মরদেহ স্তূপ করে নোংরা ট্রাকে পরিবহনের অভিযোগ

ম্যানহাটনের কেন্দ্রীয় মর্গের সামনে মরদেহবাহী ফ্রিজিং ট্রাক। ছবি: প্রথম আলো
ম্যানহাটনের কেন্দ্রীয় মর্গের সামনে মরদেহবাহী ফ্রিজিং ট্রাক। ছবি: প্রথম আলো

নিউইয়র্কে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে অসংখ্য মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এসব মৃতদেহ নোংরা ফ্রিজার ট্রাকে করে পরিবহন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। নগরীর একজন আইনপ্রণেতা এই অভিযোগ করে বলেছেন, মৃত ব্যক্তিদের প্রতি এ বড়ই অসম্মানের।

নিউইয়র্কের হাসপাতালে করোনায় আক্রান্ত রোগীদের মৃত্যুর পর কেন্দ্রীয় মর্গে নিয়ে আসা হয়। ম্যানহাটনের ফার্স্ট অ্যাভিনিউ ও ৩০ স্ট্রিট লাগোয়া বিশাল এলাকায় সবুজ বেস্টনি দিয়ে ঢাকা এলাকাটি কেন্দ্রীয় মর্গ। এখানে একের পর এক ট্রাক আসা এখনো অব্যাহত আছে। স্বাভাবিক সময়ে দিনে ১০ থেকে ২০টি মরদেহ সামাল দিয়েছে কেন্দ্রীয় মর্গ। কিন্তু মধ্য মার্চ থেকে হঠাৎ করে পরিস্থিতি বদলে যায়। হাসপাতালের অপেক্ষমাণ মর্গ থেকে মরদেহ নিয়ে আসা শুরু হয় ফ্রিজার ট্রাকে করে। এ সংখ্যা দিনে ৭০০ অতিক্রম করেছে দিনের পর দিন। ১৮ এপ্রিল নগরীর মৃত্যুর তালিকায় ২৪ ঘণ্টায় ৫৪০ জনের নাম যুক্ত হয়েছে । এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে নিউইয়র্ক রাজ্যে ১২ হাজার ৭৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে। রাজ্যের ৫০৪টি হাসপাতালে এবং ৩৬টি নার্সিং হোমে এ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। অধিকাংশের মৃত্যু হয়েছে নগরীর পাঁচটি বরোতে।

অভিযোগ উঠেছে, মৃতদেহ পরিবহনে কোনো পেশাদারত্ব ছিল না । ট্রাকগুলো নোংরা। এই নোংরা ট্রাকে মরদেহ একটার ওপর আরেকটা স্তূপ করে পরিবহন করা হচ্ছে। মৃত লোকজনের স্বজন এবং ফিউনারেল হাউসের কর্মীদের বরাত দিয়ে ১৮ এপ্রিল নিউইয়র্ক পোস্ট এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

সিটি কাউন্সিলম্যান রবার্ট হোলডেন বলেছেন, এ এক দুঃস্বপ্ন। মৃত ব্যক্তিদের প্রতি এ আচরণ চরম অশ্রদ্ধার বলে তিনি উল্লেখ করেন।

মরদেহ পরিবহনের জন্য দক্ষ লোকের প্রয়োজন হয়। ফ্রিজিং ট্রাকগুলো এ সংকটের সময়ে মরদেহ পরিবহনের কাজে দক্ষ লোক পায়নি। মর্টন ফিউনারেল হোমের পরিচালক ইউলিয়াম রবার্ট বলেছেন, যেন এক যুদ্ধাবস্থা চলছে। কোথাও কারও কোনো কাণ্ডজ্ঞান নেই। মরদেহ অনেক সময় টেনেহিঁচড়ে ট্রাক থেকে নামানো হচ্ছে। হাসপাতাল থেকে নিয়ে আসা এসব মরদেহ কখনো সেলফে একটার ওপর আরেকটা করে রাখা হচ্ছে।

ফিউনারেল ডিরেক্টর রবার্ট বলেন, ৩৫ বছরের পেশাগত জীবনে এমন কখনো দেখেননি। নিজে নাইন–ইলেভেন দেখেছেন, এইডস ও ইবোলা মহামারি দেখেছেন। এমন নিয়ন্ত্রণহীন অবস্থা কখনো দেখেননি। তিনি আরও বলেন, করোনায় মারা যাওয়া এই লোকজন তো কারও বাবা, কারও মা। এমন ঘটনা কেউ চায় না, কখনো চায় না।