নিউইয়র্ক থেকে আজ রাতে রওনা হচ্ছে খোকার মরদেহবাহী ফ্লাইট

জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারে সাদেক হোসেন খোকার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: রওশন হক
জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারে সাদেক হোসেন খোকার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: রওশন হক

ঢাকার সাবেক মেয়র, বিএনপি নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা সাদেক হোসেন খোকার মরদেহ যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় আজ মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে উড়োজাহাজের ফ্লাইটে তোলা হচ্ছে। অ্যামিরেটস এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে মরদেহ। বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার সকাল আটটা ১০ মিনিটে দেশে পৌঁছাবে মরদেহ।

স্থানীয় সময় গতকাল সোমবার বাদ এশা সাদেক হোসেন খোকার নামাজে জানাজা জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারে (জেএমসি) অনুষ্ঠিত হয়।

সাদেক হোসেন খোকার শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী জুরাইনে বাবার কবরের পাশে তাঁকে দাফন করা হবে বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। ছেলে ইশরাক হোসেন জানান, ঢাকায় নিজেদের আদি বাড়ি ঢাকার গোপীবাগসহ অন্তত তিন জায়গায় জানাজা হতে পারে।

খোকার স্ত্রী ইসমত আরার ট্রাভেল ডকুমেন্ট ইস্যু করেছে নিউইয়র্কের বাংলাদেশ কনস্যুলেট। একই সঙ্গে খোকার মরদেহ দেশে নিতে ফিউনারেল হোমের কাগজপত্রও সত্যায়িত করে দিয়েছে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ।
সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারে সন্ধ্যা ছয়টায় নিয়ে আসা হলে জাতীয় পতাকায় ঢেকে দেওয়া হয় খোকার কফিন। চার মুক্তিযোদ্ধা অন্তিম অভিবাদন জানান কফিন সামনে রেখে। দলে দলে নানা শ্রেণি ও পেশার প্রবাসীদের ঢল নামে পুরো মসজিদে এলাকায়। হাজারো মানুষের উপস্থিতিতে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। নিউইয়র্কসহ আশপাশের রাজ্য থেকে ছুটে আসা লোকজনকে বিলাপ করতে দেখা যায়। বিপুলসংখ্যক নারীও জানাজায় উপস্থিত ছিলেন।

জাতীয় পতাকায় মোড়ানো সাদেক হোসেন খোকার মরদেহের কফিন। ছবি: রওশন হক
জাতীয় পতাকায় মোড়ানো সাদেক হোসেন খোকার মরদেহের কফিন। ছবি: রওশন হক

সাদেক হোসেন খোকার জানাজায় ইমামতি করেন জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের খতিব মাওলানা মির্জা আবু জাফর বেগম। এর আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেটের ফার্স্ট সেক্রেটারি শামীম হোসেন। তিনি বক্তব্য শুরু করার পর মসজিদে উপস্থিত যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নেতা–কর্মীরা খোকার পাসপোর্ট নবায়ন না করার প্রতিবাদ জানান। পরিস্থিতি হট্টগোলে রূপ নিলে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মো. আব্দুস সালাম, জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের সাধারণ সম্পাদক মনজুর আহমদ চৌধুরী এবং সাদেক হোসেন খোকার ছেলে প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন সবাইকে শান্ত থাকার অনুরোধ জানান।

এ সময় ইশরাক হোসেন বলেন, নিউইয়র্ক কনস্যুলেট দ্রুত সময়ের মধ্যে তাঁর বাবার মরদেহ দেশে নিয়ে যেতে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিয়েছে। তিনি দলের নেতা–কর্মীদের শান্ত থাকার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আপনারা আমার বাবার জন্য যা করেছেন, আমার পরিবার তা মনে রাখবে।’
সাদেক হোসেন খোকার ছোট ছেলে ইশফাক হোসেনও উপস্থিত ছিলেন সেখানে। তাঁরা বাবার জন্য সবার কাছে দোয়া প্রার্থনা করেন। জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের সেক্রেটারি মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরীসহ কমিউনিটির নেতারা এ সময় খোকার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন।

ক্যানসার চিকিৎসার জন্য ২০১৪ সালের ১৪ মে সপরিবারে নিউইয়র্ক চলে আসেন খোকা। নিউইয়র্ক সিটির কুইন্সে তিনি বসবাস করতেন। গত ১৮ অক্টোবর সকালে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে স্লোন ক্যাটারিং ক্যানসার সেন্টারে ভর্তি করা হয়। গত ২৮ অক্টোবর স্বাস্থ্যের আরও অবনতি ঘটলে তাঁকে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) নেওয়া হয়।