রিপেয়ারের নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান 'জয় টেক'

নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে রিপেয়ার জগতের অনন্য প্রতিষ্ঠান ‘জয় টেক’। আর এ রিপেয়ার করেন নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের খুব পরিচিতি মুখ শ্যামল নাথ। কঠোর পরিশ্রমী এবং অসাধারণ উদীয়মান এক তরুণ। মোবাইল ও কম্পিউটারের কোন বিড়ম্বনা দেখা গেলেই সবাই ছুটে যায় ‘জয় টেকের’ শ্যামলের কাছে। সমাধান মেলে খুব দ্রুত। সামান্য পয়সা খরচ করলেই দামি মোবাইল, কম্পিউটার আবার চালু হয়ে যায়। এ সুযোগ আগে খুব একটা ছিল না এখানে।
মোবাইল বা কম্পিউটারে কোন প্রকারের যান্ত্রিক অসুবিধা দেখা দিলে তা আবর্জনায় ফেলা দেওয়া ছাড়া সারিয়ে তোলার জন্য হাতে গোনা দু–একটি প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি থাকলেও তারা রিপেয়ার ব্যয় ধরতেন কাস্টমারের সাধ্যের বাইরে। সামর্থ্য থাক বা না থাক, কিনতে হতো নতুন করে। তাই মোবাইল, কম্পিউটার নষ্ট হলে এখন আর মন খারাপ না করে যে কেউ যেতে পারেন জ্যাকসন হাইটসে, ৭৩ স্ট্রিটের খাবার বাড়ি রেস্টুরেন্টের গলিতে। সেখানে মেলে শ্যামলের সদা হাসিমুখ।
অথচ আমেরিকার বেস্ট বাই বা অন্য কোন বিক্রয় এবং রিপেয়ার সেন্টারে গেলে চার গুন দাম হাঁকা হয়, যাতে কম্পিউটার কেনার চেয়ে রিপেয়ারের দাম বেশি পড়ে। শ্যামল আমেরিকায় পাড়ি জমান ২০১১ সালে। এখানে জীবন শুরু হয় অন্য দশজনের মতোই। তবে তিনি ভাবতে থাকেন নিজের জানা পুরোনো কাজ। তাই যন্ত্র আর যান্ত্রিক গোলযোগ থেকে মানুষকে মুক্ত করার সুযোগটি কাজে লাগান। ২০০২ সালে বাংলাদেশে একই পেশায় নিযুক্ত ছিলেন। কিন্তু নিউইয়র্কে শুরুটা হতে পারে কীভাবে? পরিচয় হলো জিয়া আনসারির সঙ্গে। জ্যাকসন হাইটসের বাংলাদেশ প্লাজায় তার রিপেয়ার শপ ছিল। আত্মবিশ্বাসী শ্যামলের কাজ মিলতে অসুবিধা হয় না খুব একটা। বেশি দিন নয়। মাত্র দেড় বছর কাজ করেন। এর মধ্যে শ্যামল সবার কাছে হয়ে ওঠেন প্রিয়।
অকেজো মোবাইল, কম্পিউটার দ্রুত সচল করে শ্যামল আস্থা অর্জন করেন মানুষের, বিশেষ করে বাংলাদেশি কমিউনিটিতে। তিনি জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু করেন ২০১৩ সালে। খাবার বাড়ির পাশেই গড়ে তোলেন নিজের মালিকানায় রিপেয়ারশপ ‘জয় টেক’ নামের ছোট্ট একটি প্রতিষ্ঠান। অল্পদিনে তাঁর রিপেয়ার সেন্টারের সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। শুধু নিউইয়র্ক নয়, আশপাশের নগর থেকেও দলে দলে লোক আসে শ্যামলের দোকানে। অল্পদামে সারিয়ে দেন গ্রাহকদের নিত্যদিনের প্রয়োজনীয় দুই ইলেকট্রনিক পণ্য মোবাইল আর কম্পিউটার।
কিন্তু এত অল্প সময়ে মানুষের আস্থা অর্জনের পেছনে কি রহস্য রয়েছে? জানতে চাইলে শ্যামল জবাব দিলেন, প্রথমই হচ্ছে তাঁর নিজের সঙ্গে কমিটমেন্ট। তারপর হচ্ছে মেরামত ব্যয় কাস্টমারের নাগালের ভেতরে রেখে ধার্য করা।
টেকনিশিয়ান পেশা প্রসঙ্গে ‘জয় টেকের’ সিইও শ্যামল বলেন, ২০ বছর ধরে আমি রিপেয়ার পেশায় যুক্ত। আমেরিকায় এসে আমি আর অন্য কোন চাকরির চেষ্টা করিনি। নোয়াখালীর মাইজদীতে ‘শ্যামল ইলেকট্রনিকস’ আমার অভিজ্ঞতার হাতেখড়ি। শ্যামল আরও বলেন, আমেরিকায় এসেও সব সময় বাংলাদেশিদের কাছে পাব এবং নিজের পছন্দের পেশার কাজ করব—এটিই প্রত্যাশা ছিল।