বাফেলোয় সন্ত্রাসী হামলা বৃদ্ধি কমিউনিটিতে উদ্বেগ

যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় এক দশক ধরে আসা বাংলাদেশি অভিবাসীদের অনেকেই প্রথম দিকে মাথা গোঁজার ঠাঁই হিসেবে বেছে নেয় নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের বাফেলো নগরকে। নগর হলেও নাগরিক কোলাহল থেকে অনেকটা মুক্ত, শান্ত এই জনপদ। জনসংখ্যার হিসেবে নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের দ্বিতীয় বৃহৎ নগর হচ্ছে বাফেলো।
নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের উত্তর–পশ্চিম সীমান্তে নায়াগ্রা জলপ্রপাত। এর অদূরে এই বাফেলো নগরের অবস্থান। কানাডার সঙ্গে আমেরিকার সীমান্তও সেখানেই। কানাডার দিক থেকে সে দেশটির অন্যতম বড় শহর টরন্টো থেকে নায়াগ্রা নগর তথা বাফেলো দেড় থেকে দুই ঘণ্টার ড্রাইভিং দূরত্বে।

বাংলাদেশ থেকে আসা নতুন অভিবাসীদের কাছে আবাসন ব্যয় ও অর্থনৈতিকভাবে সাশ্রয়ী বলে পরিচিত এই নগর। তবে ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই) প্রকাশিত সাম্প্রতিক কিছু পরিসংখ্যান এখানকার কমিউনিটিতে বেশ উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।
এফবিআই প্রতি বছরই আমেরিকাজুড়ে ঘটে যাওয়া অপরাধের বিভিন্ন পরিসংখ্যান বের করে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় এফবিআই নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের বিভিন্ন শহরে ঘটে যাওয়া অপরাধের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে। এফবিআই প্রকাশিত এই তালিকায় নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের ২০২০ সালের বিপজ্জনক শহরের তালিকায় প্রথম স্থানে উঠে এসেছে বাফেলোর নাম।
২০১৯ সালে এফবিআই থেকে প্রকাশিত একই তালিকায় বাফেলো দ্বিতীয় স্থানে ছিল। প্রায় ২ লাখ ৫৮ হাজার বাসিন্দা নিয়ে অনেকটা শান্তশিষ্ট এই শহর অপরাধপ্রবণতার দিক দিয়ে ২০১৯ সালে নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের অন্যান্য শহরের চেয়ে এগিয়ে ছিল। প্রতি এক লাখ বাসিন্দার মধ্যে ঘটে যাওয়া অপরাধের সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৪২টি। তালিকার দ্বিতীয় স্থানে আছে নায়াগ্রা জলপ্রপাত।
বাঙালি অভিবাসীরা যেসব শহরে স্থানান্তরিত হচ্ছে, কয়েক বছর ধরেই বাফেলো তার মধ্যে বেশ জনপ্রিয় নগর ছিল। সম্প্রতি বাফেলোর বেশ কিছু বাংলাদেশি বাসিন্দাও দুর্বৃত্তের হামলার শিকার হন। এ নিয়ে অনেকেই দুশ্চিন্তায় পড়ে যান। বাংলাদেশি কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ জরুরি বৈঠক, সভা করে কীভাবে নিরাপত্তা জোরদার করা যায়—তা নিয়ে আলোচনা করেন। পুলিশসহ নগরের বিভিন্ন কর্মকর্তার সঙ্গে বাংলাদেশিদের নিরাপত্তা জোরদার করার ব্যাপারে আলাপ করেন।
পুলিশ ও নগর কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশি কমিউনিটির সবাইকে বাসাবাড়ি, অফিসে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের পরামর্শ দিয়েছে। তা ছাড়া নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য পেট্রল পুলিশে যোগদানের আহ্বান জানানো হয়েছে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলে কমিউনিটি নেতা ও পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।