বরিশালের প্রসিদ্ধ সব রান্না

>বরিশাল অঞ্চলের ভীষণ জনপ্রিয় রান্নাবান্নার প্রধান উপাদান হলো নারিকেল। নারিকেল সব ঋতুতেই পাওয়া যায়। নারিকেল দিয়ে মুখরোচক কিছু রান্নার প্রস্তুত প্রণালি নিয়ে থাকছে এবারের আয়োজন—

নারিকেল ভর্তা
নারিকেল ভর্তা জন্য যা লাগে

উপকরণ: ফ্রেশ কোরা নারিকেল ১/৩ কাপ, রসুন মাঝারি সাইজের ২টি, শুকনা মরিচ ২/৩টি বা স্বাদ অনুযায়ী, কাটা পেঁয়াজ-দেড় চা চামচ, সরিষার তেল ১ চা চামচ, লবণ-স্বাদ অনুসারে।
প্রণালি: একটি ফ্রাই প্যানে রসুন, পেঁয়াজ কুচি, লাল মরিচ সব একসঙ্গে ভেজে নিন। ভাজা পেঁয়াজ, রসুন, লাল মরিচ, কোরানো নারিকেল এবং লবণ একসঙ্গে পাটায় বেটে নিন। ব্যস হয়ে গেল খুব সহজ আর মজাদার নারিকেল ভর্তা। গরম-গরম ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করতে পারেন এই ভর্তা। কাঁচামরিচ দিয়েও করা যাবে। প্রয়োজনে ধনে পাতা দেওয়া যেতে পারে।

নারিকেল দুধে আমড়া

আরও একটি জনপ্রিয় রান্না বরিশাল অঞ্চলের নারিকেল দুধে আমড়া রান্না।
উপকরণ: আমড়া ৮টি, নারকেলের দুধ-৪ কাপ, চিনি দেড় কাপ, এলাচি ২টা, দারুচিনি ২ টুকরা, লবণ পরিমাণ মতো, পেঁয়াজ কুচি ২ টেবিল চামচ (বেরেস্তার জন্য), তেল ১ টেবিল চামচ ও খাঁটি ঘি ১ টেবিল চামচ প্রণালি খোসা ছিলে আমড়ার গায়ে দাগ কেটে পানিতে লবণ দিয়ে আধা সিদ্ধ করে নিন। ২ কাপ নারকেল দুধের সঙ্গে চিনি এবং আমড়া দিয়ে চুলায় দিতে হবে। আমড়ার ঝোল কমে এলে বাকি দুধ দিয়ে হালকা আঁচে রেখে, প্যানে তেল গরম করে দারুচিনি এলাচ দিয়ে ফোড়ন দিন। এরপর খাঁটি ঘি দিয়ে পেঁয়াজ লাল করে ভেজে ঘসহ আমড়ার ওপর ঢেলে দিন। গরম-গরম পরিবেশন করুন নারিকেল দুধে আমড়া।

চিংড়ি মাছের মালাইকারি

চিংড়ি মাছের মালাইকারি তৈরি করতে যা লাগছে
উপকরণ: গলদা চিংড়ি ৫০০ গ্রাম, নারিকেলের দুধ ১ কাপ (নারিকেল কোরা ১/২ কাপ গরম পানিতে কিছুক্ষণ রেখে দিয়ে দুধ বের করে নেবেন), কাঁচা মরিচ চেরা ৭-৮টি, গরম মসলা ৬-৭টি (এলাচি ৪টি, দারুচিনি ২ টুকরো), কাজু বাদাম ১/২ কাপ (সামান্য গরম পানিতে ১৫ মিনিট ভিজিয়ে মসৃণ করে বাটা), লবণ পরিমাণ মতো, সাদা তেল ৩ চা চামচ, ঘি ২ টেবিল চামচ, পেঁয়াজ বাটা ২টি বড় এবং বেরেস্তা ৩টি বড় পেঁয়াজের, আদা ও রসুন বাটা ১ চামচ প্রণালি প্রথমে চিংড়ি মাছগুলোর খোসা ছাড়িয়ে ভালো করে ধুয়ে লবণ মাখিয়ে নিন।
প্রণালি: প্যানে অল্প সাদা তেল গরম করে মাছগুলোকে ছেড়ে দিন। মাছগুলো সামান্য ভাজা হয়ে গেলে নামিয়ে নিন। এবার প্যানের ওই তেলে গরম মসলা ফোড়ন দিন। গন্ধ বের হলে পেঁয়াজ বাটা ভাঁজতে থাকুন। লাল করে ভাজা হয়ে এলে আদা, রসুন বাটা দিয়ে কষে নিন। মসলা কষানো হয়ে এলে কাজুবাদাম বাটা দিয়ে নাড়াচাড়া করুন। এবার নারিকেলের দুধ ঢেলে দিয়ে একটু অপেক্ষা করে ভাজা মাছগুলোকে এর মধ্যে ঢেলে দিন। কাঁচা মরিচ চেরা এর মধ্যে দিয়ে হালকা আঁচে ১০ মিনিট ভালো মতো ফুটতে দিন। একটু ঘন হয়ে এলে ঘি ঢেলে চুলা বন্ধ করে দিন। পরিবেশনার আগে ও পরে বেরেস্তা দিতে ভুলবেন না। পোলাও কিংবা গরম-গরম ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করুন।

হাঁস নারিকেল রান্না

একটু ভিন্ন রকম বরিশালের জনপ্রিয় রান্না হাঁস নারিকেল রান্নায় যা লাগে
উপকরণ: একটি বড় হাঁস, নারিকেল দুধ ২ কাপ, ৩টি বড় টমেটো, পেঁয়াজ কুচি ৩টি, রসুন বাটা ২ টেবিল চামচ ও এক চা চামচ সরিষা বাটা, জিরা গুঁড়ো পরিমাণ মতো; হলুদ, মরিচ, লবণ পরিমাণ মতো, কাঁচা মরিচ ১০/১২টা, অল্প পরিমাণ বাদাম বাটা, আধা কাপ গুঁড়ো দুধ (গুলিয়ে নেবেন), এলাচি ৮টি, দারুচিনি বড় ৪ টুকরো, লবঙ্গ ৮টি এবং কালো গোলমরিচ ১০-১২টি প্রণালি একটি প্যানে তেল গরম করে তেলে কুঁচনো পেঁয়াজ ছেড়ে দিন।
পেঁয়াজ নরম হলে আদা রসুন লবণ সরিষা ঢেলে দিয়ে নাড়তে থাকুন। তারপর একটু ভাজা ভাজা হলে হলুদ, মরিচ, লবণ, জিরা ও গরম মসলা দিয়ে কষিয়ে নিন। টমেটো পাতলা করে কেটে কষানো মসলায় দিয়ে একটু অপেক্ষা করুন। চামড়া ছাড়ানো হাঁসের মাংস ছোট ছোট টুকরো করে এবার কষানো মসলায় ঢেলে দিন। মাংস মাঝারি আঁচে ঢাকনা দিয়ে ১০-১৫ মিনিটের মতো সেদ্ধ হলে কাঁচা মরিচ নারিকেলের দুধ ঢেলে দিয়ে আবারও প্যানটি ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিন। এবার চুলার আঁচ কমিয়ে কিছুক্ষণ রেখে দিন। গুঁড়া দুধ পানিতে মিশিয়ে মাংসে দিয়ে ৫-১০ মিনিট পর চুলা থেকে নামিয়ে ফেলুন। হয়ে গেল হাঁস নারকেল রান্না। এবার গরম ভাতের সঙ্গে সাজিয়ে পরিবেশন করুন হাঁস নারকেল।