কফির পেছনে প্রতি মার্কিনের ব্যয় ১,১১০ ডলার

ভোর হতেই কফির দোকানগুলোর সামনে দীর্ঘ লাইন আমেরিকানদের চোখে হয়তো নিত্যনৈমিত্তিক কোনো ব্যাপার। কফি কাপ হাতে নিয়ে সাবওয়ে এবং বাস স্টেশনে ছোটাছুটি করার দৃশ্য হয়তো অনেকের চোখ এড়ায় না। আড়মোড়াভাব ভাঙার জন্য এই ক্যাফেইনের যেন কোনো বিকল্প নেই। সতেজ ও ক্রীড়া তৎপরতা বাড়াতে সাহায্য করে ক্যাফেইন। দিনের শুরুতে, দুপুরে লাঞ্চের পর, অলস কোনো বিকেল অথবা সন্ধ্যায় কফি খাওয়ার অভ্যাস অনেকেরই। কেউ কফির কাপ হাতে নিয়ে ছুটে চলেছেন অফিসে, কেউ স্কুল কলেজে। আবার কেউ রেস্টুরেন্টে বসেই কফি খেতে খেতে গুছিয়ে নিচ্ছেন দিনের সব কাজ।

সতেজ ও ক্রীড়া তৎপরতা বাড়ানো ছাড়াও কফিতে রয়েছে আরও অনেক গুণাগুণ। কফিতে থাকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা নানা ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ থেকে আমাদের শরীরকে রক্ষা করে। তা ছাড়া গবেষণা বলছে, দিনে তিনবার কফি পান করলে হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা কমে।
পৃথিবীর সব দেশেই কফি সমানভাবে জনপ্রিয় নয়। আমেরিকা ও ইউরোপের মূল ভূখণ্ডে কফি জনপ্রিয় হলেও ভারত ও চীনের মতো এশীয় দেশগুলোতে চা বেশি জনপ্রিয়। গবেষণা অনুযায়ী, পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি কফি পান করে ফিনল্যান্ডের জনগণ।
বিভিন্ন জরিপের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে আমেরিকাজুড়ে প্রায় ৩১ হাজার কফির দোকান আছে। এসব দোকানের মোট বার্ষিক আয় প্রায় ৫.২ বিলিয়ন ডলার। আমেরিকার জাতীয় অর্থনীতিতে এর অবদান প্রায় ৭ শতাংশ। প্রায় ৬৪ শতাংশ আমেরিকান কফি পান করতে পছন্দ করে। দিনের অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে সকালে কফি পান করার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি। ৬৫ শতাংশ আমেরিকান সকালবেলা কফি পান করাকে প্রাধান্য দেন। কফির পেছনে একজন সাধারণ আমেরিকান সাধারণত বছরে ১ হাজার ১১০ ডলার ব্যয় করে থাকেন। এ নিয়ে অনেক গবেষক খুবই উদ্বিগ্ন। কারণ তারা মনে করেন, তরুণ আমেরিকানরা কফির পেছনে যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে সে তুলনায় তারা তাদের অবসর পরিকল্পনা নিয়ে চিন্তিত নয়।
আমেরিকায় কফির দোকানগুলোর মধ্যে শীর্ষস্থান দখল করে আছে স্টারবাকস। এরপরে যথাক্রমে ম্যাকডোনাল্ড, ডানকিন ও সেভেন ইলেভেন। শহর ভেদে কফির দোকানগুলোর জনপ্রিয়তা ভিন্ন ভিন্ন। যেমন শিকাগোতে স্টারবাকস, নিউইয়র্ক শহরে ডানকিন ডোনাটস, কানাডা সীমান্তবর্তী বাফেলো ও মিশিগানে টিম হরটনস। এসব কফি দোকানে কাজ করা বাংলাদেশিদের সংখ্যা নেহাত কম নয়। নিউইয়র্ক শহরের বিভিন্ন ডানকিন ডোনাটসে কাজ করা কর্মীদের মধ্যে বাংলাদেশিদের জয়জয়কার।