'প্রথমেই লক্ষ্য ঠিক করতে হবে'

>
মেয়ের সঙ্গে মাসুদ করিম খান
মেয়ের সঙ্গে মাসুদ করিম খান
মাসুদ করিম খান। বুয়েটে শিক্ষকতা করেছেন। কাজ করেছেন নকিয়া ও মাইক্রোসফটের মতো প্রতিষ্ঠানে। এখন আমেরিকার পেটেন্ট বিভাগে প্রাইমারি পেটেন্ট পরীক্ষক। প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার পক্ষ থেকে তাঁর সঙ্গে কথা হয়েছে ব্যক্তিগত ও কর্মজীবনসহ নানা বিষয়ে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আসিফ মোক্তাদির

প্রথম আলো: আপনার ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে পাঠকদের কিছু বলুন?
মাসুদ করিম খান: ১৯৭১ সালের এপ্রিল মাসে আমার জন্ম। মুক্তিযুদ্ধে প্রথম প্রতিরোধ শুরু হয় ঢাকার রাজারবাগ পুলিশ লাইন থেকে। এর কাছেই শাহজাহানপুরে মা-বাবা থাকতেন। মা তখন আট মাসের সন্তান সম্ভবা। এ রকম অবস্থাতেই তিন-চার দিন প্রায় পুরোটা পথ পায়ে হেঁটে ঢাকা থেকে কুমিল্লায় গ্রামের বাড়িতে চলে যান তাঁরা। সেখানে এক মাস পর আমার জন্ম হয়। দুই ভাই-বোনের মধ্যে আমি বড়। বাবা ব্যাংকার ছিলেন। বর্তমানে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং ডিরেক্টর।

প্রথম আলো: আপনার বেড়ে ওঠা কোথায়?
মাসুদ করিম খান: যুদ্ধ শেষে মা-বাবা ঢাকায় ফিরে আসেন। আমার বেড়ে ওঠা ঢাকাতেই। ১৯৮২ সাল পর্যন্ত আমরা পুরান ঢাকায় ছিলাম। ষষ্ঠ শ্রেণিতে ওঠার পর মিরপুরে নিজস্ব বাসায় চলে যাই।

প্রথম আলো: আপনার শিক্ষাজীবন সম্পর্কে কিছু বলুন?
মাসুদ করিম খান: নানাবিধ কারণেই আমাকে ছোটবেলায় বিভিন্ন স্কুল পরিবর্তন করতে হয়েছিল। ১৯৮৭ সালে মণিপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করি। ১৯৮৯ সালে নটরডেম কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাস করে বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশলে ভর্তি হই। আমরা ছিলাম কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের চতুর্থ ব্যাচ। বুয়েট থেকে আন্ডার গ্র্যাজুয়েট সম্পন্ন করি ১৯৯৬ সালে। সেশনজটের কারণে পাস করে বের হতে সময় বেশি লেগেছিল।

প্রথম আলো: ছোটবেলা থেকেই কি ইচ্ছা ছিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়ার?
মাসুদ করিম খান: আমার ইচ্ছা ছিল অ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার। সে সময়ে বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ানো হতো না। তাই ইচ্ছা ছিল দেশের বাইরে কোথাও পড়তে যাওয়ার। ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে (আইআইটি) স্কলারশিপসহ পড়ার সুযোগও হয়েছিল। কিন্তু পরিবারের বাঁধায় তখন আর যাওয়া হয়নি। বুয়েটে পড়ার সুযোগ হওয়ায় আমাকেও খুব বেশি মন খারাপ বা চিন্তা করতে হয়নি।

প্রথম আলো: দেশের কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের চতুর্থ ব্যাচ হওয়ায় কি কোনো অসুবিধা হয়েছিল বা পিছিয়ে পড়তে হয়েছিল?
মাসুদ করিম খান: বুয়েটে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং ছিল নতুন বিভাগ। বেশির ভাগ শিক্ষকই ছিলেন অন্য বিভাগের। তবে তাঁদের আন্তরিকতার অভাব ছিল না। যেসব বই পড়ানো হতো তার বেশির ভাগই বাংলাদেশে পাওয়া যেত না। এমনও হয়েছে ক্লাস শুরুর এক মাস পর ভারত, সিঙ্গাপুর থেকে বই আনাতে হয়েছে। আমরা কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়েছিলাম যখন কম্পিউটার বিষয়ক সুবিধাদির অসম্ভব রকম অপ্রাচুর্য ছিল। আমাদের হাতে দুটি পথ খোলা ছিল—১. অপ্রতুল সুবিধাদির বিষয়ে অভিযোগ করে হাত গুটিয়ে বসে থাকা। ২. যেটুকু সুযোগ আছে তার সর্বোচ্চ ব্যবহার করে কিছু একটা করে দেখিয়ে দেওয়া। আমরা দ্বিতীয় পথটিই বেছে নিয়েছিলাম।

প্রথম আলো: বুয়েটে পড়ার সময়ের কোনো স্মৃতি?
মাসুদ করিম খান: প্রথম বর্ষে পড়ার সময় বুয়েটের ক্যাফেতে প্রথম কম্পিউটার মেলার আয়োজন করা হয়। সেখানে দেখতে পাই মাইক্রোসফটের নতুন অপারেটিং সিস্টেম উইন্ডোজ-৩, যাতে সম্পূর্ণ গ্রাফিকস এবং কম্পিউটারের সঙ্গে কিবোর্ডের পাশাপাশি আছে মাউস। তখনই চিন্তা আসে মাউস কাজ করে কীভাবে। আমার চাচাকে দিয়ে কলকাতা থেকে আনানো আরএস-২৩২ প্রটোকলের ওপর লেখা বই পড়ে জানতে পারলাম কীভাবে সিরিয়াল পোর্ট দিয়ে তথ্য আদান-প্রদান করা হয়, মাউস কীভাবে কম্পিউটারের সঙ্গে কথা বলে ইত্যাদি। এরপর তৃতীয় বর্ষে পড়ার সময় সিএসই-৩০০ নামক কোর্সে ডেটা ফ্লো বানানোর ওপর একটা প্রজেক্ট ছিল। তখনকার সময়ে মাউসের দাম ছিল প্রায় তিন হাজার। এত টাকা ব্যয় করে মাউস কেনার সামর্থ্যও ছিল না। তাই চিন্তা করলাম এমনভাবে সিস্টেম ডিজাইন করা যাতে কিবোর্ডের পাশাপাশি মাউসেও ইন্টারফেস দেওয়া যায়। আমি আর এক বন্ধু মিলে মাউসের ডিভাইস ড্রাইভার লিখলাম, সি ল্যাঙ্গুয়েজ দিয়ে কোড লিখলাম-কীভাবে মাউস দিয়ে আমাদের সফটওয়্যারের বিভিন্ন ফিচার কন্ট্রোল করা যাবে। মাউসের ব্যবহারসহ সব ফিচারই সুচারুভাবে কাজ করেছিল।

প্রথম আলো: বুয়েট থেকে পাস করে বের হওয়ার পর কর্মজীবনের গল্প...
মাসুদ করিম খান: ১৯৯৬ সালে বুয়েট থেকে পাস করে বের হই। ওই বছরের জুন মাসে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্স হিসেবে যোগ দিই। এরপর আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে লেকচারার হিসেবে যোগ দিই। ১৯৯৬ সালের নভেম্বরেই বুয়েটে লেকচারার হিসেবে যোগদান করি। এক বছরের মতো বুয়েটে শিক্ষকতা করার পর ১৯৯৭ সালে চাকরি ছেড়ে মাস্টার্স করার জন্য আমেরিকা চলে আসি। বুয়েট থেকে একেবারেই চাকরি ছেড়ে চলে আসি, কারণ দেশে ফিরে যাওয়ার কোনো ইচ্ছা ছিল না। তারপর ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস আরলিংটনে মাস্টার্স শুরু করি।

প্রথম আলো: মাস্টার্স করার জন্য আমেরিকায় আসতে কোনো ঝামেলার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছিল?
মাসুদ করিম খান: সে সময় যোগাযোগ ব্যবস্থা ও ইন্টারনেট এত সহজলভ্য ছিল না। তাই দেশে থেকে এখানকার বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে খোঁজ নেওয়া খুব সহজ কাজ ছিল না। আমাদের একমাত্র ভরসা ছিল সিনিয়রেরা কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে গেছেন তা দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া। যেখানে গেলে সিনিয়রদের সাহায্য পাওয়া যাবে এমন বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন করা। বাংলাদেশ থেকে আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়ে চিঠি লিখে পাঠাতাম। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আবার চিঠির মাধ্যমে উত্তর আসত। এভাবে অনেক সময় চলে যেত। অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে।

প্রথম আলো: আমেরিকায় আসার পর কি এ দেশের সংস্কৃতি ও পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে সমস্যা হয়েছিল?
মাসুদ করিম খান: আমেরিকা ও বাংলাদেশের সংস্কৃতি যে ভিন্ন এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। আমেরিকায় আসার এক সপ্তাহের মাথায় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার পর দেখি এটিএম কার্ড ব্যবহার করতে জানি না। তারপর ব্যাংক ম্যানেজার বাইরে বেরিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন।

প্রথম আলো: মাস্টার্স শেষে আমেরিকায় কীভাবে কর্মজীবন শুরু করেছিলেন?
মাসুদ করিম খান: ১৯৯৯ সালের আগস্টে মাস্টার্স শেষ করি। পারিবারিক ও আর্থিক টানাপোড়েনে মাস্টার্স শেষ করার পর আর পিইএচডি করা হয়নি। মাস্টার্স শেষ করার আগেই বিভিন্ন জায়গা থেকে চাকরির অফার আসতে থাকে। মাস্টার্স শেষ করার এক মাস পর নকিয়ায় সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে যোগদান করি। নকিয়া তখন টেলিকম জগতে অপ্রতিদ্বন্দ্বী। আর আমার মাস্টার্সের থিসিসের টপিক ছিল ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন, পড়াশোনার সঙ্গে চাকরিটা মিলে যায়। ২০০৭ সাল পর্যন্ত নকিয়াতে চাকরি করি। শেষের দিকে এসে বুঝতে পারি নকিয়ার অবস্থা ভালো না। যেকোনো সময় কোম্পানি বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তাই অপেক্ষা না করে ২০০৬ সালের দিকে অন্যত্র চাকরি খোঁজা শুরু করি। বড় বড় সফটওয়্যার কোম্পানিতে ইন্টারভিউ দিই। ইচ্ছা ছিল গুগল বা মাইক্রোসফটে যোগ দেওয়ার। দুই জায়গা থেকেই চাকরির অফার পাই। কিন্তু গুগল নর্দান ক্যালিফোর্নিয়ায় হওয়ায়, সেখানে খরচ বেশি। এ জন্য মাইক্রোসফটে যোগ দিই। মাইক্রোসফটে আউটলুক মোবাইল গ্রুপে কাজ করতাম। একই সময়ে বাজারে আইফোন আসায় এবং গুগল অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম চালু করায় তখন মাইক্রোসফটে তাদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কাজ করা অনেক চ্যালেঞ্জিং ছিল। সিয়াটলে বছরের বেশির ভাগ সময়ই বৃষ্টি হয়। তাই আবহাওয়ার সঙ্গে খাপ খাওয়াতেও সমস্যা হচ্ছিল। ২০১১ সালের শেষের দিকে টেক্সাসে ফিরে আসি। ডালাসে সেইবার সিস্টেমসে যোগদান করি। এখানে কাজ ছিল কীভাবে আকাশপথে কম সময়ে যাতায়াত করা যায় এবং ব্যয় কমানো যায়। প্রায় ১৬ বছর সফটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করার পর সিদ্ধান্ত নিলাম নতুন কিছু করব। চাকরির নিশ্চয়তার জন্য ঠিক করলাম এবার সরকারি চাকরির চেষ্টা করব। ২০১৫ সালে পেটেন্ট পরীক্ষক (ইউএস পেটেন্ট অ্যান্ড ট্রেড মার্ক অফিস) হিসেবে চাকরি শুরু করি। পরীক্ষক হওয়ার জন্য টেকনিক্যাল জ্ঞান যেমন দরকার তেমনি বিভিন্ন আইন সম্পর্কেও জানতে হয়। তাই শুরু করলাম একেবারেই শূন্য থেকে। ধাপে ধাপে পদোন্নতি পেয়ে বর্তমানে প্রাইমারি পরীক্ষক হয়েছি। ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) যেভাবে যাচাই-বাছাই করে বিভিন্ন ফুড ও ওষুধ বাজারজাতকরণের অনুমতি দেয়, আমাদের কাজও অনেকটা তেমন। আমাদের প্রধান কাজ হচ্ছে পেটেন্ট আবেদন পড়ে দেখা আবিষ্কারটির মধ্যে নতুনত্ব আছে কিনা। পেটেন্ট বিষয়ক আইনের আওতায় আবেদনটি গ্রহণযোগ্য কিনা। সব শর্ত পূরণ হলে আবেদনটি গৃহীত হয় অর্থাৎ আবিষ্কারককে নতুন পেটেন্ট দেওয়া হয়।

প্রথম আলো: গুগল, মাইক্রোসফটের মতো প্রতিষ্ঠানে কাজ করা যাদের স্বপ্ন, তাঁদের জন্য কোনো পরামর্শ...
মাসুদ করিম খান: এ রকম প্রতিষ্ঠানে চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে কঠিন ইন্টারভিউ প্রসেসের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। তাই মানসিকভাবে শক্ত থাকা জরুরি। নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলি, মাইক্রোসফটে ইন্টারভিউ পুরোপুরি একাডেমিক। যত বড় চাকরি করে আসেন না কেন, সফটওয়্যার ডেভেলপার হিসেবে চাকরি পেতে গেলে একাডেমিক ইন্টারভিউর মধ্যে দিয়েই যেতে হবে। প্রায় পাঁচটি ধাপে মাইক্রোসফটে আমার ইন্টারভিউ নেওয়া হয়। প্রতি ধাপেই ছিল প্রোগ্রামিং আর লজিক্যাল প্রবলেমের মারপ্যাঁচ। তাই ইন্টারভিউ দেওয়ার সময় না ঘাবড়ে যথাসম্ভব মাথা ঠান্ডা রাখা উচিত।

প্রথম আলো: কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশলে ভালো করার জন্য তরুণদের জন্য পরামর্শ...
মাসুদ করিম খান: প্রথমেই হচ্ছে নিজের লক্ষ্য ঠিক করা। সবাই কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়ছে এবং চাকরির বাজার ভালো এ জন্য হুজুগে কান না দিয়ে নিজের কি পড়তে ভালো লাগে তা বুঝে সিদ্ধান্ত নেওয়া। অনেকেই আছে কয়েক বছর পড়ার পরেও বলে যে, কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং ভালো লাগছে না। প্রোগ্রামিং, গণিত, অ্যানালিটিক্যাল সমস্যা সমাধান এসব বিষয়ে দক্ষ হতে হয়। অনেকের ধারণা তিন মাস প্রোগ্রামিং শিখলেই কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হওয়া যায়, ব্যাপারটা ঠিক এ রকম না। যদি এসব ভালো না লাগে তাহলে এ বিষয়ে না পড়ারই পরামর্শ দিই। এ ছাড়া প্রতিনিয়ত এ সেক্টরে চাহিদা পরিবর্তন হচ্ছে। যেমন—আমাদের সময় ছিল টেলিকমিউনিকেশনের চাহিদা। এখন এ জায়গা দখল করেছে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, নিউরাল নেটওয়ার্কের মতো বিষয়। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের মাধ্যমে ইতিমধ্যেই ফেস রিকগনিশন, ভয়েস রিকগনিশন ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। তাই মাথায় রাখতে হবে কয়েক বছর পরে কিসের চাহিদা থাকবে এবং সে অনুযায়ী স্কিল ডেভেলপ করা।

প্রথম আলো: কম্পিউটার বিজ্ঞানে না পড়েও কোনো বিশেষ দক্ষতা অর্জন করে কি চাকরি পাওয়া যায়…
মাসুদ করিম খান: হ্যাঁ, এ রকম সুযোগ রয়েছে। বেসিক প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ যেমন—সি, সি++, পাইথন, জাভা শিখে কাজ পাওয়া যেতে পারে। মাইক্রোসফট অফিস সম্পর্কে ভালো দক্ষতা থাকলে কাজ পাওয়া সম্ভব। এ ছাড়া আমেরিকায় অনেক বাংলাদেশি, ভারতীয় প্রতিষ্ঠান রয়েছে যেখানে কম্পিউটারের ওপর প্রশিক্ষণ দিয়ে চাকরির জন্য উপযুক্ত করে তোলে। বিভিন্ন সফটওয়্যার টুল ব্যবহার করা শেখায়। এসব প্রতিষ্ঠানই আবার চাকরির জন্য আবেদন এবং চাকরির ব্যবস্থা করে দেওয়ার চেষ্টা করে।

প্রথম আলো: আমেরিকায় যারা কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশলে পড়ছেন তাঁদের উদ্দেশ্যে কিছু বলুন…
মাসুদ করিম খান: আগেই বলেছি লক্ষ্য ঠিক করা। গবেষক অথবা শিক্ষক হওয়ার ইচ্ছা না থাকলে পিএইচডি না করে মাস্টার্স পর্যন্ত পড়া যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে বেশ কয়েক বছর আগ থেকে চাকরি শুরু করার সুযোগ থাকে। আমেরিকায় ইন্টার্নশিপ করার অনেক সুযোগ রয়েছে। তাই যেকোনো ফিল্ডের শিক্ষার্থীই হোক না কেন বসে না থেকে এসব ইন্টার্নশিপ, ভলান্টিয়ারিং করা। আমার বাবার দেওয়া দুটি মূল্যবান উপদেশ শেয়ার করি। এক. যে কাজ তুমি আজকে করে ফেলতে পার, সেটা কালকের জন্য ফেলে রেখো না। দুই. সব সময় একটা লক্ষ্যের দিকে এগোবে, চলার পথে যত বাধা আসুক না কেন, লক্ষ্য থেকে যেন চোখ না সরে। সততার সঙ্গে এ দুটি কাজ করতে পারলে সাফল্য আসবেই।

প্রথম আলো: সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
মাসুদ করিম খান: আপনাকেও ধন্যবাদ।