু; এর বেশি কিছু নয়।

সাইটেশন
এনআইডব্লিউয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ যোগ্যতা হচ্ছে গবেষণাপত্রের (পেপার) সাইটেশন। এ ক্ষেত্রে নিচের বিষয়গুলোর দিকে খেয়াল করুন—
১। সাইটেশন বললেই প্রথমে মাথায় আসে কয়টা সাইটেশন? সত্যি কথা বলতে এরও কোনো নির্দিষ্ট ধরাবাঁধা সংখ্যা নেই। তাই কেউ যদি বলে ১০০টা সাইটেশন বা ৫০ টা সাইটেশন থাকতে হয়, তাহলে বুঝবেন তিনি ভুল বলছেন।
২। সাইটেশন দুই ধরনের। অধীন (Dependent) সাইটেশন ও স্বাধীন (Independent) সাইটেশন। আপনার, আপনার ল্যাব-মেট বা আপনার অধ্যাপকের নাম যদি পেপারে থাকে, তাহলে সেটা অধীন সাইটেশন; এর বাইরে অন্য কেউ আপনার কাজ সাইট করলে তা স্বাধীন সাইটেশন। বলার অপেক্ষা রাখে না যে ইউএসসিআইএস বা কর্তৃপক্ষ স্বাধীন সাইটেশনকেই বেশি মূল্যায়ন করে।
৩। সাইটেশনের সংখ্যা জানাতে অ্যাটর্নিরা গুগল স্কলারের পাতা প্রিন্ট করে সংযুক্ত করে দেন। এ ছাড়া আপনার গবেষণাপত্র সাইট করা হয়েছে এমন গবেষণাপত্রের রেফারেন্স, গবেষণাপত্রটির প্রথম পাতা ও ওই পেপারের যেখানে আপনার কাজ নিয়ে লেখা হয়েছে, সেই পাতাটি প্রিন্ট করে সংযুক্ত করে দিতে হবে।
৪। জার্নাল পেপার, কনফারেন্স পেপার, রিপোর্ট, থিসিস যেখানেই সাইটেশন হোক না কেন তা কাউন্ট করা হবে। ঠিক একইভাবে আপনার জার্নাল, কনফারেন্স, থিসিস যেটাই সাইট হোক সেটাই আপনি ব্যবহার করতে পারবেন।
আপনার পেপারের রেফারেন্স দিন। সাইটেশন অবশ্যই একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কিন্তু একটি নির্দিষ্টসংখ্যক সাইটেশনের জন্য অপেক্ষা করার কোনো মানে নেই। আপনার অন্য দিকগুলো যদি ভালো হয় যেমন, পাবলিকেশন রেকর্ড, ভালো রিকমেন্ডেশন লেটার, তাহলে কম সাইটেশন হলেও সমস্যা নেই। সাইটেশনই একমাত্র মাপকাঠি নয়। তারপরও সাইটেশন দ্রুত বাড়াতে মানুষজনকে আপনার কাজের কথা জানান।

রিকমেন্ডেশন লেটার
এনআইডব্লিউয়ের জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মাপকাঠি হলো রিকমেন্ডেশন লেটার। এই রিকমেন্ডেশন লেটারগুলো সাধারণত গৎবাঁধা রিকমেন্ডেশন লেটার থেকে একটু ভিন্ন রকম হতে হয়। এটি আপনি আপনার পরিচিতদের কাছ থেকে নিতে পারবেন না। সাধারণত আবেদনের সময় ৬-৮টি রিকমেন্ডেশন লেটার দিতে হয়। এর মধ্যে দুটি হতে হয় আপনার সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে এমন দুজনের। এ ক্ষেত্রে আপনাকে সুপারভাইজার, নিয়োগকর্তা, কোর্স শিক্ষক অথবা বিভাগীয় প্রধানের কাছ থেকে রিকমেন্ডেশন লেটার নিতে হবে। এগুলোকে ডাইরেক্ট রিকমেন্ডেশন লেটার বলা হয়। এ ছাড়া ৪-৬টি ইনডাইরেক্ট রিকমেন্ডেশন লেটার জমা দিতে হয়। এ ধরনের রিকমেন্ডেশন লেটার যারা দেবেন, তাঁদের সঙ্গে আপনার চাকরি বা পড়াশোনা কোনো সূত্রেই সরাসরি কোনো সম্পর্ক থাকা যাবে না। তাহলে ইনডাইরেক্ট রিকমেন্ডেশন লেটার কারা দেবে? আসুন জেনে নিই—
১। অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বা কোম্পানিতে কর্মরত কেউ, যার সঙ্গে আপনার সরাসরি সম্পর্ক নেই। বিভিন্ন কনফারেন্সে এমন অনেকেই আসেন, যাদের উপস্থাপনা আপনি দেখেন, যারা আপনার উপস্থাপনা দেখে; আপনি তাদেরকে প্রস্তাব করেন। অথবা আপনি যাদের পেপার সাইট করেন, তাদেরকেও ই-মেইল করতে পারেন।
২। যেসব কনফারেন্সে আপনি যোগ দিয়েছেন, সেগুলোর কমিটির চেয়ারপারসনকে বলা যেতে পারে।
৩। জার্নাল এডিটর—আপনার গবেষণাপত্র যে জার্নালে প্রকাশ হয়েছে, তার সম্পাদককে অনুরোধ করুন একটি রিকমেন্ডেশন লেটার দিতে।
৪। এডিটর রিভিউয়ার—আপনি যেসব জার্নাল রিভিউ করেন, সেই সব জার্নালের সম্পাদককে অনুরোধ করুন রিকমেন্ডেশন লেটার দেওয়ার জন্য।
৫। প্রফেশনাল কমিটি চেয়ার—আপনি যেসব প্রফেশনাল কমিটির সদস্য, সেসব কমিটির চেয়ারকে বলুন আপনার কাজ নিয়ে লিখতে।
৬। কনফারেন্স আয়োজক—আপনি যদি কোনো কনফারেন্সের চেয়ার বা কো-চেয়ার হন অথবা এর আয়োজনের সঙ্গে জড়িত থাকেন, তবে এর আয়োজক কমিটির চেয়ারপারসনকে বলুন একটি সুপারিশপত্র দিতে

প্রফেশনাল মেম্বারশিপ
আপনি যেকোনো পরামর্শকের কাছে গেলেই এনআইডব্লিউয়ের জন্য যে কয়েকটি রিকোয়ারমেন্টের কথা শুনবেন, তার একটি হচ্ছে এভিডেন্স অব মেম্বারশিপ ইন প্রফেশনাল অ্যাসোসিয়েশনস। এটি সবচেয়ে সহজে করা যায়।
১। আপনি যে বিষয়েরই হোন না কেন, অবশ্যই আপনার বিষয়ে স্থানীয় বা জাতীয় পর্যায়ে কিছু প্রফেশনাল প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
২। এসব প্রতিষ্ঠানে ছাত্রাবস্থাতেই সদস্য হয়ে যান। ছাত্রাবস্থায় সাধারণত এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হতে কোনো অর্থ ব্যয় করতে হয় না।
৩। এনআইডব্লিউয়ের আবেদন করার সময় মেম্বারশিপের একটি সনদ বা চিঠি সংগ্রহ করুন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান থেকে।
৪। এই অ্যাসোসিয়েশনগুলো প্রায় প্রতি বছর একটি কনফারেন্সের আয়োজন করে। অ্যাসোসিয়েশনের কাজে সক্রিয় থাকুন। কনফারেন্সের প্রস্তুতির পর্বে অনেক কমিটি গঠন করা হয়। চেষ্টা করুন এমন কোনো কমিটির সদস্য হতে। আপনার সক্রিয়তা ও যোগ্যতা থাকলে কনফারেন্সের কোনো সেশনে চেয়ারও হতে পারেন আপনি, যা পরে খুবই সাহায্য করবে। এনআইডব্লিউয়ের আবেদনের সময় কনফারেন্স চেয়ারের কাছ থেকে আপনার সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে চিঠি চাইতে পারেন।

রিভিউয়ার
এনআইডব্লিউয়ের যোগ্যতা পূরণের একটি শর্ত হলো পেপার রিভিউয়ার হওয়া। এনআইডব্লিউয়ের বিবরণে বলা হয়েছে, আবেদনকারী ‘অন্যের কাজের বিচার করতে পারে কিনা’ তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিভিন্ন জার্নাল বা কনফারেন্সে পেপার রিভিউয়ের এর অফার পাওয়াটা এই যোগ্যতার প্রমাণ বহন করে। রিভিউয়ারের বিষয়গুলো এনআইডব্লিউতে উল্লেখের ক্ষেত্রে নিচের বিষয়গুলো মনে রাখা জরুরি—
১। রিভিউয়ের অফারটা সরাসরি আপনার কাছেই আসতে হবে। অনেক সময় অধ্যাপক বা বন্ধু-বান্ধব ই-মেইল ফরোয়ার্ড করে বা তাদের কাছে আসা পেপার দিয়ে বলে, রিভিউ করে দিতে; এটা এখানে কাজে আসবে না। আপনার কাছে সম্পাদকের কাছ থেকে সরাসরি ই-মেইল আসতে হবে।
২। এনআইডব্লিউয়ের সঙ্গে যেসব ডকুমেন্ট জমা দেবেন, সেখানে এই ই-মেইলগুলোর প্রিন্ট কপি জমা দিতে হবে। এ কারণেই আপনার অধ্যাপক বা বন্ধুর নামে আসা অপারগুলো এ ক্ষেত্র কাজে আসবে না।
৩। কনফারেন্স বা জার্নাল যেকোনোটার অফার এলেই হবে।
৪। আপনার কাছে রিভিউ করতে আসা পেপার গৃহীত বা বাতিল যা-ই হোক না কেন, রিভিউয়ার হিসেবে আপনার অবস্থানে তার কোনো প্রভাব পড়বে না।
৫। একই জার্নালের ৫-৬টা পেপার রিভিউয়ের চেয়ে ভিন্ন ভিন্ন জার্নালের পেপার রিভিউ করা ভালো।

ইকোনমিক ইম্প্যাক্ট
আপনার গবেষণার অর্থনৈতিক প্রভাব খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এনআইডব্লিউ আবেদন বিচারের ক্ষেত্রে এ বিষয়টিকে বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে নিচের বিষয়গুলোর দিকে খেয়াল রাখুন—
১। আপনি এ দেশে টিএ (টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্ট) অথবা আরএ (রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট) হিসেবে এসেছেন। আপনার মাস্টার্স বা পিএইচডির থিসিস বা গবেষণা সন্দর্ভের (Dissertation) প্রাপ্ত ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে অর্থনৈতিক প্রভাবটি হিসাবে নিন। আপনার গবেষণা অবশ্যই কোনো না কোনো প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত। সাধারণত প্রকল্পগুলোর লক্ষ্যই থাকে আপনার গবেষণা থেকে প্রাপ্ত ফলাফল প্রয়োগ করে অর্থনীতিতে বড় কোনো ভূমিকা রাখা। আপনাকে এই অর্থনৈতিক প্রভাবের বিষয়টিই আপনার এনআইডব্লিউয়ের কাভার লেটারে সুন্দরভাবে ব্যাখ্যা করতে হবে।
২। অন্য বিষয়গুলোর চেয়ে এটি অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত এই অর্থনৈতিক প্রভাব দিয়েই আপনার আবেদন মূল্যায়নকারী কর্মকর্তাকে আপনার গবেষণার গুরুত্ব সম্পর্কে বোঝানোর চেষ্টা করা হয়।
৩। একটি প্রকল্প প্রস্তাব যখন লেখা হয়, তার শুরুতেই প্রকল্পটির অর্থনৈতিক প্রভাব সম্পর্কে বিস্তারিত লেখা হয়। আপনি আপনার অধ্যাপকের কাছ থেকে ওই প্রকল্প প্রস্তাবটি নিয়ে রাখুন।
৪। নিজের কাজ সম্পর্কিত যেকোনো অর্থনৈতিক ডেটা সংগ্রহে রাখুন।
৫। অনেক সময় দেখা যায় যে, আপনার পেপার প্রকাশিত হয়নি; কিন্তু আপনার প্রকল্পের প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে এবং সেটি সফলভাবে ব্যবহার হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে পেপারের থেকে অর্থনৈতিক প্রভাব সম্পর্কিত মূল্যায়নটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ, যেহেতু তা সরাসরি প্রয়োগ হচ্ছে।
সব শেষে বলতে হয় এনআইডব্লিউয়ের আবেদনের জন্য আলোচিত প্রতিটি বিষয়ের দিকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিন। এখানে উল্লিখিত প্রতিটি বিষয়ই আপনার গ্রিনকার্ড প্রাপ্তির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

লেখক: পিএইচডি রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট, ব্যাটন রুশ, লুইজিয়ানা।