সাহায্য অল্প হলেও ভালোবাসা অনেক

ত্রাণ হাতে আম্পানে ক্ষতিগ্রস্তরা
ত্রাণ হাতে আম্পানে ক্ষতিগ্রস্তরা

ছোট বোন মার্গারেট ২০ মে মেসেঞ্জারে একটি ম্যাসেজ পাঠিয়ে কল দেওয়ার অনুরোধ করেছে। সে আমেরিকায় থাকে। কল দিলে মার্গারেট বলল, ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের তারা কিছু করতে চায়।
মার্গারেটের সঙ্গে কথা শেষ করে সহকর্মীদের সঙ্গে আলাপ করলাম। তারা বিষয়টিকে সাধুবাদ জানাল। বলল, তাহলে আমরা ঘূর্ণিঝড়ে অপেক্ষাকৃত বেশি ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে কিছু খাবার দিতে পারি।
মার্গারেটকে আমাদের পরিকল্পনা জানানোর পর সে তার স্বামী ক্যালভিনকে নিয়ে আমার সঙ্গে কথা বলল। তারা তাৎক্ষণিকভাবে ২০ হাজার টাকা পাঠাল।
ইতিমধ্যে প্রকল্পের হিসাব রক্ষক একটা বাজেট তৈরি করল যা আমি তাদের পাঠালাম। তারা বলল, তোমরা যা ভালো মনে কর, তা কর।
কর্মীদের পরামর্শে ২৫০ কেজি চাল, ১০০ কেজি আলু, ৫০ কেজি ডাল, ৫০ প্যাকেট লবণ ও ৫০ প্যাকেট তেল কেনা হল। আমরা ও সেলফ হেল্প গ্রুপের সদস্যরা যৌথভাবে ৫০টি প্যাকেট তৈরি করল, সঙ্গে একটা তালিকা। আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ত্রাণ দেওয়ার বিষয়টি জানালাম। পাশাপাশি চিলা ইউনিয়নে ও চাঁদপাই ইউপি চেয়ারম্যানদের সুবিধাভোগীদের তালিকাসহ চিঠির মাধ্যমে বিষয়টি জানালাম।
২২ মে পশুর নদীর পারের ক্ষতিগ্রস্ত কাটাখালি, কোলাবাড়ী, সিন্দুরতলা, তেলিখালী, কলাতলা, কেয়াবুনিয়া, কানাইনগর, মালগাজী, মাছমারা, উত্তরকাইনমারী গ্রামের ৫০টি ক্ষতিগ্রস্ত ও দরিদ্র পরিবারকে খাদ্য বিতরণ করা হল।
আমরা সাহায্যের জন্য বোনের কাছে ঘূর্ণিড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য কিছুই চাইনি। স্বেচ্ছায় তারা সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে। এ জন্যই বলছি, সাহায্য করার অভ্যাস থাকলে নিজেরাই অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ায়। অনেক টাকা পয়সা থাকলেও মানুষকে সাহায্য করা যায় না, যদি তার পারিবারিক, সামাজিক, ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষার ঘাটতি থাকে।
আমরা অনেকেই সাহায্য করি আমাদের আত্মীয়–পরিজনদের। কিন্তু যারা অনাত্মীয়দের বিপদে সাহায্য করতে এগিয়ে আসে, আমার মতে তারাই মানুষকে প্রকৃত ভালোবাসে। আমি তাদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই এবং প্রার্থনা করি, যেন তাদের নেতৃত্বে ক্যাটরিনা লাভ ফর বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠানটি এভাবে হাজার মানুষের সহযোগিতায় এগিয়ে আসতে পারে।