নারীর আত্মহত্যা ঠেকাল পুলিশ

পুলিশ কর্মকর্তা মিশেল শ্যাক। ছবি: সংগৃহীত
পুলিশ কর্মকর্তা মিশেল শ্যাক। ছবি: সংগৃহীত

নবজাতক কন্যা সন্তানকে হত্যার পর আত্মহত্যা করার পরিকল্পনা করেছিলেন হতাশাগ্রস্ত এক মা। বিষয়টি জানতে পেরে দ্রুত স্মার্টফোনে ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে তাঁর অবস্থান খুঁজে বের করে আত্মহত্যা ঠেকিয়েছেন এক পুলিশ কর্মকর্তা। ১৫ নভেম্বর ঘটনাটি ঘটেছে নিউইয়র্কের ব্রুকলিনে।

পুলিশের বরাত দিয়ে নিউইয়র্ক ডেইলি নিউজ-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, হত্যা ও আত্মহত্যা ঠেকানো ওই পুলিশ কর্মকর্তার নাম মিশেল শ্যাক। বিষয়টি জানতে পেরে তিনি নিজের স্মার্টফোনে ট্র্যাক করে ওই নারীকে ভেরাজানো ব্রিজের কাছে শনাক্ত করেন। সেখানে পেনসিলভানিয়া গান শপে ওই নারী অস্ত্র কিনতে গিয়েছিলেন বলে ধারণা করেন তিনি।

সন্দেহ হলে পুলিশ কর্মকর্তা মিশেল শ্যাক ও তাঁর সহকর্মী গুলরেজ নন্ধা বেলা ১১টা ২৫ মিনিটে কানারসি এলাকার বেভিউ হাউসেসে ওই নারীর বাসায় যান। ওই নারীর মা তাঁদের জানান, তাঁর ২৭ বছর বয়সী মেয়ে সন্তান জন্ম-পরবর্তী হতাশায় ভুগছে। প্রায় সে হুমকি দিয়ে বার্তা পাঠায়, সে তাঁর ছয় মাস বয়সী কন্যাকে হত্যার পর আত্মহত্যা করবে।

মিশেল শ্যাক বলেন, ‘এ ঘটনা জানার পর থেকে ওই নারীকে ফোন করা হচ্ছে। কিন্তু ফোন ধরছেন না। আমাদের চিন্তা ছিল, যে করেই হোক ওই নারীকে থামাতে হবে।’

ওই নারীর নানি জানান, তিনি, তাঁর মেয়ে ও নাতনিসহ সবাই পেনসিলভানিয়ায় থাকেন। মাঝে মাঝে তাঁরা পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে ব্রুকলিনে আসেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, মিশেল শ্যাক দ্রুত ওই নারীর গাড়ির লাইসেন্স প্লেটের নম্বর জেনে তা স্মার্টফোনে লিখে লাইসেন্স প্লেট রিডার, ডেটাবেস ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে পাঠান। পরে ভেরাজানো ব্রিজের কাছে লাইসেন্স প্লেট রিডার ওই গাড়িটি শনাক্ত করে। গাড়িতে করে ওই নারী পেনসিলভানিয়ার দিকে যাচ্ছিলেন।
পরে স্মার্টফোনে ট্র্যাক করে ব্রুকলিন থেকে প্রায় ১১৫ মাইল দূরের বন্দুকের দোকানে ফোন করেন মিশেল শ্যাক। পোকোনো মাউন্টেন ফায়ারআর্মস নামের ওই দোকানের মালিক মাইকেল কনফর্টি। তিনি মিশেল শ্যাককে জানান, দোকানে একটু আগে কন্যা সন্তানকে নিয়ে এক নারী এসেছিলেন। ওই নারী একটি বন্দুক কেনার জন্য ফরম পূরণ করছিলেন। কিন্তু তাঁর সন্দেহ হচ্ছে। পরে ওই নারী দোকানে থাকা অবস্থাতেই কনফর্টি নিউইয়র্ক পুলিশকে ফোন করে বিষয়টি জানান। এর কিছুক্ষণ পরেই পোকোনো মাউন্টেন রিজিওনাল পুলিশ ওই দোকানে আসে। কনফর্টি আরও বলেন, পুলিশ ওই নারীকে সাহায্য করার কথা বলে মনস্তত্ত্ববিদের কাছে নিয়ে গেছে। জেনে ভালো লাগছে যে, শিশুটির কোনো ক্ষতি হয়নি।

ব্রুকলিনে ফিরে মিশেল শ্যাক বলেন, যখন আমি শুনলাম দুজনই নিরাপদে আছে তখন বেশ আনন্দ লেগেছিল। এ জন্য ওই নারীর নানি ও পরিবারের সদস্যদের ধন্যবাদ দিতে হবে।