জাতিসংঘের দারিদ্র্য নির্মূল জোটে যোগ দিল বাংলাদেশ

দারিদ্র্য বিমোচন ও এসডিজি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সদস্য রাষ্ট্র, আন্তর্জাতিক সংস্থা ও অন্য অংশীজনদের পারস্পরিক সহযোগিতাকে আরও সুদৃঢ় করার লক্ষ্যে দারিদ্র্য নির্মূল জোট গঠন করেছে জাতিসংঘ। বাংলাদেশসহ উল্লেখ্যযোগ্যসংখ্যক সদস্য দেশ এই জোটে যোগ দিয়েছে। জোটটি গঠনের উদ্যোগ নেন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি তিজানি মোহাম্মদ বান্দে।

২৩ জুন জাতিসংঘের দারিদ্র্য নির্মূল জোটের ভার্চ্যুয়াল উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি থেকে টেকসই পুনরুদ্ধারের জন্য জাতিসংঘের সদস্য দেশের পারস্পরিক সহযোগিতাকে আরও সুদৃঢ় করতে হবে। এই সহযোগিতা হতে হবে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত ও জনস্বাস্থ্যব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে। আর তাহলেই কেবল এই প্রচেষ্টা দারিদ্র্য নির্মূলের ক্ষেত্রে পরিপূরক ভূমিকা পালন করতে পারে।

জোটে বাংলাদেশের অংশগ্রহণের ঘোষণা প্রদানকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের ‘জনকেন্দ্রিক’ও ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক’ দারিদ্র্য বিমোচননীতির কথা তুলে ধরেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার গৃহীত এই নীতিগুলো দেশের দারিদ্র্য বিমোচনে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রেখেছে। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সক্ষমতা বিনির্মাণে বিনিয়োগ, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তির ব্যবহার, মোবাইল ব্যাংকিং ও কৃষি বিপণনসহ নানামুখী সরকারি উদ্যোগ বাস্তবায়নের কারণে দেশের বিপুল জনগোষ্ঠী দারিদ্র্যসীমা থেকে বেরিয়ে এসেছে।

রাষ্ট্রদূত উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাবে বিশেষ করে রেমিট্যান্সের স্বল্পতা ও বৈশ্বিক সরবরাহ চেইন ব্যহত হওয়ার কারণে দারিদ্র্য বিমোচনে বাংলাদেশের প্রণিধানযোগ্য প্রচেষ্টার গতি কিছুটা শ্লথ হতে পারে। তবে তিনি জানান, করোনা মহামারি থেকে উত্তরণ–পরবর্তী সরকারি পরিকল্পনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে দারিদ্র্য বিমোচন। প্রান্তিক জনগোষ্ঠী এবং দেশের অর্থনীতি, বিশেষ করে তীব্র ঝুঁকিতে থাকা শিল্প ও কৃষি খাতের সহায়তায় শেখ হাসিনা সরকার যে ব্যাপকভিত্তিক প্রণোদনা প্যাকেজ ও সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে, তা তুলে ধরেন স্থায়ী প্রতিনিধি। বৈশ্বিক এই মহামারি থেকে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে বেসরকারি খাতের পরিপূরক ভূমিকা পালন করা উচিত বলেও অভিমত ব্যক্ত করেন তিনি।

ভার্চ্যুয়াল এই উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী উল্লেখযোগ্যসংখ্যক রাষ্ট্রদূত উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, কোভিড-১৯ বিশ্বব্যাপী বিপুল জনগোষ্ঠীকে দারিদ্র্যের দিকে ঠেলে দেবে। এই মহামারির কারণে এসডিজির বাস্তবায়ন মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হবে; কারণ জরুরি স্বাস্থ্য সংকট মেটানোর প্রয়োজনে সম্পদকে এ খাতেই প্রবাহিত করতে হচ্ছে। তাঁরা আশা প্রকাশ করেন, বহুপক্ষীয় পর্যায়ে এবং উন্নয়ন অংশীজনদের মাঝে শক্তিশালী অংশীদারত্ব গড়ে তুলতে দারিদ্র্য নির্মূলের এই জোট হতে পারে কার্যকরী একটি প্ল্যাটফর্ম।