'পরস্পরের মধ্যে সহযোগিতা-সহমর্মিতা বৃদ্ধি করে এগিয়ে যেতে হবে'

প্রথম আলো উত্তর আমেরিকা আয়োজিত ভার্চ্যুয়াল ঈদ আয়োজনে যোগ দেওয়া লেখক-সাংবাদিকেরা। ছবি: প্রথম আলো
প্রথম আলো উত্তর আমেরিকা আয়োজিত ভার্চ্যুয়াল ঈদ আয়োজনে যোগ দেওয়া লেখক-সাংবাদিকেরা। ছবি: প্রথম আলো

প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান বলেছেন, অনেক দুঃখ-কষ্ট ও বেদনার মধ্য দিয়ে আমাদের যেতে হচ্ছে। পরিবর্তনের এ সময়টা আমাদের জন্য কষ্টের হবে। এ সময়ে আমাদের পরস্পরের মধ্যে আরও সহযোগিতা ও সহমর্মিতা বৃদ্ধি করে এগিয়ে যেতে হবে।

২৪ মে প্রথম আলো উত্তর আমেরিকা আয়োজিত ভার্চ্যুয়াল ঈদ আয়োজনে যোগ দিয়ে প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান এসব কথা বলেন। তিনি উত্তর আমেরিকার সাংবাদিকদের করোনা সংকটকালে নির্ভিক দায়িত্ব পালনের জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানান। জীবনবাজি রেখে সামনে থেকে পত্রিকা প্রকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখায় শাহ আহমেদকেও ধন্যবাদ জানানো হয়।

সাংবাদিক সোহেল মাহমুদের সঞ্চালনায় ঈদ আড্ডার আয়োজনে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান ছাড়াও নন্দিত লেখক ও সাংবাদিক আনিসুল হক, পঞ্চকবি কন্যা ঋদ্ধি বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রথম আলোর মহাব্যবস্থাপক (হিসাব বিভাগ) মোহাম্মদ জসীম উদ্দিনসহ প্রথম আলো উত্তর আমেরিকায় আবাসিক সম্পাদকের নেতৃত্বে নানা দেশ ও নগরী থেকে যুক্ত হন একদল নবীন ও প্রবীণ লেখক-সাংবাদিক।

করোনাভাইরাস প্রতিরোধে লকডাউন শুরু হওয়ার পর থেকে সবকিছু ভার্চ্যুয়ালি চলছে। সংবাদমাধ্যম থেকে শুরু করে সাহিত্য আড্ডা, শরীরচর্চা, নাচ-গান এমনকি ক্রিকেট আড্ডা চলছে ঘরে বসে, অনলাইনে। উত্তর আমেরিকার লেখক-সাংবাদিকদের সঙ্গে প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান প্রথম কোনো ভার্চ্যুয়াল লাইভ অনুষ্ঠানে যোগ দিলেন। তিনি করোনাকালে বিরাট চ্যালেঞ্জ নিয়ে প্রথম আলোকে সহযোগিতার জন্য প্রিয় কর্মী বাহিনীর প্রত্যেকের নাম ধরে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

ছোটবেলার ঈদ কেমন ছিল, এমন প্রশ্নের জবাবে সম্পাদক মতিউর রহমান বলেন, তিনি পুরান ঢাকার পরিবারে বড় হয়েছেন। মধ্যবিত্ত অন্য দশজনের মতোই ছিল তাঁদের ঈদ। তেমন উল্লেখ করার মতো কিছু নেই। নিজের স্কুল ফাঁকি দিয়ে মাঠে-ময়দানে ঘোরার কথাও শুনিয়েছেন তিনি।

প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক আনিসুল হক বলেন, করোনার সংকটের সময় প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার সাংবাদিক-লেখকেরা গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে যাচ্ছেন। নিজেদের নিরাপদ রেখে, অন্যকেও নিরাপদ রাখার জন্য সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। উত্তর আমেরিকা প্রথম আলোর লেখক বন্ধুদের এ সময়ে কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা জানান। এ ছাড়া শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন করোনায় মৃত্যু হওয়া মানুষদের। অনুষ্ঠানে সবার জন্য বাড়তি পাওনা ছিল তাঁর রচিত করোনাকালের অনবদ্য সৃষ্টি কবিতা ‘ইশতেহার ২০২০’–এর কয়েক ছত্র। তিনি নিজে তা আবৃত্তি করে শোনান।

ঈদ আয়োজনে দুই বাংলার জনপ্রিয় শিল্পী, পঞ্চকবি কন্যা নামে খ্যাত ঋদ্ধি বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা থেকে আলাপচারিতায় যোগ দেন ও সংগীত পরিবেশন করেন। আমেরিকায় করোনায় সংক্রমিত হয়ে প্রায় মানুষের মৃত্যু হয়েছে। মহামারির এ সময়ে প্রথম আলো ছাপা পত্রিকা ও ই–পেপার নিয়ে মানুষের কাছে থেকেছে শুরু থেকেই। সঠিক সময়ে সঠিক তথ্য ও সংবাদ পরিবেশন করে আসছে। ভয় বুকে নিয়ে করোনায় মানুষের বাস্তবতার কথা তুলে এনেছেন উত্তর আমেরিকার লেখক ও সাংবাদিকেরা। এই সময়ে যাঁরা নিহত হয়েছেন, তাঁদের স্মরণ করে ও স্বজনহারা পরিবারের সমবেদনা জানিয়ে অনুষ্ঠানে সবাইকে শুভেচ্ছা জানান উত্তর আমেরিকার আবাসিক সম্পাদক ইব্রাহীম চৌধুরী। সবার পরিচয় পর্ব পরিচালনা করেন সাংবাদিক সোহেল মাহমুদ।

ঋদ্ধি বন্দ্যোপাধ্যায় বর্তমানে কলকাতায় থাকলেও তাঁর বাবা-মা দুজনেই বাংলাদেশি। তিনি নিজেকে একজন বাঙালি মনে করেন, বাংলাদেশি মনে করেন বলে জানিয়েছেন এই আয়োজনে। বেশ কিছু গান গেয়ে তিনি পুরো অনুষ্ঠান মাতিয়ে রাখেন। প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার লেখক-সাংবাদিকদের সঙ্গে তাঁর নিবিড় সম্পর্কের কথাও উল্লেখ করেন আলাপচারিতায়।

অনুষ্ঠানে নিজের লেখা কবিতা পাঠ করেন ইশতিয়াক রূপু, আবদুস শহীদ, শেখর ভট্টাচার্য, সুব্রত চৌধুরী, আবদুল্লাহ জাহিদ, ক্রিস্টোফার পিউরিফিকেশনসহ অনেকেই। নিউইয়র্কের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আবু তাহের নিজের করা কাজের কথা তুলে ধরেন। ঈদ আয়োজনে শুভেচ্ছা জানান শেলী জামান খান, রহমান মাহবুব, মনিজা রহমান ও রওশন হক।

অনুষ্ঠানে আরও যুক্ত ছিলেন শারমিন চৌধুরী, ফারজানা চৌধুরী, রোকেয়া দীপা, আসিফ মুক্তাদির, জেবুন্নেসা জ্যোৎস্না, ভায়লা সেলিনা, মনজুরুল হক, সেলিনা আক্তার, জেসমিন খান, ফারহানা নাজ, খায়রুল আনাম, কান্তা কাবীর, সালমা ফেরদৌস, আনিসা চৌধুরী, সুখেন জোসেফ গোমেজ, রুপা খানম, বাবুল নকরেক, তোফাজ্জল লিটন প্রমুখ।

গানে, কথায়, কবিতায় সংযুক্ত থেকে জমজমাট আড্ডা দিয়েছেন যাঁরা, যাঁরা শুনে-দেখে পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে ঈদের দিনটি প্রথম আলো উত্তর আমেরিকা পরিবারের সঙ্গে কাটিয়েছেন, তাঁদের সবাইকে প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার পক্ষ থেকে ঈদের শুভেচ্ছা জানানো হয়।