ন্যাচারাল হিস্ট্রি জাদুঘরে

নিউইয়র্ক শহরের উচ্চ জীবনব্যবস্থার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে অতিরিক্ত কায়িক পরিশ্রম করে মানসিক অবসাদগ্রস্ত কিংবা কাজের চাপে বিনোদনের জন্য একটু সময় বের করতে না পারার মতো লোকের সংখ্যা নিউইয়র্কে অহরহ। পারিবারিক চাপ, কাজের চাপ, পড়াশোনা করে অবকাশ যাপনের জন্য সময় বের করা হয়তো অনেকটাই দুঃসাধ্য। পরিবারের সদস্য, বন্ধুবান্ধব কিংবা একা ঘোরার
জন্য স্বল্প খরচে নিউইয়র্ক শহরে কোথায় ঘোরা যাওয়া যায় এ নিয়েও চিন্তা থাকে অনেকে।
এবার আর চিন্তা না করে ডুব দিয়ে আসতে পারেন জ্ঞানের সমুদ্রে। ঘুরে আসতে পারেন প্রাকৃতিক ইতিহাসের দিক দিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে বড় জাদুঘর আমেরিকান মিউজিয়াম অব ন্যাচারাল হিস্ট্রি। আমেরিকান মিউজিয়াম অব ন্যাচারাল হিস্ট্রি বিশ্বের অন্যতম প্রধান বৈজ্ঞানিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান।
১৮৬৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার
পরে জাদুঘরটি বৈজ্ঞানিক গবেষণা,
শিক্ষা এবং প্রদর্শনীর বিস্তৃত কর্মসূচির মাধ্যমে মানব সংস্কৃতি, প্রাকৃতিক জগৎ ও মহাবিশ্ব সম্পর্কে তথ্য আবিষ্কার, ব্যাখ্যা এবং প্রচার করার জন্য কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
জাদুঘরটি সেন্ট্রাল পার্কের পশ্চিমে ৭৯তম স্ট্রিটে অবস্থিত। জাদুঘরে প্রবেশ মূল্য ২০ টাকা থেকে শুরু। সপ্তাহের প্রতিদিনই সকাল ১০টা থেকে বিকেল পাঁচটা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত জাদুঘর খোলা থাকে। কী নেই এ জাদুঘরে! বিলীন হয়ে যাওয়া পোকামাকড়, সামুদ্রিক প্রাণী, জীবজন্তু থেকে শুরু করে ডাইনোসরেরও দেখা মেলে এ জাদুঘরে।
আমেরিকার ২৬তম প্রেসিডেন্ট থিওডোর রুজভেল্টের বাবার অর্থায়নে জাদুঘরটির স্থাপনা কার্যক্রম শুরু হয়। জাদুঘরের ভেতরে প্রায় ৪৫টি হল রয়েছে। জাদুঘরটি এতই বড় যে পুরোটা দেখতে হলে হয়তো এক দিনেও সম্ভব নয়। জাদুঘরের সংগ্রহে গাছপালা, প্রাণী, জীবাশ্ম, খনিজ, শিলা, উল্কা, মানব অবশেষ এবং মানব সাংস্কৃতিক নিদর্শনগুলোর প্রায় ৩৩ মিলিয়নেরও বেশি নমুনা রয়েছে।
সময় কিংবা টাকার অভাবে যারা বাইরে কোথাও ঘুরতে যেতে পারেন না তাদেরও আক্ষেপ মেটাবে এ জাদুঘর। প্রতিটি প্রাণীর পেছনে তার সংগ্রহের স্থানের ছবি দেওয়া আছে। যা দেখতে অনেকটা বাস্তবের মতোই।
এ ছাড়া জাদুঘরে বিশেষ শোর আয়োজনও করা হয়। জাদুঘরের ভেতরে অবস্থিত প্ল্যানেটারিয়ামে ডার্ক ইউনিভার্স নামে শোতে মহাবিশ্ব সৃষ্টির ইতিহাস দেখানো হয়। বৃদ্ধ থেকে শিশু যে কাউকেই তা আকর্ষণ করতে তা বাধ্য। এ ছাড়া বাটারফ্লাই কনজারভেটরি, অগ্ন্যুৎপাত নিয়েও শো দেখানো হয় যেগুলো খুবই আকর্ষণীয়।
নাগরিক জীবনের কোলাহল, ব্যস্ততা, যানজট থেকে কিছুটা দূরে থাকতে কার না ভালো লাগে! আর নিজের জ্ঞানের পরিধি বাড়াতে চাইলে, অজানাকে জানার ইচ্ছা থাকলে একবার এ জাদুঘরে ঢুঁ মারা যেতেই পারে।