সাদাকায়নে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ

কোয়ান্টাম মেডিটেশন সোসাইটি, ইউএসএর নিয়মিত সাপ্তাহিক সাদাকায়ন প্রোগ্রাম অনলাইনে অনুষ্ঠিত হয় ৪ এপ্রিল নিউইয়র্ক সময় সকাল ১০টায়। করোনা পরিস্থিতির কারণে নিউইয়র্ক শহর লকডাউন থাকায় মার্চ মাসের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে সাদাকায়ন প্রোগ্রাম অনলাইনে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
কোয়ান্টাম মেডিটেশন সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক ডা. মো. আবদুল্লাহ ইউসুফের সঞ্চালনায় আলোচক হিসেবে লাইভ স্ট্রিমিংয়ের মাধ্যমে সরাসরি অংশ নেন বেসরকারি ইস্ট ওয়েস্ট ও ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাবেক শিক্ষক, বর্তমানে কানাডার টরন্টো ইউনিভার্সিটিতে উচ্চতর গবেষণারত সুমন ধর। আলোচনার বিষয় ছিল: ‘বর্তমান ও বাস্তবতা: আমাদের করণীয়’।
মানুষের ওপর করোনা পরিস্থিতির প্রভাব প্রসঙ্গে আলোচক বলেন, বিশ্বের প্রায় সব কটি দেশেই বর্তমানে কম-বেশি করোনোভাইরাসজনিত পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এর প্রতিষেধক এখনো বের হয়নি বলে মানুষ উৎকণ্ঠিত। তার ওপর ছড়িয়ে পড়া গুজব, ফেসবুক, ইউটিউব ইত্যাদি যোগাযোগ মাধ্যমে নানা অপপ্রচারের ডালপালা গজাচ্ছে। ফলে জনমনে সৃষ্টি হচ্ছে আতঙ্ক। আলোচক এসব না দেখতে ও কারও সঙ্গে শেয়ার না করতে অনুরোধ করেন। কারণ, অহেতুক দুশ্চিন্তা, ভয়, নেতিবাচক কথা বা ভাবের আদান-প্রদান ও ঘণ্টার পর ঘণ্টা ভার্চুয়াল জগতে থাকলে এটি আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে দুর্বল করে দেয়। আমরা আরও ভয় ও আতঙ্কে থাকি এবং অসুস্থ হয়ে পড়ি।
বাস্তবতা হচ্ছে দুনিয়ায় প্রতিদিন রোগ, দুর্ঘটনাসহ নানা কারণে যারা মারা যান ১ লাখ ৫৩ হাজার। প্রতিদিন রোগ-শোকে এসব মৃত্যুকে আমরা কিন্তু খুব স্বাভাবিকভাবে নিচ্ছি। প্রতিদিন দেড় লাখ মানুষ মারা যাচ্ছেন, সেটা আমাদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে না! অথচ প্রতিদিন গড়ে সাড়ে পাঁচ শ মানুষের মৃত্যু আতঙ্ক সৃষ্টি করছে! কেন? যাদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে, তাদের ধারণা ‘করোনা’ পেলেই হলো! সঙ্গে সঙ্গে খেয়ে ফেলবে। মানে নির্ঘাত মৃত্যু!!! আসলে ব্যাপারটি মোটেও সেরকম নয়। বাস্তবে আক্রান্ত অনেকে সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরে গেছেন। অনেকে হোম কোয়ারেন্টিনে থেকে নিয়ম মেনে চলে সুস্থ হচ্ছেন। আর আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যুর হার শতকরা ৫ ভাগ মাত্র। তাও যারা বয়স্ক এবং যাদের ‘ফেটাল ডিজিজ’ যেমন হার্ট কিংবা কিডনিজনিত রোগ, ডায়াবেটিস ইত্যাদি ছিল তারাই বেশি মারা যাচ্ছেন। অর্থাৎ তাদের ইমিউন সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল।
বক্তা বলেন, সুতরাং আতঙ্কিত না হয়ে নিজেদের সচেতন হতে হবে। চেষ্টা করতে হবে ইমিউন সিস্টেম বাড়াতে। হাঁচি-কাশির শিষ্টাচার মেনে চলতে হবে। সুস্থ খাদ্যাভ্যাস ও জীবনাচারে অভ্যস্ত হতে হবে। মেডিটেশন করতে হবে। কারণ, মেডিটেশন মনটাকে ক্লিন করে আর মস্তিষ্ককে ঠান্ডা রাখে।
বক্তা আরও বলেন, আলোচক আরও গুরুত্ব দেন ধৈর্য্য ধরার ওপর। তবে তার মানে চুপচাপ বসে থাকা নয়। আমাদের অ্যাকটিভ থাকতে হবে, ঘরে বসেও নিজের কাজে আন্তরিক ও নিয়মিত হতে হবে। টিভি, ইন্টারনেটে সময় নষ্ট না করে যার যার কাজে মনোযোগী থাকতে হবে। নিজেকে সুস্থ রাখতে সচেষ্ট থাকতে ও পরিবারে যারা বয়োজ্যেষ্ঠ আছেন, তার প্রতি আন্তরিকভাবে খেয়াল রাখতে হবে।
অনুষ্ঠানে আরও সম্প্রচার করা হয় কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের প্রধান শহীদ আল বুখারির বিশেষ অডিও স্পিচ ‘করোনা প্রতিরোধে করণীয়-১’। সমাপনী বক্তব্যে ডা. মো. আবদুল্লাহ ইউসুফ সবাইকে আতঙ্কিত না হয়ে প্রোঅ্যাকটিভ থাকার আহ্বান জানান। পরিবারের সদস্য ও প্রতিবেশীরা যেন সংক্রমিত না হন, সে বিষয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন। কারণ ব্যক্তির সচেতনতাই পারে নিজ, পরিবার ও সর্বোপরি দেশের মানুষকে সুরক্ষিত করতে। সবশেষে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের বিশেষ মেডিটেশন ‘প্রার্থনার মেডিটেশনে’ সারা বিশ্বের মানুষের কল্যাণ কামনা করা হয়।
ঘরে বসে আগামী ১১ এপ্রিল সকাল ১০টায় সাদাকায়নে অনলাইনে অংশ নিতে ভিজিট করুন qms-usa.org/sadakayon. অথবা টেলিফোনে যোগাযোগ করতে পারেন এই নম্বরে: ৫১৬ ৭৬১ ১৬১৪।