প্রবীণ সাংবাদিকদের ঈদ ভাবনা

করোনাভাইরাসের বৈশ্বিক মহামারিকালে আর্তমানবতার সেবায় নিজের জীবন বাজি রেখে বহু মানুষ এগিয়ে এসেছে। তারা দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন মানবসেবায়। বিশেষ করে যারা  ফ্রন্ট লাইন হিরো বা সম্মুখ সারির যোদ্ধা যেমন ডাক্তার, নার্স, অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী, অ্যাম্বুলেন্সচালক, ফুড ডেলিভারি ম্যানসহ অন্যদের সঙ্গে আরও আছে সাংবাদিক। যত বড় সংকটময় মুহূর্তই আসুক না কেন, সাংবাদিকেরা তৎপর থাকেন সঠিক সংবাদ জনগণের সামনে সবার আগে তুলে ধরতে। আর একটি সঠিক সাংবাদই আপনাকে পারে আরও সচেতন করে তুলতে।

আসছে মুসলিম উম্মাহর অন্যতম ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর। করোনাকালের ঈদ ভাবনা নিয়ে খবরের অন্তরালে থাকা তেমনি কয়েকজন সাংবাদিকের সঙ্গে কথা হয় প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার।

ঈদ মানে আনন্দ, ঈদ মানে খুশি। দীর্ঘ এক মাস পবিত্র রমজানের সিয়াম সাধনার পর আসে ঈদ। যা প্রতি বছর মুসলিম বিশ্বে নিয়ে আসে আনন্দের বার্তা নিয়ে। কিন্তু সেই “ঈদ আনন্দ উৎসব” করোনার করাল থাবা ছিনিয়ে নিয়ে গেছে। সারা পৃথিবী থেকে কেড়ে নিয়েছে তিন লাখেরও বেশি প্রাণ।

করোনাকালের ঈদ ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন করতেই সাপ্তাহিক আজকাল পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মনজুর আহমদ বলেন, যেকোনো উৎসবের আনন্দই মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে। সংকটময় কালেও উৎসবের আনন্দ মানুষকে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করে। যুগ যুগ ধরে বংশ পরম্পরায় ঈদ উৎসব সামাজিক জীবনের অবিচ্ছেদ্য একটি অংশ। এর থেকে এখন আমাদের বিচ্যুত হতে হচ্ছে। করোনার কালো থাবা নিমেষেই শেষ করে দিয়েছে যত আনন্দ উচ্ছ্বাসের ক্ষণ। দীর্ঘনিশ্বাস ছেড়ে তিনি বলেন, এবারের ঈদ আসলেই কোন উৎসব মুখর হবে না। ঈদের নামাজ পড়তে যাওয়া অথবা নতুন জামা কাপড় পরে কেউ বাসায় বেড়াতে আসবে না অথবা আমরাও যাব না কোনো আত্মীয়-স্বজন বা বন্ধু-বান্ধবের বাড়িতে। পাড়া-মহল্লায় দেখা যাবে না কোন মেহেদি উৎসব। করোনা কেড়ে নিয়েছে আমাদের জীবনের যত উচ্ছ্বাস।

 সাপ্তাহিক ঠিকানা পত্রিকার প্রধান সম্পাদক ফজলুর রহমান ভাঙা ভাঙা গলায় জানালেন, ৩০ এপ্রিল ঘরের মেঝেতে পড়ে ডান পায়ে ফ্র্যাকচার হয়েছে, অতঃপর স্টে-হোম থেকে স্টে বেড এমন পরিস্থিতিতে আছেন তিনি। করোনাকালের ঈদ ভাবনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই পরিবেশের মধ্যে ঈদের আনন্দের কথা চিন্তা করাটাও অমানবিক। কোভিড–১৯–এ আক্রান্ত হয়ে যেখানে পৃথিবীব্যাপী তিন লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এমন মর্মান্তিক পরিস্থিতিতে ঈদ উদ্‌যাপন করার কথা ভাবা মানে তাদের প্রতি অসম্মান বা অমর্যাদা দেখানো হবে। সব ধর্ম-বর্ণের মানুষের জীবনে দুর্যোগ নেমে এসেছে। সেখানে একটা বিশেষ ধর্মের একটা বিশেষ উৎসব নিয়ে ভাবনা চিন্তা করার কোনো অবকাশ নেই বলে তিনি মনে করেন।

সাপ্তাহিক পরিচয়ের সম্পাদক নাজমুল আহসান জানান, সংবাদের নেপথ্যে থেকেই মানুষের জন্য কাজ করতে স্বচ্ছন্দ বোধ করেন তিনি। করোনাকালের ভয়াবহতা ঈদের উচ্ছ্বাসকে ধুয়ে নিয়ে গেছে। তাই ঈদ নিয়ে বেশি কিছু বলতে চাননি তিনি।