জরুরি ক্ষমতা দিয়ে দেয়াল গড়তে পারবেন ট্রাম্প?

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: রয়টার্স
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: রয়টার্স

মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণ করতে প্রয়োজনে জরুরি অবস্থা জারির হুমকি দিয়ে রেখেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু প্রশ্ন হলো, জরুরি ক্ষমতা ব্যবহার করেও কি ট্রাম্প এই দেয়াল নির্মাণ করতে পারবেন?

এএফপির তথ্য অনুযায়ী, মেক্সিকোর সঙ্গে থাকা সীমান্ত অতিক্রম করে অবৈধ অভিবাসীরা দলে দলে যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকছেন বলে দাবি ট্রাম্পের। গত বছরের শেষ তিন মাসে এ রকম অন্তত ৫০ হাজারের বেশি অভিবাসী আটক হন। এই অভিবাসীরা যুক্তরাষ্ট্রে এসেই আশ্রয় চাইছেন। তাঁদের যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি মনে করেন ট্রাম্প। তাই অবৈধ অভিবাসীদের স্রোত ঠেকাতে ট্রাম্প মরিয়া। এ জন্য তিনি সীমান্তে দেয়াল নির্মাণে অনড়।

দেয়াল নির্মাণের জন্য প্রচুর অর্থ দরকার। ট্রাম্প ৫ দশমিক ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বরাদ্দ চেয়েছেন। কিন্তু এই অর্থ বরাদ্দ দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে কংগ্রেস। এ নিয়ে দেশটির সরকারে আংশিক অচলাবস্থা দেখা দেয়।

কংগ্রেসের এই ভূমিকায় ট্রাম্প ক্ষুব্ধ। তিনি বারবার হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন, কংগ্রেস ভালোয় ভালোয় অর্থ বরাদ্দ না দিলে বিকল্প পথ দেখবেন তিনি। ট্রাম্পের সেই বিকল্প রাস্তা হলো জরুরি অবস্থা জারি।

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় জরুরি অ্যাক্ট (এনইএ) দেশটির প্রেসিডেন্টকে জাতীয় জরুরি অবস্থা জারির অধিকার দিয়েছে। সে ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্টকে সুনির্দিষ্ট কারণ দেখাতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্রে অন্যান্য আইনেও কিছু জরুরি ক্ষমতা রয়েছে।

জরুরি ক্ষমতার অধীনে হোয়াইট হাউস মার্শাল ল জারি করতে পারে। সাধারণ নাগরিকদের অধিকার স্থগিত করতে পারে। সামরিক বাহিনী বাড়াতে পারে। সম্পদ জব্দ করতে পারে। বাণিজ্য, যোগাযোগ ও অর্থ লেনদেন সীমিত করতে পারে।

জর্জ ডব্লিউ বুশ, বারাক ওবামাসহ যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক সময়ের প্রত্যেক প্রেসিডেন্টই যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় জরুরি অ্যাক্ট (এনইএ) ব্যবহার করেছেন।

বেশ কিছু জরুরি অবস্থা এখনো দেশটিতে কার্যকর রয়েছে। এগুলো বার্ষিক নবায়ন করা হয়।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের জরুরি অবস্থা জারিসংক্রান্ত ক্ষমতা সীমাহীন নয়। কংগ্রেসের পাশাপাশি আদালতও প্রেসিডেন্টের এই ক্ষমতা রুদ্ধ করে দিতে পারেন।

আবার ট্রাম্পের দেয়াল নির্মাণের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট এলাকার জমির মালিকেরা আইনের দ্বারস্থ হতে পারেন। তাঁরা তাঁদের জমিতে দেয়াল নির্মাণের বিরোধিতা করে আইনগত পদক্ষেপ নিতেই পারেন।

ট্রাম্প যদি জাতীয় জরুরি অবস্থা জারি করেন, তাহলে তিনি সহজেই সীমান্তে আরও জনশক্তি মোতায়েন করতে পারবেন। কিন্তু দেয়াল নির্মাণ করতে হলে তাঁকে অবশ্যই প্রচুর অর্থ জোগাড় করতে হবে।

একটি জরুরি আইনের ক্ষমতাবলে প্রেসিডেন্ট সামরিক নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় দেয়াল তৈরির আদেশ দিতে পারেন। এই নির্মাণের অর্থ পেন্টাগনের বাজেট থেকে আসবে।

তবে অর্থপ্রাপ্তি নিয়ে ট্রাম্প আইনি ঝামেলায় পড়বেন বলে আগাম বলে রেখেছেন ডেমোক্রেটিক পার্টির এক সিনেটর।

জাতীয় জরুরি অ্যাক্ট (এনইএ) কংগ্রেসকেও প্রেসিডেন্টের জরুরি অবস্থা জারির ঘোষণা তাৎক্ষণিকভাবে চ্যালেঞ্জ করার অধিকার দিয়েছে। আর ডেমোক্র্যাটরা যে সেই পথে যাবেন, তা আগেই বলে রেখেছেন।