অন্ধকারে ঘুম ভেঙে দেখেন তিনি একলা

যাত্রীকে বিমানে রেখেই এয়ার কানাডার একটি বিমান পার্ক করে রাখা হয়েছিল। ছবি: বিবিসির সৌজন্যে
যাত্রীকে বিমানে রেখেই এয়ার কানাডার একটি বিমান পার্ক করে রাখা হয়েছিল। ছবি: বিবিসির সৌজন্যে

ফ্লাইটেই ঘুমিয়ে পড়েছিলেন তিনি। ঘুম যখন ভাঙল, নিজেকে আবিষ্কার করলেন এয়ার কানাডা বিমানের ভেতর। মাঝরাতে, একাকী অন্ধকারে। ঠিক এমনটাই ঘটেছে কানাডার টিফানি অ্যাডামসের বেলায়।

কানাডার কুইবেক থেকে টরোন্টোয় যাচ্ছিলেন টিফানি। বিমানে ওঠার কিছুক্ষণ পরই ঘুমিয়ে পড়েন। ঘুম থেকে উঠে গা হিম করা ঠান্ডার ভেতর সিটবেল্ট বাঁধা অবস্থায় নিজেকে দেখে চমকে উঠলেন। আশপাশের দিকে তাকিয়ে বুঝলেন বিমানটি ভ্রমণ শেষ করে হ্যাঙ্গারে বিশ্রাম নিচ্ছে, আর তার পেটের ভেতর আটকে পড়েছেন তিনি।

৯ জুন বিবিসি অনলাইনে এ খবর প্রকাশের পর দায় স্বীকার করেছে এয়ার কানাডা। এ ঘটনার পর থেকে রাতেও আর ঘুমাতে পারছেন না টিফানি। বারবার দুঃস্বপ্ন দেখে আঁতকে উঠে ঘুম ভেঙে যাচ্ছে তাঁর। এ ব্যাপারে তদন্ত করতে কমিটি গঠন করেছে এয়ার কানাডা।

টিফানি অ্যাডামস তাঁর ফেসবুক আইডিতে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে নিজের সে সময়কার অনুভূতি প্রকাশ করেছেন। বিমান অবতরণের কয়েক ঘণ্টা পর মাঝরাতে ঘুম ভাঙে টিফানির। ঘুটঘুটে অন্ধকারে ঠান্ডায় জমে যাচ্ছিলেন। এক কথায় সে অভিজ্ঞতাকে ‘দুর্বিষহ’ বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

কী করবেন—ভাবতে ভাবতে বান্ধবী ডিয়েনা ডেলকে ফোন করেন তিনি। কিন্তু এক মিনিটও স্থায়ী হয়নি সে ফোনকল। চার্জ না থাকায় কথা বলতে বলতেই বন্ধ হয়ে যায় টিফানির ফোন। এদিকে বিমান বন্ধ থাকায় ফোন চার্জ দেওয়ার কোনো ব্যবস্থা ছিল না। সৌভাগ্যক্রমে ওই আধা মিনিটে নিজের অবস্থান জানিয়ে দিতে পেরেছিলেন টিফানি।

টিফানির বান্ধবী ডেল সঙ্গে সঙ্গে টরন্টো পিয়ারসন বিমানবন্দরে ফোন করে টিফানির ব্যাপারে জানান। এর মধ্যে সিট থেকে উঠে ককপিট থেকে একটি টর্চ খুঁজে বের করেন টিফানি। আলো ফেলে আশপাশের লোকজনের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেন। শেষমেশ এক লাগেজ কার্ট অপারেটর এসে হতবিহ্বল অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করেন।

এয়ার কানাডার লোকজন এসে তাঁকে লিমোজিন গাড়িতে করে হোটেলে নিয়ে থাকার প্রস্তাব দিলেও টিফানি তা ফিরিয়ে দেন। যত দ্রুত সম্ভব বাসায় ফিরে যান। পরবর্তী সময়ে এয়ার কানাডার পক্ষ থেকে দুবার তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তাঁরা ক্ষমা চান টিফানির কাছে। এয়ার কানাডা এখনো বুঝতে পারছে না—এমন একটি ঘটনা কীভাবে ঘটল। এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে তারা।