কনস্যুলেট জেনারেলের উদ্যোগে মাতৃভাষা দিবস উদ্যাপন

নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলের উদ্যোগে কুইন্স পাবলিক লাইব্রেরির সহযোগিতায় ২১ ফেব্রুয়ারি যথাযথ মর্যাদায় ‘মহান শহীদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ উদ্‌যাপন করা হয়েছে। কনস্যুলেটের বিশেষ উদ্যোগে দ্বিতীয়বারের মতো আমেরিকার মূলধারার সংস্থা কুইন্স পাবলিক লাইব্রেরিতে এই অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। এবারের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস কুইন্স লাইব্রেরির সঙ্গে আয়োজনের উদ্দেশ্য ছিল আমেরিকার মূলধারার সংস্কৃতির সঙ্গে বাংলাদেশি সংস্কৃতির মেলবন্ধন স্থাপন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে দিবসটির ওপরে প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন ও শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। স্বাগত বক্তব্যে নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুননেসা ভাষা শহীদদের সম্মান জানিয়ে বলেন, দিবসটি সারা বিশ্বে ভাষার বৈচিত্র্য উদ্‌যাপনের একটি প্রেক্ষাপট তৈরি করেছে, যার নেতৃত্ব দিচ্ছে বাংলাদেশ। এ প্রসঙ্গে তিনি মহান ভাষা আন্দোলনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বের কথা তুলে ধরেন।
কনসাল জেনারেলের বক্তব্যে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপট, ১৯৪৮ সাল হতে ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্ব এবং কীভাবে ভাষা আন্দোলনের পথ ধরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে তা তুলে ধরার পাশাপাশি ১৯৭৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে তাঁর প্রথম বাংলায় ভাষণ ও এরই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি বছর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে বাংলায় ভাষণ দেওয়ার কথা তুলে ধরেন। ১৯৯৯ সালে ইউনেসকো আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ২১ ফেব্রুয়ারিকে স্বীকৃতদানের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বের কথা উল্লেখ করেন কনসাল জেনারেল।
নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের সিনেটর জন ল্যু, অ্যাসেম্বলি সদস্য ক্যাটালিনা ক্রুজ ও রন কিম, পররাষ্ট্র দপ্তরের উত্তরাঞ্চলের পরিচালক ব্রুক নোবেল এবং কুইন্স পাবলিক লাইব্রেরির প্রেসিডেন্ট ও সিইও ডেনিস এম ওয়ালকট বক্তৃতা করেন করেন। আমেরিকার মূলধারার সংস্কৃতির সঙ্গে বাংলাদেশি সংস্কৃতির মেলবন্ধন স্থাপনের জন্য কনস্যুলেটের এই উদ্যোগকে তিনি অভিনন্দন জানান।
কনস্যুলেটের প্রচেষ্টায় নিউইয়র্কের মূলধারার অনুষ্ঠান ‘কালচার ব্রিজ’–এ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদ্‌যাপন সম্পৃক্ত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে আয়োজিত বহু ভাষা ও সংস্কৃতির সম্মিলনে ওই অনুষ্ঠানে বাংলাভাষা ছাড়াও ভুটানিজ, থাই, কসোভান এবং কলাম্বিয়ান ভাষায় স্ব স্ব দেশের শিল্পীরা তাদের দেশীয় সংস্কৃতিকে তুলে ধরে।
কলাম্বিয়া, কসোভো, ভুটান, সুইডেন ও থাইল্যান্ডের কনসাল জেনারেলসহ ভারত ও জাপান কনস্যুলেট জেনারেলের প্রতিনিধি, কূটনীতিক, মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এ অনুষ্ঠানে যোগ দেন ও আয়োজনের ভূয়সী প্রশংসা করেন। অনুষ্ঠানটি আমেরিকার মূলধারার সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ায় কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এটিকে একটি বিশেষ প্রাপ্তি বলে উল্লেখ করেন।