শিশুটির ব্যথিতবেদন বুঝলেন হিলারি

স্কুলের নির্বাচনে হেরে যাওয়া মার্থাকে চিঠিটি লিখেছেন হিলারি ক্লিনটন। ছবি: মার্থার পরিবারের সৌজন্যে
স্কুলের নির্বাচনে হেরে যাওয়া মার্থাকে চিঠিটি লিখেছেন হিলারি ক্লিনটন। ছবি: মার্থার পরিবারের সৌজন্যে

স্কুলের শ্রেণিকক্ষের প্রেসিডেন্ট হওয়া হয়নি তো কী হয়েছে! ছোট্ট এক মেয়ে পেয়ে গেছে এর চেয়েও বড় প্রাপ্তি। হিলারি ক্লিনটন স্বয়ং তাকে প্রবোধ দিয়েছেন চিঠিতে। মাত্র এক ভোটে হেরে যাওয়া আট বছরের ওই মেয়েশিশুকে চিঠি লিখেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ওই পররাষ্ট্রমন্ত্রী, যিনি গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী ছিলেন। চিঠিতে হিলারি লেখেন, ‘যে ভূমিকায় শুধু ছেলেদেরই খোঁজা হয়’, তার জন্য লড়াই করা যে ‘সহজ নয়’, তা খুব ভালো করেই জানেন তিনি।

২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে হেরে যান হিলারি। নির্বাচিত হলে তিনিই হতেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট। হয়তো ওই মেয়ে শিশুর শ্রেণিকক্ষের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হেরে যাওয়ার ঘটনায় নিজের কষ্ট অনুভব করেছেন হিলারি।

সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শিশুটির নাম মার্থা কেনেডি মোরালস। সে মেরিল্যান্ড অঙ্গরাজ্যের বেসরকারি একটি স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী।

চিঠিতে হিলারি জানিয়েছেন, মেয়েটির বাবার ফেসবুক পোস্ট থেকে তিনি মেয়েটির নির্বাচন করা সম্পর্কে জানতে পারেন।

হিলারির চিঠিতে ৬ ডিসেম্বর তারিখ দেওয়া আছে। মার্থাকে হিলারি লিখেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট হিসেবে জিততে না পারায় হতাশ হয়ে থাকতে পারো তুমি, আমি গর্বিত যে প্রথম পদটিতে লড়াইয়ের জন্য তুমি সিদ্ধান্ত নিয়েছ। আমি খুব ভালো করে জানি, এটা সহজ নয়। এমন একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নিজেকে দাঁড় করিয়েছে, যা শুধু ছেলেদের জন্য চাওয়া হয়।’

চিঠির ব্যাপারে গতকাল সোমবার সিএনএন বার্তাকক্ষে বাবা আলবার্ট মোরেলসের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে মার্থা বলে, ‘হিলারি ক্লিনটন নিজে আমাকে চিঠি লিখেছেন জেনে আমি আপ্লুত হয়েছি। এ ধরনের ঘটনা প্রতিদিন ঘটে না।’

মার্থা জানায়, দুই সপ্তাহ আগে তাদের শ্রেণিকক্ষের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়। এক ভোটের ব্যবধানে সে তার ছেলে সহপাঠীর কাছে হেরে যায়। সে বলেছে, কোনো কিছুর জন্য এত কঠোর পরিশ্রমের পর হেরে যাওয়া হতাশাজনক। তবে নির্বাচনে ভাইস প্রেসিডেন্ট হতে পেরেও খুশি সে। সে জানায়, সে খুবই খুশি যে ফলাফল টাইব্রেকারে গিয়েছিল এবং নির্বাচনের দুটি কক্ষ (প্রতিনিধি পরিষদ ও সিনেট) এ বিষয়ে একমত হতে পারছিল না।

মার্থাকে লেখা চিঠিতে হিলারি ক্লিনটন আরও লিখেছেন, ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে তুমি যা বিশ্বাস করো, তার জন্য লড়াই করেছ এবং এটার মূল্য সব সময় রয়েছে। সামনে তুমি আরও শিখবে ও বড় হবে। যা সঠিক তার জন্য দাঁড়াতে কখনো থেমে যেয়ো না। নেতা হওয়ার সুযোগ খুঁজতে থাকো। ভবিষ্যতে তোমার বড় সাফল্যের জন্য শুভকামনা রইল।’

মার্থা জানিয়েছে, হিলারি ক্লিনটনের চিঠি তাকে অনুপ্রাণিত করেছে। হিলারি তাকে ভাইস প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্যও অভিনন্দন জানিয়েছেন। চিঠির জন্য হিলারিকে ধন্যবাদ জানিয়ে সে জবাব পাঠিয়েছে। মার্থা জানিয়েছে, সে হিলারিকে তার স্কুলে এসে শ্রেণিকক্ষের সরকারের সঙ্গে দেখা করার আমন্ত্রণ জানিয়েছে।

মার্থার বাবা বলেছেন, তিনি, তাঁর স্ত্রী ও মেয়ে এ ঘটনায় রোমাঞ্চিত। সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মতো একজন মানুষের ছোট্ট একটি মেয়ের নির্বাচনে হেরে যাওয়ার কথা জেনে সময় করে চিঠি লেখার বিষয়টি অসাধারণ। তিনি জানান, মেয়েকে যতটা পারেন, জননেতাদের ব্যাপারে জানতে উৎসাহ দিচ্ছেন তিনি।