৩০ ভাগ লোকই আর কাজ ফিরে পাবেন না

নতুন করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে মার্কিন অর্থনীতিতে যে মন্দাভাব সৃষ্টি হয়েছে, তা সহজে কাটবে না। বেকারত্ব বেড়েছে ভয়াবহভাবে। সীমিত আকারে অর্থনীতি চালুর পরও একটি বড় অংশের বেকারত্ব এখনো ঘোচেনি। খুব দ্রুত তা ঘুচবে বলেও মনে হচ্ছে না। অন্তত ৩০ শতাংশ লোক সহজে কাজে ফিরতে পারবেন না বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
নিউইয়র্ক টাইমস–এর তথ্যমতে, তিন কোটি লোকের বেকারভাতার আবেদন এখনো টেবিলে রয়েছে। এদিকে নতুন করে অর্থনীতি চালু করতে গিয়ে আবার পিছিয়ে আসতে হয়েছে। ফলে বহু অঙ্গরাজ্য পদক্ষেপটি থেকে পিছিয়ে এসেছে। তারা অর্থনীতি চালুর প্রক্রিয়া হয় বন্ধ করেছে, নয়তো নতুন করে লকডাউন ঘোষণা করেছে।
এ বিষয়ে মুডি’স অ্যানালিটিকসের মুখ্য অর্থনীতিবিদ মার্ক জান্ডি বলেন, ‘চাকরির বাজারের একেবারে ভিতে আঘাত করেছে মহামারি। বহু চাকরির ক্ষেত্র সহজে ফিরবে না। অর্থনীতি মহামারির আগের অবস্থায় ফিরে যাবে বলে যেমনটা মনে করা হচ্ছে, তা কখনো হওয়ার নয়।’
মার্কিন শ্রম মন্ত্রণালয়ের তথ্য তুলে ধরে সিএনএন বিজনেস জানাচ্ছে, গত সপ্তাহে ৪৮ লাখ কর্মসংস্থান হয়েছে। এক মাসের ব্যবধানে এত কর্মসংস্থান আগে হয়নি। কিন্তু এই যে নতুন কর্মসংস্থান, তা মূলত কাজে ফেরা। এখানেও কথা আছে। এই ফেরাটা আগের মতো নয়। অনেকেই আগে স্থায়ী পদে থাকলেও এখন কাজে ফিরছেন অস্থায়ী পদে।
এদিকে যখন নতুন এই কর্মসংস্থানের কথা বলা হচ্ছে, ঠিক তখনই নতুন করে কাজ হারিয়েছে ৭ লাখ ৫৯ হাজার লোক, যারা আর কখনো কাজে ফিরতে পারবে না। এক মাসের ব্যবধানে একমাত্র ২০০৯ সালেই শুধু এর চেয়ে বেশি লোক কাজ হারিয়েছিল। সব মিলিয়ে চিরতরে কাজ হারানো মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৭ লাখ। আরও অন্তত ১০ লাখ লোক রয়েছে অনুরূপ ঝুঁকিতে।
উদারনৈতিক গবেষণা সংস্থা ইকোনমিক পলিসি ইনস্টিটিউটের জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ হেইডি শিয়েরহোলজ সিএনএনকে বলেন, সাধারণভাবে ধারণা করা হচ্ছে যে, আমেরিকায় বর্তমানে ১ কোটির বেশি মানুষ সাময়িকভাবে বেকার। কিন্তু ইতিহাস সাক্ষ্য দিচ্ছে যে, সাময়িকভাবে বেকার হয়েছে শ্রম মন্ত্রণালয়কে এমন তথ্য জানানো লোকেদের প্রায় ৩০ শতাংশ কখনোই আর কাজে ফিরতে পারে না। এ ক্ষেত্রেও এমনটিই ঘটবে বলা না গেলেও, মানতে হবে যে, এটাই হয়ে আসছে। অনেকেই এখনো আশায় আছেন। কিন্তু সত্য হচ্ছে যে, অনেকেই চাকরিটা স্থায়ীভাবেই হারিয়েছেন।
সরকারি যে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে, তার মধ্যেও সমস্যা আছে। এ তথ্যের মধ্যে এমন অনেকের কথাই নেই, যারা অস্থায়ী কাজে থাকলেও খুব দ্রুত কাজ হারাবেন। উদাহরণস্বরূপ বোয়িংয়ের কথা বলা যায়, যারা ১৬ হাজার কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দিয়েছে। এর সঙ্গে যদি হাজার হাজার দোকান বন্ধের বিষয়টিকে বিবেচনায় নেওয়া হয়, তবে সংকটটি কিছুটা বোঝা যাবে।