ট্রাম্প টাওয়ারের সামনের সড়কে 'ব্ল্যাক লাইভস মেটার'

ট্রাম্প টাওয়ারের সামনের সড়কে ‘ব্ল্যাক লাইভস মেটার’-এ রঙ দিচ্ছেন নিউইয়র্ক নগরের মেয়র বিল ডি ব্লাজিও, তাঁর স্ত্রী চার্লেইন আইরিন ম্যাকক্রে ও নাগরিক আন্দোলনের নেতা আল শার্পটন। ছবি: রয়টার্স
ট্রাম্প টাওয়ারের সামনের সড়কে ‘ব্ল্যাক লাইভস মেটার’-এ রঙ দিচ্ছেন নিউইয়র্ক নগরের মেয়র বিল ডি ব্লাজিও, তাঁর স্ত্রী চার্লেইন আইরিন ম্যাকক্রে ও নাগরিক আন্দোলনের নেতা আল শার্পটন। ছবি: রয়টার্স

নিউইয়র্কে ট্রাম্পের বাড়ির সামনের সড়কে ‘ব্ল্যাক লাইভস মেটার’ ম্যুরাল স্থাপিত হচ্ছে। নাগরিক অধিকার আন্দোলনের সংগঠকদের নিয়ে সেই সড়কে ‘ব্ল্যাক লাইভস মেটার’ লিখায় যোগ দিয়েছেন নিউইয়র্ক নগরের মেয়র বিল ডি ব্লাজিও। তিনি বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যা বোঝেন না, তা তাঁকে বুঝিয়ে দেওয়া হোক। চলুন ট্রাম্পের জন্য তাঁর বাড়ির সামনেই লিখে দিই ‘ব্ল্যাক লাইভস মেটার’।

৯ জুলাই ম্যানহাটনের ফিফথ অ্যাভিনিউয়ে মেয়র ডি ব্লাজিওর সঙ্গে যোগ দেন নাগরিক আন্দোলনের নেতা আল শার্পটনসহ অন্য সংগঠকেরা। মেয়রসহ অন্যরা বড় পেইন্ট ব্রাশ দিয়ে সড়কপথে হলুদ রং দিয়ে লেখতে শুরু করেন, ‘ব্ল্যাক লাইভস মেটার’।

এ সময় ‘সেন্ট্রাল পার্ক ফাইভ’ নামের পরিচিত ১৯৮৯ সালে ভুলভাবে দণ্ডিত কৃষ্ণাঙ্গ ও ল্যাটিনো সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন। দণ্ডপ্রাপ্তির সময় এরা কিশোর ছিলেন।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত সপ্তাহে ‘ব্ল্যাক লাইভস মেটার’ ম্যুরাল স্থাপনের সমালোচনা করে বলেছিলেন, বিদ্বেষের প্রতীক স্থাপন করে অভিজাত ফিফথ অ্যাভিনিউকে অপমান করা হচ্ছে। তার জবাবে মেয়র ব্লাজিও বলেছেন, ‘আমরা অপমান করছি না । আমরা ফিফথ অ্যাভিনিউকে স্বাধীন করছি।’

গত সপ্তাহে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার সংবাদ প্রকাশিত হলে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এক টুইট বার্তায় বলেছিলেন, এতে নগরের অবস্থা আরও প্রতিকূল হবে। ‘ব্ল্যাক লাইভস মেটার’ স্লোগান শুনে কম্বলে মোড়ানো শূকর ছানাকে ভাজা করার কথা নিউইয়র্কের সাহসী পুলিশ সদস্যদের মনে হতে পারে। নগরের মেয়র পুলিশদের দমিয়ে রেখেছেন বলেও ট্রাম্প তাঁর টুইট বার্তায় বলেন। এমন বিদ্বেষের ম্যুরাল স্থাপনের অর্থ অপরাধ দমনে ব্যয় করার আহ্বান জানান ট্রাম্প।

মেয়র ব্লাজিও এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘এ ঘটনাটি সারা দেশের জন্য একটি বার্তা বহন করে। আমরা অবশ্যই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে এটা জানাতে চাই। কারণ তিনি কখনো এ তিনিটি শব্দকে শ্রদ্ধা করেননি। “ব্ল্যাক লাইভস মেটার” কথাটি শুনলেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এমন ভাবভঙ্গি করেন, এমন অবস্থা যেন আমেরিকায় বিরাজমান নয়।’ তিনি বলেন, ‘আমরা আমেরিকার ইতিহাস ও সমাজে কৃষ্ণাঙ্গদের অবদানকে শ্রদ্ধা জানাতে চাই।’

নিউইয়র্ক নগরের পাঁচটি বরোতেই ‘ব্ল্যাক লাইভস মেটার’ নামে সড়কের নামকরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই নগরভবনের কাছেই একটি সড়কের নামকরণ করা হয়েছে ‘ব্ল্যাক লাইভস মেটার ব্যুলেভার্ড’ নামে।

২৫ মে মিনিয়াপোলিসে পুলিশের হাতে কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর ঘটনায় পুরো আমেরিকায় বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। ‘ব্ল্যাক লাইভস মেটার’ স্লোগানে উত্তাল হয়ে উঠে পুরো আমেরিকা। এর জের ধরে পুলিশ সংস্কারের দাবি উঠে। নিউইয়র্কে দ্রুততার সঙ্গে পুলিশ সংস্কার আইন পাস করা হয়েছে। নগরের মেয়র পুলিশের তহবিল কমানোর ঘোষণা দিয়েছেন। ‘ব্ল্যাক লাইভস মেটার’ আন্দোলন আমেরিকার বৈষম্যের এক প্রতীকী স্লোগান হয়ে ওঠে। সব বর্ণের উদারনৈতিক মানুষ এই আন্দোলনে সম্পৃক্ত হতে দেখা যায়।