আড্ডা জমিয়ে দেন সাবেক সেনা কর্মকর্তা হুমায়ুন

প্রথম আলো উত্তর আমেরিকা অফিসের আড্ডায় এসেছিলেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) হুমায়ুন বখত। ছবি: প্রথম আলো
প্রথম আলো উত্তর আমেরিকা অফিসের আড্ডায় এসেছিলেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) হুমায়ুন বখত। ছবি: প্রথম আলো

প্রতি সপ্তাহের মতো গতকাল বৃহস্পতিবারের মনোরম বিকেলেও প্রথম আলো উত্তর আমেরিকা অফিসে বসে আড্ডা। আড্ডা জমে উঠতে সময় লাগে না। একে একে হাজির হতে শুরু করেন নিয়মিত আড্ডাবাজেরা। তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন অনেক নতুন মুখ। আবার কাজের চাপে, নানা ব্যস্ততায় বাদ পড়ে যান অনেক নিয়মিত আসা প্রিয়জন। গিটার হাতে, বাবরি চুল দুলিয়ে, হাসি হাসি মুখে এসে আড্ডায় সুর তোলেন প্রিয় কণ্ঠশিল্পী পাপীমনা। স্বরচিত কবিতা পড়েন লেখক ইশতিয়াক রূপু।

এই সপ্তাহে আড্ডার মধ্যমণি ছিলেন সাবেক এক সেনা কর্মকর্তা। সুনামগঞ্জের এই কৃতী সন্তান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) হুমায়ুন বখত অবসরে গেছেন বেশ কিছুদিন হয়। নিউইয়র্কে ব্যক্তিগত ভ্রমণে এসে তিনি অত্যন্ত আগ্রহ ও আনন্দ নিয়ে যোগ দেন প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার আড্ডায়। তাঁর সেনাজীবন ও নানামুখী কর্মপ্রয়াসের কারণেই এই অতিথি সবার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠেন। হুমায়ুন বখত তাঁর ব্যক্তিগত জীবন, কর্মব্যস্ত সেনাজীবন ও কাজ-সংশ্লিষ্ট নানা অভিজ্ঞতার গল্প শোনান উপস্থিত সবাইকে।

শুরুতে মেডিকেলের ছাত্র ছিলেন হুমায়ুন বখত। কিন্তু একপর্যায়ে এসে এই চৌকস ও মেধাবী যুবক সিদ্ধান্ত নেন সেনাবাহিনীতে যাওয়ার। দেশের মাটির এক খাঁটি সন্তান হিসেবে দেশের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছেন তিনি।

আড্ডায় অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা। ছবি: প্রথম আলো
আড্ডায় অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা। ছবি: প্রথম আলো

দীর্ঘদিন পার্বত্য চট্টগ্রামে দায়িত্ব পালন করেছেন হুমায়ুন বখত। দায়িত্ব পালনকালের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন তিনি। জানান, কীভাবে সমঝোতা হয়, শান্তির পথে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়। তিনি বলেন, পাহাড়ে শান্তির জন্য বাংলাদেশ অনন্য কাজ করেছে। পাহাড়ের মানুষের মন জয় করার অতুলনীয় প্রয়াস নিয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় সিডর-পরবর্তী পুনর্বাসনের দায়িত্বে ছিলেন হুমায়ুন বখত। জানালেন সে সময়কার নানা উদ্যোগের কথা।

হুমায়ুন বখত জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে গুরুত্বপূর্ণ অনেক দায়িত্ব পালন করেছেন। দেশের সীমানা পেরিয়ে ঝঞ্ঝা-সহিংসতায় নাকাল একাধিক দেশে বাংলাদেশ শান্তি মিশনের অধিনায়কত্ব করেছেন।

চিন্তায়-চেতনায় অগ্রসর হুমায়ুন বখত কেবল সেনা কর্মকর্তাই ছিলেন না, তিনি একজন সাহিত্যপ্রেমীও বটে। সাহিত্য-সংস্কৃতিবিষয়ক আলাপেও তিনি জমিয়ে রাখেন আড্ডা। অপূর্ব কথা শৈলী দিয়ে বলেন তাঁর জীবনের নানা গল্প। বৈচিত্র্যময়, শিহরণ তোলা নানা ঘটনা।

নানা আলাপে আড্ডা জমিয়ে রাখেন হুমায়ুন বখত। ছবি: প্রথম আলো
নানা আলাপে আড্ডা জমিয়ে রাখেন হুমায়ুন বখত। ছবি: প্রথম আলো

প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার লেখকদের লেখা নিয়মিত পড়েন হুমায়ুন বখত। অনেক লেখকদের লেখা থেকে বিবরণ দিলেন তিনি। এসব লেখার সাহিত্যরসের নানা বিষয় নিয়ে কথা বললেন খাঁটি সাহিত্যপ্রেমীর মতো। একপর্যায়ে দেখা গেল, হাসন রাজা, শাহ আবদুল করিমের হাওরপারের লোকজনের আধিক্য প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার আড্ডায়।

আড্ডা যাঁরা যোগ দিয়েছিলেন, তাঁরা হলেন মনজুরুল হক, জুলকার বখত, আবদুস শহীদ, মাহমুদুল হক চৌধুরী, রহমান মাহবুব, মনিজা রহমান, রোকেয়া দীপা, নীরু এস নীরা, রওশন হক, মনীষা তৃষা, রোমেনা লেইস, মারুফ চৌধুরী, ইব্রাহীম চৌধুরী, নাসিমা সুলতানা, সাব্রী সাবেরীন, মাসুদ চৌধুরী, ইশতিয়াক রূপু, ফরহাদ চৌধুরী, মিছবাউর রশীদ, আমির হোসেন, পাপীমনা, সাঞ্জিদা ঊর্মি, তফাজ্জল লিটন প্রমুখ।