সহমর্মিতার বন্ধন দৃঢ় করে এগিয়ে যেতে হবে

খাবার বিতরণ কর্মসূচিতে করোনায় হারানো কমিউনিটির স্বজনদের আত্মার শান্তি কামনা করা হয়। ছবি: প্রথম আলো
খাবার বিতরণ কর্মসূচিতে করোনায় হারানো কমিউনিটির স্বজনদের আত্মার শান্তি কামনা করা হয়। ছবি: প্রথম আলো

বিপর্যয়ে একে অন্যের পাশে দাঁড়িয়ে ক্রান্তিকাল অতিক্রম করতে হবে। করোনার তাণ্ডবে নিউইয়র্কে বাংলাদেশিদের সংকটকালে অনেকেই বসে থাকেননি। ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেছেন কমিউনিটির জন্য। কেউ খাবার পৌঁছে দিয়েছেন, কেউ তথ্য দিয়ে সঠিক পথ দেখিয়েছেন। কমিউনিটির বহুজনকে হারিয়ে নিউইয়র্কে বসবাসরত বাংলাদেশিরা আজ শোকাভিভূত। সামনের দিনে সহমর্মিতার বন্ধন দৃঢ় করেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।

৫ জুন নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের ৭৩ স্ট্রিটে তৈরি খাবার বিতরণ কর্মসূচিতে বক্তারা এসব কথা বলেছেন। প্রথম আলো উত্তর আমেরিকা, ট্রান্সফোটেক একাডেমি ও শিল্ড অব সোলাসের (এসওএস ) উদ্যোগে এ খাবার বিতরণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এদিন ২০০ জনের মধ্যে খাবার বিতরণ করা হয়। কমিউনিটির লোকজন ছাড়াও ভিনদেশি লোকজনকে এ খাবার সংগ্রহ করতে দেখা যায়। সেলসো নামের একজন দক্ষিণ আমেরিকান অভিবাসী খাবার সংগ্রহ করতে এসে জানান, তিনি তিন মাস থেকে কর্মহীন। এভাবেই খাবার সংগ্রহ করে করোনার সময় পার করছেন। ৮ জুন থেকে নগরী খুলে গেলে কাজের সন্ধানে যাবেন বলে জানালেন নির্মান শ্রমিক এ অভিবাসী।

জ্যাকসন হাইটসের খাবারবাড়ির সামনে খাবার বিতরণ কর্মসূচিতে করোনায় হারানো কমিউনিটির স্বজনদের আত্মার শান্তি কামনা করা হয়। মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করেন মুহাম্মদী সেন্টারের ইমাম কাজী কাইয়্যুম। শুভেচ্ছা বিনিময় করেন প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার লেখক-সাংবাদিকরা। বক্তব্য রাখেন ট্রান্সফোটেক একাডেমির সিইও শেখ গালিব রহমান, এসওএস ফাউন্ডেশন এবং মুসলিম এন্টারপ্রেনার অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট আবদুল রহমান , এসওএসের নির্বাহী তালহা ইয়ামীন, মূলধারার রাজনীতিক জয় চৌধুরী প্রমুখ।

প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার লেখক সাংবাদিকদের মধ্যে রহমান মাহবুব, রওশন হক, ভায়লা সালিনা, কবি স্বপ্ন কুমার, ফরিদা ইয়াসমীন, রোকেয়া দীপা, মনজুরুল হক, শাহ আহমদ, সানজিদা ঊর্মি, শাহ শিরিল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। লেখক-সাংবাদিকদের সঙ্গে কমিউনিটির লোকজনকে শুভেচ্ছা জানাতে এগিয়ে আসেন ডিস্ট্রিক্ট লিডার অ্যাট লার্জ অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী, আলমগীর খান, ফকু চৌধুরী, কান্তি দাস, জয় দেব, আবদুল আহাদ, জুলহাশ আহমেদ প্রমুখ।

খাবার বিতরণ কর্মসূচিতে লেখক-সাংবাদিক, আয়োজক ও কমিউনিটির বিশিষ্টজনেরা। ছবি: প্রথম আলো
খাবার বিতরণ কর্মসূচিতে লেখক-সাংবাদিক, আয়োজক ও কমিউনিটির বিশিষ্টজনেরা। ছবি: প্রথম আলো

খাবার বিতরণ কর্মসূচি উদ্বোধনকালে প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার আবাসিক সম্পাদক ইব্রাহীম চৌধুরী বলেন, গত তিন মাসে কমিউনিটির নতুন প্রজন্ম এগিয়ে আসার যে উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন, তা ইতিহাসের উপাদান হয়ে থাকবে।

ট্রান্সফোটেক একাডেমির সিইও শেখ গালিব রহমান বলেন, এ ধরনের কর্মসূচি আমরা চালিয়ে যাব। প্রথম আলো উত্তর আমেরিকা এ কর্মসূচিতে যুক্ত হওয়ায় তিনি ধন্যবাদ জানান পত্রিকাটির লেখক-সাংবাদিকদের।
অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী করোনার সময়ে তথ্য দিয়ে কমিউনিটিকে সমৃদ্ধ করার জন্য প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার লেখক-সাংবাদিকদের ধন্যবাদ জানান। রাজনীতিক জয় চৌধুরী খাবার বিতরণ কর্মসূচির মতো কমিউনিটি বান্ধব কর্মসূচি অব্যাহত রাখার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি আসছে ২৩ জুনের নির্বাচনে নিজে ভোট প্রদান এবং কমিউনিটির সবাইকে ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত হওয়ার জন্য উৎসাহিত করতে অনুরোধ জানান।

সাংবাদিক শাহ আহমদ করোনা প্রতিরোধে দেওয়া লকডাউনে সংবাদ সংগ্রহের সময়ে প্রতিকূল অবস্থার বিবরণ তুলে ধরেন। একজন সংবাদকর্মী হিসেবে জীবনের এ এক বিরল অভিজ্ঞতা উল্লেখ করে সবাইকে সহমর্মিতা ও পাশে থাকার জন্য তিনি কৃতজ্ঞতা জানান।

এসওএসের নির্বাহী তালহা ইয়ামীন বলেন, তাঁরা আমেরিকায় নতুন প্রজন্মের মধ্যে যোগসূত্র সৃষ্টি করে সব সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে চান। কমিউনিটির পাশে থেকে তাঁদের কাজকর্ম ভবিষ্যতে আরও বিস্তৃত হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
মুসলিম এন্টারপ্রেনার অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট আবদুল রহমান বলেন, নতুন প্রজন্মের পেশাজীবী নিয়ে একটি উদ্যোক্তা শ্রেণি গড়ে তোলা হচ্ছে। তরুণ উদ্যোক্তারা সব সময় কমিউনিটির পাশে থাকবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
কমিউনিটি নেতা ফকু চৌধুরী বলেন, দেশের মতো প্রবাসেও ভালো কাজের সঙ্গে প্রথম আলো জড়িত থাকে। সব ভালো কাজের প্রতি তিনি নিজের অব্যাহত সমর্থনের কথা জানান।