সেলুন খুললেও গ্রাহক-খরা

করোনাভাইরাসের বিরূপ প্রতিক্রিয়ায় সেলুন ব্যবসার মালিক ও কর্মচারীরা দিশেহারা। করোনা শুরু হলে বাংলাদেশি অধ্যুষিত জ্যাকসন হাইটস, জ্যামাইকা ও ব্রুকলিনসহ নগরের অন্যান্য এলাকার সব কটি সেলুন বন্ধ হয়ে যায়। চুল কাটাসহ সব ধরনের ক্ষৌরকর্ম ছিল পুরোপুরি বন্ধ। মালিক কর্মচারী দুপক্ষই প্রায় ৪ মাস ধরে অনেকটা আয়রোজগারহীন সময় কাটাচ্ছেন।

নিউইয়র্ক নগর কর্তৃপক্ষ দুই সপ্তাহ আগে সব ধরনের স্বাস্থ্য বিষয়ক সতর্কতা মেনে সেলুন খোলার অনুমতি দিলেও অধিকাংশ সেলুন এখনো সেবাগ্রহীতা শূন্য।

এ বিষয়ে মালিকদের অভিমত, সেবাগ্রহীতাদের অধিকাংশের ভেতর করোনাভাইরাস সংক্রমণের ভীতি এখনো জোরদার। এত সবের পরও কিছু কিছু পুরোনো কাস্টমার সেলুন এসে চুল কাটা শুরু করলেও পারিশ্রমিক নিয়ে শুরু হয়েছে নতুন দ্বন্দ্ব। চুল কাটানো বাবদ পারিশ্রমিক আগে বণ্টন করা হতো ৫০ শতাংশ হিসাবে। করোনার আগে সেলুনের চুল কাটানোর ব্যয় করতে হতো ১০ ডলার। যার অর্ধেক পেতেন ক্ষৌরকার, বাকি অর্ধেকের মালিক ছিলেন ব্যবসার মালিক। বর্তমানে একদিকে যেমন চুল কাটার ব্যয় বাড়িয়ে করা হয়েছে ১৫ ডলার, পাশাপাশি ক্ষৌরকারেরা আগের মতো ৫০ শতাংশের বদলে ৬০–৬৫ শতাংশ, কোন কোন ক্ষেত্রে ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত দাবি করছেন। বাকি ২৫ শতাংশ দিয়ে দোকানের লিজ মানি বা ভাড়াসহ বিদ্যুৎ বিল, পানির বিল পরিশোধ করে মালিকের নিজের আয় একেবারে হয় না বললেই চলে। তা ছাড়া সেলুনে কাস্টমারের সংখ্যা এখনো আশানুরূপ হয়ে ওঠেনি।

ব্রুকলিনের সেলুন ব্যবসায়ী নিখিল বাবু বিষয়টি নিয়ে আলাপের এক পর্যায়ে হতাশা প্রকাশ করে বলেন, করোনার এই দুঃসময়ে আমরা সবার উচিত ছিল একে অন্যের প্রতি সহমর্মিতা প্রদর্শনের।

জ্যাকসন হাইটের পরিচিত সেলুন মালিক বাবু সনাতন বলেন, এভাবে চলতে থাকলে আমাদের সবার বেঁচে থাকার জন্য অন্য পেশা ধরতে হবে। তবে বর্তমান বেকার থাকার সময়ে অনেক ক্ষৌরকার পরিচিত খরিদ্দারের বাসা বাড়িতে গিয়ে ক্ষৌরকর্ম করে আসছেন।

অনেকের মতে, বর্তমানের এই খারাপ সময়ে বাসা–বাড়িতে গিয়ে এরূপ ব্যক্তিগত সেবা দিয়ে কেউ কেউ দিন গুজরান করছেন।