এ মাস অটিজম সচেতনতার

এপ্রিল অটিজম সচেতনতার মাস। বার্ষিক বিশ্ব অটিজম অ্যাওয়ারনেস দিবস ছিল ২ এপ্রিল। অটিজম আক্রান্ত শিশু, ব্যক্তি এবং তােদর ঘিনষ্ঠজনদের স্বীকৃতি হিসেবে দিবসিট পালন করা হয়। এই দিনে আন্তর্জাতিক পরিসরে অটিজম সংশ্লিষ্ট সবাই ‘লাইট ইট আপ ব্লু’-তে একত্রিত হয়। পুরো এপ্রিল মাস ধরে চলতে থাকে নানা অটিজম-বান্ধব ইভেন্ট ও এ-সংক্রান্ত শিক্ষামূলক কার্যক্রম, যার লক্ষ্য হলো অটিজমে আক্রান্ত শিশু ও ব্যক্তিদের বোঝা ও বিশ্বজুড়ে তাদের গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধিতে কাজ করা।

শিক্ষকতার সঙ্গে যুক্ত থাকায় অটিজম অ্যাওয়ারনেস দিবসটি খুবই গুরুত্বের সঙ্গে পালন করি আমরা। প্রতি বছর এই এপ্রিল মাসের নির্দিষ্ট দিনটিতে ‘লাইট ইট আপ ব্লু’-তে জয়েন করার পাশাপাশি মাসজুড়েই আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিভিন্ন কার্যক্রমে জড়িত থাকি। স্কুলের প্রশাসন থেকে আমন্ত্রণ জানানো হয় অভিভাবকদের। বিশেষ করে পেরেন্ট কো-অর্ডিনেটররা এই দায়িত্বগুলো পালন করেন। আমরা শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের নিয়ে একসঙ্গে দল বেঁধে পুরো স্কুলের কয়েকটি ব্লক হাঁটি। হাতে থাকে বর্গাকৃতির বোর্ড, যাতে থাকে শিক্ষার্থীদের ছবির পাশাপাশি বিভিন্ন শৈল্পিক চিত্র। আমাদের গায়ে থাকে নীল টি-শার্ট এবং তাতে থাকে নানা রঙে আঁকা পাজল শেপ। এই মাসটিতে কমিউনিটিতে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের নিয়ে হাঁটার সময় আমরা খুব গর্ববোধ করি। কারণ, আমরা আমাদের অটিস্টিক শিশুদের পর্যাপ্ত ভালোবাসা দিতে পেরেছি, আর তারাও হাসিখুশি আছে। অনেক পথচারী বা গাড়িতে করে এদিক-ওদিক ছুটে চলা মানুষেরা হাত নেড়ে আমাদের ধন্যবাদ জানান। কেউ কেউ দূর থেকেই আমাদের শিশুদের জন্য চুৃমু ছুড়ে দেন বাতাসে। ‌অনেক সময় কোনো শিশু ক্লান্ত হয়ে যায়। তখন আমরা তাকে কোলে নিয়েই হাঁটতে থাকি। আমাদের স্কুলের অধ্যক্ষ স্কুল ব্যাকইয়ার্ডে সমবেত সবার মধ্যে দাঁড়িয়ে আকাশে উড়িয়ে দেন শত শত বেলুন। শিশুদের সে কি প্রাণ খোলা হাসি তখন!
১৯৭০ সালে অটিজম সোসাইটি অটিজম সচেতনতা প্রচারের জন্য দেশ-বিদেশে একটি অবিচ্ছিন্ন প্রচেষ্টা শুরু করে, যেন অটিজম দ্বারা আক্রান্ত সবাই জীবনের সর্বোচ্চ মানের অধিকার ও সুবিধা অর্জন করতে পারে। ১৯৭২ সালে অটিজম সোসাইটি প্রথম বার্ষিক ‘ন্যাশনাল অটিস্টিক চিল্ড্রেন উইক’ শুরু করেন, যা পরে ‘ন্যাশনাল অটিজম অ্যাওয়ারনেস’ মাসে রূপান্তরিত হয়।
কোভিড-১৯ মহামারির কারণে এ বছর এপ্রিলে আমরা কমিউনিটি ও পুরো বিশ্বে অটিজমের সচেতনতা ছড়িয়ে দিতে পারিনি চেনা পন্থায়। সামাজিক দূরত্বের নীতি মেনে চলতে হয়েছে। তবু রিমোট লার্নিং ও ব্যক্তিগতভাবে অটিজমের গ্রহণযোগ্যতা, প্রচার ও পরিবর্তনের প্রসারণে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।