স্ট্যাটেন আইল্যান্ডে শিক্ষক খুন, স্বামীসহ গ্রেপ্তার ২

নিউইয়র্কের স্ট্যাটেন আইল্যান্ড বরোতে গত সপ্তাহে ৩৭ বছর বয়সী স্কুলশিক্ষক জেনিন কামারাতা খুন হয়েছেন। ৪ এপ্রিল নিউইয়র্ক পুলিশ তাঁর মরদেহ একটি পরিত্যক্ত গুদাম থেকে উদ্ধার করে। এ হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে তাঁর স্বামীসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এর আগের সপ্তাহে জেনিন কামারাতার আত্মীয়রা তাঁকে খুঁজে না পেয়ে পুলিশের কাছে রিপোর্ট করেন। এ বিষয়ে পুলিশ প্রথম থেকেই তাঁর ডিভোর্স হতে চলা স্বামীকে সন্দেহ করে। কারণ বেশ কিছু দিন ধরেই জেনিনের স্বামী মাইকেল কামারাতা তাঁকে অনেকগুলো আক্রমণাত্মক ও বাজে মেসেজ পাঠাচ্ছিলেন। জেনিনের সঙ্গে মাইকেলের বিচ্ছেদের কথাবার্তা শুরুর পর থেকেই মাইকেল এ ধরনের আগ্রাসী আচরণ করতে শুরু করেন।
পারিবারিক এই বিবাদের সূত্র ধরে পুলিশ জেনিনকে খুঁজতে অনেক অভিযান চালায়। এনওয়াইপিডির গোয়েন্দা বিভাগের সহকারী প্রধান উইলিয়াম অব্রি জানান, গত ৩০ মার্চ রাত ৯টার দিকে জেনিন তাঁর স্ট্যাটেন আইল্যান্ডের বাড়ি থেকে কুইন্সে মাইকেলের বাড়িতে যান। নিজের সন্তানদের মাইকেলের বাড়ি থেকে ফেরত আনতেই সেখানে গিয়েছিলেন জেনিন। এরপর থেকেই জেনিন নিখোঁজ হন। অব্রি বলেন, জেনিন কখনো সময় নষ্ট করতেন না। স্কুলে সব সময় সঠিক সময়ে আসতেন এবং কখনো মিস করতেন না। তাই ১ এপ্রিল জেনিনের স্কুলের সহকর্মী ও আত্মীয়রা মিলে পুলিশকে সব ঘটনা খুলে বলে। পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে জেনিনের খোঁজে অভিযান শুরু করে। কিন্তু হারানোর রিপোর্ট নিয়ে অভিযান চালায়। কিন্তু কোনো খোঁজ মিলছিল না। অবশেষে ৪ এপ্রিল তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
উইলিয়াম অব্রি বলেন, ৪ এপ্রিল একটি গুদামের (এক্সট্রা স্পেস স্টোরেজ) ব্যাগের ভেতরে গলিত ও বিকৃত অবস্থায় একটি মরদেহ পাওয়া যায়। পরে মেডিকেল পরীক্ষা মাধ্যমে ওই মরদেহ জেনিনের বলে শনাক্ত হয়।
মেডিকেল এক্সামিনার কার্যালয়ের মুখপাত্র জানান, জেনিনের দাঁতের রেকর্ডের সঙ্গে মরদেহের দাঁতের নমুনা মিলে যায়। এভাবেই মরদেহটি জেনিনের বলে শনাক্ত হয়। জেনিনের মৃত্যুর কারণ এখনো জানা যায়নি। ময়নাতদন্ত শেষ হলে সেটা জানা যাবে।
উইলিয়াম অব্রি বলেন, জেনিনের লাশ উদ্ধারের আগে মাইকেলকে পুলিশ অন্য মামলায় গ্রেপ্তার করে। জেনিনের লাশ উদ্ধারের পর মাইকেল ও তাঁর ৪১ বছর বয়সী প্রেমিকা আয়িশা ইজিয়াকে পুলিশ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার করে।
মাইকেল সব সময় জেনিনের সঙ্গে নানা বিষয়ে ঝগড়া বিবাদে লিপ্ত থাকতেন। তাই দুই বছর আগে তাঁরা পৃথকভাবে বসবাস করতে শুরু করেন। তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদের মামলাও আদালতে চলতে থাকে। বিচ্ছেদের মামলাটি দীর্ঘায়িত হয় তাঁদের সন্তানদের নিয়ে। বিষয়টি নিয়ে অনেক দিন ধরে আদালতে শুনানি চলছিল। বর্তমানে তাঁদের সন্তানেরা অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ফর চিলড্রেন সার্ভিসের হেফাজতে রয়েছেন।