দ্রুত বিতাড়নের খড়্গ অভিবাসীদের ওপর

ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন সম্প্রতি ‘কুইক ডিপোর্ট’ বা ‘দ্রুত বহিস্কার’ বলে কিছু ইমিগ্রান্ট বা অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছে। প্রশাসনের এই প্রস্তাবের পর অভিবাসন এজেন্টরা যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ বা পর্যালোচনা ছাড়াই কিছু অভিবাসীকে আরও সহজে আমেরিকা থেকে বিতাড়ন করার উদ্যোগ নিয়েছে।
‘দ্রুত বিতাড়ন’ বলতে প্রযোজ্য আইনি সুরক্ষা ছাড়াই মার্কিন নাগরিক নয়—এমন অভিবাসীদের ইমিগ্রেশন অফিসারদের বিতাড়নের আদেশ দেওয়ার কর্তৃত্বকে বোঝায়।
এই নীতিটি অভিবাসীদের আলাদাভাবে খুঁজে বের করতে ইমিগ্রেশন এজেন্টদের সাহায্য করবে। দেশের যেকোনো জায়গায়, বিশেষত কাগজপত্রহীন অভিবাসীদের, যারা দুবছরেরও কম সময় ধরে আমেরিকায় বসবাস করছে, তাদের ওপর খড়্গ নেমে আসবে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অভিবাসন নীতির সমর্থকেরা এই পরিবর্তনকে স্বাগত জানিয়েছে। কারণ তারা মনে করেন, এই অনিবন্ধিত অভিবাসীরা ‘অবৈধ বিদেশি’। তারা বিশ্বাস করে, আমেরিকায় থাকার তাদের কোনো অধিকার নেই। এসব লোকজনকেই আগে ট্রাম্পের সমর্থকেরা আমেরিকা থেকে বের করতে চায়।

মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, যারা আজ এই আইনকে বাহবা দিচ্ছে, তারা নিজেরাই ইউরোপ থেকে আগত অভিবাসী। যারা এখন অনিবন্ধিত অভিবাসীদের বিরুদ্ধে তর্ক করছে, তাদের ইউরোপীয় পূর্বপুরুষেরা আগে এসে এই আইনটিকে সম্মান করেছিলেন। আজ তারাই নতুন অভিবাসীদের বিপরীতে। তবে তারা ইতিহাসটি ভুলভাবে জেনেছেন। বিশেষ করে যারা তাদের পূর্বপুরুষদের আবেদনের মাধ্যমে উনিশ শতকে আমেরিকায় এসেছিলেন। বাস্তবে, উনিশ শতকে ইউরোপীয় অভিবাসীরা ততটা লিগ্যাল সম্ভবত ছিলেন না, যতটা তাদের বংশধররা মনে করেন।
১৮ শতক ও ১৮৮০–এর দশকে কংগ্রেস চীনা অভিবাসন নিষিদ্ধ করার আগে আমেরিকা সীমান্ত আইনসম্মতভাবে উন্মুক্ত ছিল না। ১৯ শতকের আমেরিকায় কোনো অভিবাসন আইনই ছিল না। আমেরিকার সীমানা আইনসম্মতভাবে কখনো খোলা ছিল না, এমনকি ফেডারেল আইনে চীনাদের বর্জনের আগেও।
ফেডারেল সরকার অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ শুরু করার আগে পৌর ও রাজ্য সরকারগুলো অভিবাসীদের গ্রহণ ও বর্জন করত। অন্য কথায়, অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ স্থানীয় ও রাজ্য পর্যায়ে পরিচালিত হচ্ছিল। আমেরিকার অভিবাসন ইতিহাসের আংশিক ভুল ব্যাখ্যার ওপর ভিত্তি করে বৈধতা–অবৈধতার আইন তৈরি করা হচ্ছে। ট্রাম্প প্রশাসন এখন ইউরোপীয় অভিবাসীদের বর্তমান মনোভাবকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে নিছক রাজনৈতিক কারণে।