কোয়ান্টামের সাপ্তাহিক সাদাকায়ন

কোয়ান্টামের সাপ্তাহিক সাদাকায়নে আলোচক ও শ্রোতারা
কোয়ান্টামের সাপ্তাহিক সাদাকায়নে আলোচক ও শ্রোতারা

কোয়ান্টাম মেডিটেশন সোসাইটি ইউএসএর নিয়মিত সাপ্তাহিক সাদাকায়ন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
৯ নভেম্বর সকাল ১০ টায় জ্যামাইকায় কোয়ান্টাম মেডিটেশন সোসাইটির কার্যালয়ে এই সাদাকায়ন অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সোসাইটির দায়িত্বশীল ও ক্যাপিটাল ওয়ান ব্যাংকের সিনিয়র সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার মো. সাইফুল আলম।
এবারের আলোচনার বিষয় ছিল—‘যে ক্ষ্যাপে, তাকেই ক্ষ্যাপানো হয়’। আলোচক ছিলেন কোয়ান্টাম মেডিটেশন সোসাইটির দায়িত্বশীল মো. রকিবুর রহমান।
আলোচক রকিবুর রহমান বলেন, শৈশবে আমরা কম বেশি সবাই সহপাঠী কিংবা বন্ধুদের ক্ষ্যাপিয়েছি বা নিজেরা ক্ষ্যাপানোর শিকার হয়েছি। সহপাঠীর রাগ দেখে আমরা যেমন বেশ মজা পেতাম, তেমনি আমাদের রেগে যাওয়াটাও তাদের জন্য নেহায়েত কম আনন্দের ছিল না। বড়বেলায় এসেও বিষয়টি সবার জন্য সত্য। পারিবারিক জীবনে, বন্ধুদের আড্ডায়, চাকরি ক্ষেত্রে, বিশ্ববিদ্যালয়ে, স্কুলে ও কলেজে বিভিন্ন স্থানে এই ধরনের ঘটনার সম্মুখীন হই। যা ক্ষতি ছাড়া কোনো উপকারে আসে না। অনেক সময় বড় দুর্ঘটনাও ঘটে যায় এই সামান্য করণে।
আলোচক বলেন, সমস্যার মূল কোথায়? সমস্যার মূল হচ্ছে রি-অ্যাকটিভ বা নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি। অন্যের আচরণে যখনই আমরা প্রতিক্রিয়া দেখাই, তখনই আমরা আমাদের নিয়ন্ত্রণ অন্যদের হাতে তুলে দিই। যারা ক্ষ্যাপে, তাদেরই ক্ষ্যাপানো হয়। আর অন্যকে ক্ষ্যাপিয়ে, রাগিয়ে, বিব্রত করে বিকৃত আনন্দই হলো ক্ষ্যাপানোর মূল কারণ। এ ক্ষেত্রে করণীয় কি? এ প্রসঙ্গে আলোচক যেকোনো পরিস্থিতে প্রো-অ্যাকটিভ থাকা, প্রতিক্রিয়া না দেখানোর ওপর জোর দেন। প্রো-অ্যাকটিভ বা ইতিবাচক হওয়া ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। বুদ্ধিমানের মতো প্রতিক্রিয়া দেখানো থেকে বিরত থাকাই প্রতিপক্ষকে নিরুৎসাহিত করতে পারে। এ রকম কয়েকবার ঘটলে তারা বুঝবে ক্ষ্যাপিয়ে আর ফায়দা নেই। এটাই হবে চিরস্থায়ী সমাধান। এ ছাড়া নিজেদের ব্যক্তিত্ব উন্নয়নে সচেষ্ট হতে পারি। মেডিটেশন করতে পারি। মেডিটেশন প্রো-অ্যাকটিভ থাকতে সাহায্য করবে। নিয়মিত মেডিটেশনে রাগ কমবে। নিজের আচরণের ওপর নিয়ন্ত্রণ আসবে।
আলোচনার শেষে আলোচক বলেন, অন্যের হাতের পুতুল হয়ে বেঁচে থাকার কোনো মানে নেই। আমরা যখন ক্ষেপে যাই তখন আমরা অন্যের হাতের পুতুলেই পরিণত হই। ভুল করে ফেলি। তাই এ থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। নিজেদের এমন ভাবে গড়ে তুলতে হবে যেন ক্ষ্যাপানোর চেষ্টা করা তো দূরে থাক, এই চিন্তাও যেন কারও মাথায় না আসে এবং তারা যেন ক্ষ্যাপানোর হাল ছেড়ে দিয়ে কল্যাণকর কাজে নিজেদের নিয়োজিত করে, ভালোর পথে নিজেদের রাখে।
আলোচনার পাশাপাশি কোয়ান্টাম মেথড কোর্সে অংশ গ্রহণকারীদের মেডিটেশন সংক্রান্ত ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়। অনলাইনে লাইভ স্ট্রিমিংয়ের মাধ্যমে আমেরিকার সাতটি স্টেট, কানাডার একাধিক প্রভিন্সসহ মোট ছয়টি দেশের ৪০ জন অতিথি অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
১৬ নভেম্বর সকাল ১০টায় জ্যামাইকা কোয়ান্টাম লার্নিং সেন্টার হলে (৮৬-৪৭ ১৬৪ স্ট্রিট, সুইট-বি ই) পরবর্তী সাদাকায়নের আমন্ত্রণ জানিয়ে অনুষ্ঠানটি শেষ হয়। আগামী সপ্তাহে আলোচনার বিষয়—‘আমি পৃথিবীকে দিতে এসেছি, মানুষকে দুহাতে দিয়ে যাব’।
এ ছাড়া থাকবে মনোযোগ, সচেতনতা, সৃজনশীলতা, সাফল্য, সুস্বাস্থ্য, প্রশান্তি ও সুখানুভূতি বাড়ানোর বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়া মনের ব্যায়াম-মেডিটেশন। অসুস্থ ও সমস্যা পীড়িতদের জন্য হিলিং এবং বিশেষ কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে।