কর্মস্থলে যৌন হয়রানির প্রতিবাদে নিউইয়র্কে বাংলাদেশি নারীদের বিক্ষোভ

নারী কর্মীদের হাতে সোনা চান্দি জুয়েলার্সের মালিক দিলীপ মালানীর বিরুদ্ধে প্ল্যাকার্ড
নারী কর্মীদের হাতে সোনা চান্দি জুয়েলার্সের মালিক দিলীপ মালানীর বিরুদ্ধে প্ল্যাকার্ড

নিউইয়র্কের পরিচিত সোনা চান্দি জুয়েলার্সের মালিকের বিরুদ্ধে কর্মস্থলে যৌন হয়রানিসহ নানা অভিযোগ এনে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

প্রতিষ্ঠানটির মালিক দিলীপ মালানীর বিরুদ্ধে নারী কর্মীদের শারীরিক, মানসিক ও যৌন হয়রানি, অশালীন ব্যবহার এবং ন্যায্য বেতন না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এসবের প্রতিবাদে বাংলাদেশিসহ সাউথ এশীয় অভিবাসী নারী কর্মীরা বিক্ষোভ করেন।

৮ মার্চ দুপুরে জ্যাকসন হাইটসের ৭৪ স্ট্রিট সোনা চান্দি জুয়েলার্সের সামনে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী বিক্ষোভ মিছিলটি ৩৭ অ্যাভিনিউ হয়ে ডাইভার্সিটি প্লাজায় গিয়ে শেষ হয়।

বিক্ষোভ সমাবেশে ভুক্তভোগী বাংলাদেশি এক নারী কর্মী বলেন, ‘আমার ওয়ার্ক পারমিট না থাকায় ঘণ্টায় মাত্র ৩ থেকে ৪ ডলার বেতন দেওয়া হয়। সপ্তাহে সাত দিনই ১২ ঘণ্টা করে কাজ করতে হয়। চিকিৎসা ও থেরাপির জন্য সপ্তাহে মাত্র এক ঘণ্টা ছুটি চেয়েছি, মালিক সেটাও দেননি। নিচতলা থেকে তিনতলা পর্যন্ত প্রতিদিন অনেক ভারী বাক্স ওঠানামা করতে হয়।’ সমাবেশে তিনি অভিযোগ করেন, ‘মেয়েদের শরীর নিয়ে অকথ্য ও অশ্লীল ভাষায় কথা বলেন মালিক। সোনা চান্দির মালিক দিলীপ মালানী তাঁর অফিসে নিয়ে যৌন হয়রানি করতে চান। শুধু তা–ই নয়, তাঁর বাসায় গিয়ে গৃহকর্মীর কাজ করাতেও বাধ্য করেন। এর জন্য কোনো অতিরিক্ত বেতন দেওয়া হয় না। প্রতিবাদ করলে চলে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। নতুন আসা মেয়েদের তিনি ভয়ভীতি দেখিয়ে কাজ করাতে বাধ্য করেন। আমার মতো এমন অনেক মেয়েরা দিলীপ মালানীর শারীরিক, মানসিক ও যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছে প্রতিদিন। কাজ, সম্মান ও হয়রানির ভয়ে কেউ মুখ খোলে না।’

নারী কর্মীদের হাতে সোনা চান্দি জুয়েলার্সের মালিক দিলীপ মালানীর বিরুদ্ধে প্ল্যাকার্ড
নারী কর্মীদের হাতে সোনা চান্দি জুয়েলার্সের মালিক দিলীপ মালানীর বিরুদ্ধে প্ল্যাকার্ড

ড্রামের অন্যতম পরিচালক কাজী ফৌজিয়া বলেন, নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের ভারতীয়, পাকিস্তানি, বাংলাদেশিসহ কিছু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট করে অভিবাসী ও যাঁদের কাগজপত্র নেই, সেসব নারীকে নামমাত্র বেতন দিয়ে বিভিন্ন হয়রানি করে আসছেন দীর্ঘদিন থেকে। কেউ প্রতিবাদ করলে তাড়িয়ে দেন। এরপর অন্য কোনো মালিক তাঁদের আর কাজ দেন না। এমনকি বাংলাদেশি দোকান মালিকেরাও এই সিন্ডিকেটে জড়িত বলে তিনি অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, নারী দিবসে তাঁরা বাধ্য হয়েছেন প্রতিবাদে রাস্তায় নামতে। ন্যায্য বেতন ও অধিকার আদায়ের এই আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।