শোক দিবস উপলক্ষে নিউইয়র্কে বিনা মূল্যে খাবার পরিবেশন

নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে মানুষকে বিনা মূল্যে খাবার পরিবেশন করে ‘জ্যাকসন হাইটস এলাকাবাসী’ নামের অলাভজনক সংগঠন।
নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে মানুষকে বিনা মূল্যে খাবার পরিবেশন করে ‘জ্যাকসন হাইটস এলাকাবাসী’ নামের অলাভজনক সংগঠন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহদাতবার্ষিকী ও বাংলাদেশের জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে নয় হাজারেরও বেশি মানুষকে বিনা মূল্যে খাবার পরিবেশন করা হয়েছে। আয়োজনটি করে ‘জ্যাকসন হাইটস এলাকাবাসী’ নামের অলাভজনক একটি সামাজিক সংগঠন।

১৭ বছর ধরে ১৫ আগস্ট নিয়মিত এই আয়োজন করে আসছে সংগঠনটি। বাঙালিদের কেন্দ্রস্থল জ্যাকসন হাইটসের ৩৭ অ্যাভিনিউ ও ৭৩ স্ট্রিটে অবস্থিত খাবারবাড়ি রেস্টুরেন্টের সামনে এবারের আয়োজনটি ছিল এযাবৎকালের মধ্যে সবচেয়ে বড়। খাওয়ানোর জন্য দশটি গরু, ছয়টি ছাগল, সাড়ে তিন শ মোরগ, সাড়ে চার হাজার ডিম রান্না করা হয়েছিল। সঙ্গে ছিল সাদা ভাত, পোলাও, পায়েস এবং নানান রকমের পানীয়।

সংগঠনের সভাপতি সাকিল মিয়া বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের জাতীয় দিবস, ব্যক্তিত্ব ও ঈদের দিনগুলো এমনভাবে পালন করে আসছি। ধর্ম-বর্ণ ও রাজনৈতিক মতাদর্শ আমাদের কার্যক্রমকে প্রভাবিত করতে পারে না। আমরা কারও কাছ থেকে নগদ অর্থ গ্রহণ করি না। সংগঠনের প্রত্যেকে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন বলে এত বড় আয়োজন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। যারা গরু-ছাগলসহ অন্যান্য সামগ্রী দিয়ে আমাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন, তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’

ফেসবুকে মানুষের লাইভ দেখে একটি ফেরি ও দুটি ট্রেনে চড়ে স্টেটেন আইল্যান্ড থেকে এ আয়োজন দেখতে আসা ৫২ বছরের এমদাদুল ইসলাম বলেন, ‘বাঙালি বসবাস করে—এমন ৩৪টি দেশে আমি গিয়েছি। আমেরিকায় আছি ৩০ বছর ধরে। আমার জীবনে এত বড় আয়োজন কোথাও দেখিনি ও শুনিনি।’

সর্বজনীন সামাজিক সংগঠন হিসেবে  বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী ও বাংলাদেশের জাতীয় শোক দিবস আয়োজন করে আসছে ‘জ্যাকসন হাইটস এলাকাবাসী’ ।
সর্বজনীন সামাজিক সংগঠন হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী ও বাংলাদেশের জাতীয় শোক দিবস আয়োজন করে আসছে ‘জ্যাকসন হাইটস এলাকাবাসী’ ।

সংগঠনের কো-চেয়ারপারসন শাখাওয়াত বিশ্বাস বলেন, ‘মানুষ যত পরিমাণ চেয়েছে, আমরা তত পরিমাণ দিতে পেরেছি। অনেকে পরিবারের জন্য খাবার বাটিতে করে নিয়ে গেছেন। মানুষ খাওয়াদাওয়া করার পরে তাদের চেহারায় যে তৃপ্তি দেখেছি, এটাই আমাদের সাফল্য। তাতেই বঙ্গবন্ধুর আত্মা শান্তি পাবে বলে আমার বিশ্বাস।’

জ্যাকসন হাইটসের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের নিয়মিত দর্শক বিভাস মল্লিক বলেন, ‘এত বড় আয়োজন অথচ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ কাউকে বক্তব্য দিতে দেখলাম না। এমন সর্বজনীন সামাজিক সংগঠনের আয়োজন দেশে-বিদেশে কোথাও চোখে পড়েনি।’

সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুদিবসের এ আয়োজনে নিরলস পরিশ্রম করেছেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. আলম, কর্মসূচির আহবায়ক হোসেন সোহেল রানা, কো–চেয়ারম্যান মামুন মিয়াজী, চেয়ারপারসন বিপ্লব সাহা, সহসভাপতি দেওয়ান মনির, মো. মানিক বাবু, এম রহমান, কবির চৌধুরী, আসাদুল ইসলাম, মোহাম্মদ হাসানাত, সহসাধারণ সম্পাদক মিয়া মো. দুলাল ও শাহিন চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক আফতাব জনি, সহসাংগঠনিক সম্পাদক আকরাম হোসেন, প্রচার সম্পাদক নান্টু মিয়া, সাংস্কৃতিক সম্পাদক আলমগীর খান, আপ্যায়ন সম্পাদক মুক্তা মিয়া, ক্রীড়া সম্পাদক ইফতি খান এবং সাহিত্য সম্পাদক গোপাল স্যান্যাল।