কোস্টারিকা কেন ভ্রমণ করবেন

কোস্টারিকা কেন ভ্রমণ করবেন, তা একটু পরে বলছি। তার আগে জানিয়ে রাখি শুধু গত মাসেই স্যাম স্মিথ, নিল প্যাট্রিক হ্যারিস, ক্রিস মার্টিন (কোল্ড প্লে) ও তাঁর বান্ধবী ডাকোটা জনসন, জিনা রদ্রিগেজ, ক্রিশ্চিয়ান বেল ও ইরিনা শেকসহ আরও অনেক তারকা কোস্টারিকাকে বেছে নিয়েছেন অবকাশযাপনের জন্য।

গত ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত ‘গুগল থিংক টুরিজম ২০১৯’ সম্মেলনের দেওয়া তথ্য অনুসারে, ইউরোপীয়রা পর্যটন স্থান খুঁজতে যেসব স্থানের নাম লিখে গুগলে সার্চ করেন, তার মধ্যে কোস্টারিকা তৃতীয়। আর আমেরিকান ও কানাডিয়ানরা মধ্য আমেরিকা ও ক্যারিবীয় দেশগুলোর মধ্যে কোস্টারিকাকে বিশেষভাবে পছন্দ করে। তাদের পছন্দের তালিকায় কোস্টারিকার অবস্থান চতুর্থ।

মধ্য আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলের গুগল ব্যবস্থাপক জিওভানি স্টেলা বলেন, ‘আমেরিকানদের লাতিন আমেরিকা ভ্রমণে আগ্রহ গত বছর থেকে এই বছরে ৭৫ শতাংশ বেড়েছে। কানাডাবাসীদের আগ্রহ বেড়েছে ৭৩ শতাংশ। আর যুক্তরাজ্য ও স্পেনীয়দের এ অঞ্চলের প্রতি আগ্রহ বেড়েছে যথাক্রমে ৭১ ও ৮৬ শতাংশ।’

রোমাঞ্চ ও অ্যাডভেঞ্চারপ্রীয়দের জন্য কোস্টারিকা একটি উত্তম জায়গা। কোস্টারিকায় ছড়িয়ে থাকা নানা রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতার আকরের মধ্যে জিপ-লাইল ট্যুর, হোয়াইটওয়াটার রাফটিং, কায়াকিং, স্কুবা ডাইভিং, ক্লিফ ডাইভিং ও স্কাই ডাইভিং উল্লেখযোগ্য। এসবের জন্য অবশ্য আপনাকে কোস্টারিকা হাকো বিচে যেতে হবে। সেখানে আপনার জন্য অপেক্ষা করছে উল্লিখিত অ্যাডভেঞ্চারের সুযোগগুলো। পাশাপাশি হাকো বিচে এটিভি ট্যুরের মাধ্যমে কোস্টারিকার বিচিত্র প্রকৃতির সঙ্গেও পরিচিত হওয়া যাবে।

সমুদ্রবিলাস পছন্দ করেন? কোস্টারিকার সৈকতগুলো তাহলে আপনার জন্য উপযুক্ত। রোমাঞ্চ ও অ্যাডভেঞ্চার তো টানা ভালো লাগার কথা নয়। ক্লান্তি আসতে পারে। আর এমন মুহূর্তেই আপনার জন্য আদর্শ জায়গা হবে কোস্টারিকার সৈকতগুলো। শারীরিকভাবে অক্ষম ব্যক্তিদের জন্যও কোস্টারিকার প্রায় সব সৈকতে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রয়েছে।

এক হাজার মাইলেরও বেশি উপকূলরেখার দেশটিতে বিশ্বের সেরা কয়েকটি সৈকত রয়েছে। সৈকতে ঘোরার সময় সূর্যালোক আপনার পছন্দ হলে অবশ্য কোস্টারিকা ভ্রমণের ক্ষেত্রে আপনাকে এপ্রিল থেকে নভেম্বর পর্যন্ত সময়টি এড়িয়ে চলতে হবে। কারণ, এ সময়টি কোস্টারিকায় বর্ষাকাল। সমুদ্রে সার্ফিং কার না পছন্দ। আপনি জেনে খুশি হবেন যে, কোস্টারিকা বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় সার্ফিং গন্তব্যগুলোর একটি। এখানে সমুদ্রের জল সারা বছর উষ্ণ থাকে। সার্ফিংয়ের অভিজ্ঞতা না থাকলেও ক্ষতি নেই। আগ্রহ থাকলেই চলবে। কোস্টারিকার প্রতিটি সৈকতে রয়েছে সার্ফিং স্কুল।

কোস্টারিকার খাবারও বেশ উপাদেয়। কফি, কলা ও চকোলেট উৎপাদনকারী দেশটিতে এসবের প্রাচুর্য থাকবে এটাই স্বাভাবিক। সঙ্গে নিজস্ব নানা খাবার তো রয়েছেই। কোস্টারিকা বেড়াতে গেলে কুইপোস যেতে ভুলবেন না। সেখানকার বিভিন্ন চকলেট কারখানা এক বাড়তি আকর্ষণ।

সব শেষে কোস্টারিকা সম্পর্কে কিছু মজাদার তথ্য দিই। কোস্টারিকাতে রয়েছে বিশ্বের মোট জীববৈচিত্র্যের ৫ শতাংশ। কোস্টারিকার উৎপাদিত বিদ্যুতের ৯৯ শতাংশই উৎপাদিত হয় নবায়নযোগ্য পদ্ধতিতে। দেশটির নেই কোনো নিজস্ব সেনাবাহিনী। আর সবচেয়ে দারুণ বিষয় হলো এখানে বছরে ৩৬৫ দিনই একই সময়ে সূর্য ওঠে ও অস্ত যায়। কোস্টারিকায় রয়েছে পাঁচটি সক্রিয় আগ্নেয়গিরি। এগুলো হলো পোয়াস, দি ইরাজু, আরেনাল ভলকানো, রিঙ্কন দে লা ভিজা ও টুরিয়ালবা। বিশ্বের অন্যতম সুখী এ দেশটি থেকে ঘুরে আসতে পারেন চাইলেই।