কিম উনকে ভালোবাসার বার্তা দিলেন ট্রাম্প

গত ১২ জুন সিঙ্গাপুরের সেনতোসা দ্বীপে অনুষ্ঠিত বৈঠকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং–উন দুপুরের খাবার খেতে যাচ্ছেন। ফাইল ছবি: রয়টার্স
গত ১২ জুন সিঙ্গাপুরের সেনতোসা দ্বীপে অনুষ্ঠিত বৈঠকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং–উন দুপুরের খাবার খেতে যাচ্ছেন। ফাইল ছবি: রয়টার্স

‘তিনি তাঁকে পছন্দ করেন এবং তাঁর সব ইচ্ছে তিনি পূরণ করবেন’—এমন কথা প্রেম নিবেদনেই বেশি মানায়। যে কথাটি যায় না বলা, সে কথাটি মনের মানুষকে আরেকজনের মাধ্যমে বলা।

কিন্তু এ ক্ষেত্রে ঘটেছে ব্যতিক্রম। ‘শত্রু’ বলে বিবেচিত উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং–উনকে এ কথা জানাতে চান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ জন্য ভায়া হিসেবে বেছে নিয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জো-ইনকে। বহু কাঠখড় পোড়ানোর পর ট্রাম্প-কিমের ‘প্রায় অবিশ্বাস্য’ এবং এখনো পর্যন্ত একমাত্র বৈঠকটি মুন জো-ইনের মধ্যস্থতায় হয়েছিল বলেই হয়তো বার্তা পৌঁছানোর জন্য তাঁকেই আস্থায় নিয়েছেন ট্রাম্প।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে জানানো হয়, আর্জেন্টিনার বুয়েনস এইরেসে অনুষ্ঠিত জি-২০ সম্মেলনে অংশ নেওয়ার পর গতকাল রোববার নিউজিল্যান্ডে যাওয়ার পথে বিমানে সাংবাদিকদের এ কথা জানিয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জো-ইন। নিউজিল্যান্ডে তিন দিনের সফরে যাচ্ছেন তিনি। জি-২০ সম্মেলনে ট্রাম্প তাঁকে এ কথা বলেছেন বলে জানান তিনি।

উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং–উনের প্রথমবারের মতো দক্ষিণ কোরিয়া সফরের কথা রয়েছে। ওই সময় দুই নেতার বৈঠকে ট্রাম্প তাঁর বার্তাটি পৌঁছে দিতে বলেছেন। মুন বলেন, ‘বার্তাটি হচ্ছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের চেয়ারম্যান কিমের প্রতি অনুকূল মনোভাব রয়েছে এবং তিনি তাঁকে পছন্দ করেন। যেমন তিনি (ট্রাম্প) আমাকে বলেছেন চেয়ারম্যান কিমকে জানাতে যে তাঁদের চুক্তির বাকি বিষয়গুলো একসঙ্গে তিনি (ট্রাম্প) বাস্তবায়ন করতে চান এবং তিনি চেয়ারম্যান কিমের ইচ্ছেগুলো পূরণ করবেন।’

ট্রাম্প ও কিমের মধ্যে বৈঠক হয়েছিল গত জুন মাসে সিঙ্গাপুরে। এদিকে জি-২০ সম্মেলনে অংশ নেওয়া শেষে গত শনিবার দেশে ফেরার পথে এয়ারফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, আগামী জানুয়ারি বা ফেব্রুয়ারি মাসে তাঁর সঙ্গে কিমের দ্বিতীয় বৈঠক হতে পারে। এ জন্য তিনটি জায়গা বিবেচনায় আছে। কিমের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক অনেক ভালো বলে তিনি জানান। তিনি কিমকে যুক্তরাষ্ট্র সফরে আমন্ত্রণ জানাবেন বলেও জানিয়েছেন।

কিম ও ট্রাম্পের প্রথম বৈঠকে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণে তাঁরা কাজ করবেন বলে চুক্তি করেন। তবে নির্ধারিত সময়ে এই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে খুব কমই অগ্রগতি হয়েছে।

ট্রাম্প বারবার কিমের সঙ্গে তাঁর ভালো ব্যক্তিগত সম্পর্কের কথা বলে চলেছেন। ১৯৫০ সাল থেকে মার্কিন প্রেসিডেন্টরা যা এড়িয়ে গেছেন, এই বন্ধুত্ব তাঁকে কূটনৈতিকভাবে বিরাট সফলতা এনে দিতে পারে বলে মনে করছেন তিনি।

চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠকের পর শনিবার হোয়াইট হাউসের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তারা ও কিম ‘পরমাণু অস্ত্রমুক্ত কোরিয়া উপদ্বীপ দেখার জন্য’ লড়াই চালিয়ে যাবেন। সি চিন পিং ও ট্রাম্প ‘একমত প্রকাশ করেছেন যে উত্তর কোরিয়ার ব্যাপারে অনেক অগ্রগতি হয়েছে’।