ট্রাম্পের মাথায় হরদম পেশিশক্তির চিন্তা

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: রয়টার্স
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: রয়টার্স

ব্যবসায়ী ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটা ‘ইমেজ’ আছে। তিনি তাঁর জয়ের জন্য সবকিছুই করতে পারেন। ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরও তাঁর সেই মনোবৃত্তি বদলায়নি। তিনি এখনো যেকোনো মূল্যে জিততে চান। নিজের কথাটাকেই সবার ওপরে রাখতে চান। গণতান্ত্রিক দেশ যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আচরণ অনেকটা কর্তৃত্ববাদী নেতার মতো।

পুলিশি হেফাজতে কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর প্রতিবাদ ও ন্যায়বিচারের দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে চলমান আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে ট্রাম্পের আচার-আচরণ দেশটির গণতন্ত্রমনা মানুষকে হতবাক করে দিয়েছে।

আন্দোলন দানা বাঁধতেই ট্রাম্প তাঁর অবস্থান খোলামেলাভাবে সবাইকে বুঝিয়ে দেন। তিনি অঙ্গরাজ্যগুলোর গভর্নরদের এই আন্দোলন কঠোরভাবে দমন করার পরামর্শ দেন।

গভর্নররা যদি আন্দোলন দমাতে না পারেন, ট্রাম্পের ভাষায়, তাঁর যদি ব্যর্থ হন, তাহলে যা করার তিনিই করবেন বলে হুমকি দিয়ে রাখেন।
আন্দোলনকারীদের দমন করতে ট্রাম্পের দ্রুত ও সহজ সমাধান হলো, হাজারো সশস্ত্র সেনা যুক্তরাষ্ট্রের রাস্তায় নামিয়ে দেওয়া। একজন নেতা কতটা অগণতান্ত্রিক, কতটা স্বৈরতান্ত্রিক মনোভাব ধারণ করলে তাঁর নিজ দেশের জনগণের বিরুদ্ধেই তাদের করের অর্থে চলা সেনাবাহিনীকে ব্যবহারের চিন্তা করতে পারেন, তা সহজেই অনুমেয়।

বার্তা সংস্থা এএফপির এক বিশ্লেষণে বলা হয়, ট্রাম্পের মাথায় সব সময়ই বল প্রয়োগের চিন্তা খেলে। সমস্যা সমাধানে তিনি শক্তি প্রয়োগের কথা আগে ভাবেন।

বিশ্বের যেসব নেতা অবলীলায় বল প্রয়োগ করেন, এই কাজে যাঁরা মোটেও দ্বিধান্বিত নন, ভীত নন, তাঁরা ট্রাম্পের কাছে প্রশংসার পাত্র।
ট্রাম্পের পছন্দের লোক রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন, সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। তাঁরা প্রত্যেকে নিজ নিজ দেশে ভিন্নমত দমনে অত্যন্ত কঠোর। প্রতিপক্ষকে নির্মমভাবে নিশ্চিহ্ন করতে তাঁরা সিদ্ধহস্ত।


ট্রাম্প রেসলিং ও মার্শাল আর্টের মতো মারামারি দেখতে বেশ পছন্দ করেন। এসব ক্ষেত্রে প্রতিপক্ষকে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। ট্রাম্পের পছন্দের প্রকৃতি থেকে তাঁর মনস্তত্ত্ব সম্পর্কে একটা ধারণা পাওয়া যায়।


ট্রাম্পের কথা, শব্দ চয়ন, অঙ্গভঙ্গি—সবকিছুর মধ্যে প্রায়ই একটা আক্রমণাত্মক ভাব থাকে। তিনি চরম আধিপত্যশীল। তিনি ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত এক কর্তৃত্বপরায়ণ প্রেসিডেন্ট।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আর মাত্র পাঁচ মাস বাকি। আগামী নির্বাচনে জয়ী হয়ে আরেক দফায় হোয়াইট হাউসে থাকতে মরিয়া ট্রাম্প। তাই কৃষ্ণাঙ্গ হত্যার জেরে যুক্তরাষ্ট্রে উদ্ভূত সংকট নিয়ে রাজনৈতিক খেলা খেলতে একটুও বিলম্ব করেননি তিনি। নিজস্ব ঢংয়ের কর্তৃত্ববাদকে কাজে লাগিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ শ্বেতাঙ্গদের ভোট বাগাতে কূটচাল চালছেন ট্রাম্প।