ট্রাম্প কেন গ্রিনল্যান্ড কিনতে চান?

ডোনাল্ড ট্রাম্প
ডোনাল্ড ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশ্বের বৃহত্তম দ্বীপ গ্রিনল্যান্ড কিনতে চান। আইনজীবী ও উপদেষ্টাদের সঙ্গে নাকি এ বিষয়ে সলাপরামর্শও করেছেন তিনি। এ নিয়ে দেশে-বিদেশে হাসিঠাট্টাও কম হয়নি। তবে ট্রাম্প কেন ডেনমার্কের মালিকানাধীন দ্বীপটি কিনতে চান, তা নিয়ে মানুষের মনে অনেক প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

গ্রিনল্যান্ডের ৮০ শতাংশ অঞ্চল তুষারাবৃত। মাত্র ৬০ হাজার লোকের বাস এই দ্বীপে। এমন একটি জায়গা কেন কিনতে চান, সে বিষয়ে ট্রাম্প নিজেও মুখ ফুটে কিছু বলেননি। তবে এই ক্রয়ের পেছনে মানুষ কয়েকটি স্পষ্ট কারণের কথা তুলে ধরেছেন। এগুলোর একটি হলো প্রাকৃতিক সম্পদ। গ্রিনল্যান্ড বিপুল প্রাকৃতিক সম্পদের আধার। লোহা, আকরিক, সিসা, দস্তা, হীরা, সোনা, ইউরেনিয়াম ও তেল—বিরল সব প্রাকৃতিক উপাদানের কী নেই সেখানে! দ্বীপটির বেশির ভাগ এলাকা তুষারাবৃতের মধ্যে থাকায় সেই স্থানগুলো কেউ এখনো ব্যবহার করতে পারেনি। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে দ্বীপটির বরফ দ্রুত গলে যাচ্ছে। চলতি গ্রীষ্মে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার বিজ্ঞানীরা গ্রিনল্যান্ডের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় দুটি বরফ গলার ঘটনা পর্যবেক্ষণ করেন। দ্বীপটির বরফ গলার ফলে সেখানকার ভূমি ব্যবহারের সুযোগ বাড়বে এবং প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহারের অপার সম্ভাবনাও উন্মোচিত হবে। এ কারণেই ট্রাম্প গ্রিনল্যান্ড কেনায় ঝুঁকতে পারেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্টের ডেনমার্কের ওই দ্বীপ কেনার পেছনে ভূরাজনৈতিক কারণও থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন অনেকে। যুক্তরাষ্ট্র দেশটিতে ইতিমধ্যে পা রেখেছে। সেখানে ঠুলে এয়ার বেস নামে একটি সেনাঘাঁটি স্থাপন করেছে মার্কিন প্রশাসন। আর্কটিক সার্কেলের সাড়ে ৭০০ মাইল উত্তরে অবস্থিত ওই সেনাঘাঁটি আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন। সেখানে একটি রাডার স্টেশন রয়েছে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের অগ্রিম ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সতর্কব্যবস্থার একটি অংশ। যুক্তরাষ্ট্রের এয়ারফোর্স স্পেস কমান্ড ও নর্থ আমেরিকান অ্যারোস্পেস ডিফেন্স কমান্ডও সামরিক ঘাঁটিটি ব্যবহার করে থাকে। ইউরোপে সামরিক শক্তি বাড়াতে গ্রিনল্যান্ড কেনার চিন্তাভাবনাও করতে পারেন ট্রাম্প।

গ্রিনল্যান্ড কেনার চেষ্টার পেছনে আরেকটি কারণ হতে পারে—নিজের দক্ষতা ও যোগ্যতার জাহির। অন্য দেশের সম্পদ কেনাকে প্রেসিডেন্টের বাড়তি দক্ষতা হিসেবে দেখা হয় মার্কিন মুলুকে। তাই গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে ট্রাম্প গ্রিনল্যান্ডকে নিজের পকেটে পুরতে চান। এতে এক ঢিলে দুই পাখি মারতে চান ট্রাম্প—প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে গ্রিনল্যান্ড কেনার বিষয়টি হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা, অন্যদিকে নিজের দক্ষতার প্রমাণ দেওয়া।