'পরিস্থিতি' বুঝে সিরিয়া থেকে সেনা প্রত্যাহার: বল্টন

মার্কিন সেনাবাহিনী সিরিয়ার মানবিজ শহরে এখনো কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ছবি: এএফপি
মার্কিন সেনাবাহিনী সিরিয়ার মানবিজ শহরে এখনো কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ছবি: এএফপি

সিরিয়া থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষণা নিয়ে রয়েছে তুমুল বিতর্ক। ট্রাম্পের যুক্তি ছিল, সিরিয়ায় আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আইএস পরাজিত হয়েছে, তাই সেখানে সেনা মোতায়েনের আর প্রয়োজন নেই। তাঁর এই ঘোষণার জের ধরে প্রতিরক্ষামন্ত্রী জিম ম্যাটিসসহ মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের সদর দপ্তর পেন্টাগনের তিন শীর্ষ ব্যক্তি পদত্যাগ করেন। তবে দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বল্টন বলেছেন, সুনির্দিষ্ট কিছু পরিস্থিতির ওপর সিরিয়া থেকে সেনা প্রত্যাহার হবে। ইসরায়েল ও তুরস্ক সফরে গিয়ে গতকাল রোববার তিনি এ কথা বলেন।

মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বল্টন। ছবি: জন বল্টনের টুইটার থেকে
মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বল্টন। ছবি: জন বল্টনের টুইটার থেকে

আজ সোমবার বিবিসি অনলাইনের খবরে বলা হয়, সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়ে গত ১৯ ডিসেম্বর ট্রাম্প বলেছিলেন, মার্কিন কর্মকর্তা ও সেনাসদস্যদের সিরিয়া ছাড়তে ৩০ দিনের সময় দেওয়া হয়েছে। তবে জন বল্টনের বক্তব্য থেকে আভাস রয়েছে যে সেনা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়াটি ধীরগতিতে হবে। ইসরায়েল ও তুরস্ক সফরের সময় জন বল্টন আরও বলেছেন, সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে কুর্দিদের নিরাপত্তার ব্যাপারে তুরস্কের নিশ্চয়তা চেয়েছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্র চায়, অবশিষ্ট আইএসরাও নির্মূল হোক।

সিরিয়া থেকে সেনা প্রত্যাহারে ট্রাম্পের ঘোষণার এক দিন পর প্রতিরক্ষামন্ত্রী জিম ম্যাটিস পদত্যাগ করেন। তাঁকে অনুসরণ করে একে একে পদত্যাগ করেন পেন্টাগনের আরও দুই শীর্ষ ব্যক্তি আইএসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যৌথ বাহিনীতে প্রেসিডেন্টের বিশেষ দূত ব্রেট ম্যাকগার্ক এবং সবশেষ গত শনিবার প্রতিরক্ষা বিভাগের চিফ অব স্টাফ কেভিন সুয়েনি।

এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের কুর্দি মিত্র বাহিনী সিরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে তুরস্কের লক্ষ্যস্থলে পরিণত হবে আশঙ্কা প্রকাশ করে। তুরস্ক কুর্দিদের সন্ত্রাসবাদী বলে মনে করে।

অবশ্য ট্রাম্প গত সপ্তাহে তাঁর অবস্থান থেকে কিছুটা নমনীয় হয়ে জানিয়েছেন, সেনা প্রত্যাহার ধীরগতিতেই হবে।

গতকাল ইসরায়েলে বল্টন সাংবাদিকদের বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প চান আইএস ‘নির্মূল’ হোক।

আইএসের বিরুদ্ধে মার্কিন বাহিনী কুর্দি নেতৃত্বাধীন সিরিয়া ডেমোক্রেটিক ফোর্সের (এসডিএফ) সঙ্গে কাজ করছে। তবে এসডিএফে মূল লড়াকু বাহিনী হচ্ছে ওয়াইপিজি মিলিশিয়া, যাদের তুরস্ক সন্ত্রাসবাদী বলে থাকে।

কুর্দিরা তুরস্কের লক্ষ্যস্থলে আছে—এমন অভিযোগকে অস্বীকার করে গতকাল তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের মুখপাত্র ইব্রাহিম কালিন বলেছেন, ‘এটা অযৌক্তিক।’

জন বল্টনও মনে করেন, কুর্দিদের বিরুদ্ধে তুরস্কের কোনো সামরিক অভিযানে যাওয়া উচিত নয়।

সিরিয়ায় দুই হাজারের বেশি মার্কিন সেনা রয়েছে। তবে প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়ে অনেক বেশি হতে পারে বলে ধারণা করা হয়।