চার সপ্তাহ তাঁরা কোথায় ছিলেন?

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প-ছবি: রয়টার্স
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প-ছবি: রয়টার্স

‘চার সপ্তাহ তাঁরা কোথায় ছিলেন? এখন ডেমোক্র্যাট পরিচালিত রাজ্যগুলোর জন্য তারা অর্থ সহযোগিতা চান। তখন তারা কঠিন অবস্থানে ছিলেন। এখন চাক শুমার আর ন্যান্সি পেলোসি সমঝোতা করতে চান। আমার ফোন নম্বর তারা জানেন!’

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এভাবে এক বিদ্রূপাত্মক টুইট করেছেন আজ সোমবার সকালে।

অর্থনৈতিক দুর্দশায় থাকা আমেরিকার মানুষের জন্য নাগরিক প্রণোদনা নিয়ে আইন প্রণেতাদের ব্যর্থ সমঝোতার উল্লেখ করে টুইট বার্তায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মন্তব্য করেন, আশ্চর্যজনকভাবে এভাবেই তারা এসব কাজ করে, তাই নয়কি?

আইনপ্রণেতাদের টানা সমঝোতার উদ্যোগ ভেস্তে গেলে কর্মহীনদের জন্য বর্ধিত বেকার ভাতার মেয়াদ বাড়িয়ে নির্বাহী আদেশ জারি করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সপ্তাহান্তে দেওয়া এই নির্বাহী আদেশে ৬০০ ডলার নয়, বরং সপ্তাহে কর্মহীনদের ৪০০ ডলার করে বেকার ভাতা দেওয়ার কথা বলেছেন তিনি।

নির্বাহী আদেশে ফেডারেল সরকারের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের ৭০ বিলিয়ন ডলারের তহবিল থেকে এ অর্থ দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। নির্বাহী আদেশে বলা হয়েছে, এই ৭০ বিলিয়ন ডলারের তহবিল ২৫ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসা পর্যন্ত কর্মহীনরা বর্ধিত বেকার ভাতা পাবেন। আমেরিকায় এখন তিন কোটির বেশি মানুষ কর্মহীন। কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই এই ৭০ বিলিয়ন থেকে তহবিল ২৫ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসবে বলে মনে করা হচ্ছে।

অঙ্গরাজ্যগুলো সরকার তহবিল থেকে ২৫ শতাংশ দেওয়া এবং অন্যান্য শর্ত থাকার কারণে প্রেসিডেন্টের এই নির্বাহী আদেশ জনগণকে প্রকৃতই কোন সুবিধা দেবে না বলে মনে করা হচ্ছে। এ নিয়ে নির্বাহী আদেশ জারির পরদিন থেকেই সমালোচকেরা সোচ্চার। সিনেটে ডেমোক্র্যাট দলের নেতা চার্লস শুমার বলেছেন, ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশটি হাস্যকর। আমেরিকার জনগণের প্রতি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কোন শ্রদ্ধাবোধ নেই।

স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জনগণের জন্য কোন বর্ধিত ভাতা দেননি। নানা জটিলতা সৃষ্টি করেছেন। তাঁর এই নির্বাহী আদেশটি আইন সম্মত নয়।

আইন প্রণেতারা এখন ওয়াশিংটন থেকে নিজ নিজ এলাকায় ফিরে গেছেন। আগামী দুই সপ্তাহ দুই দলের নেতারাই ব্যস্ত থাকবেন ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান দলের জাতীয় সম্মেলন নিয়ে। সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে আমেরিকার লেবার ডে। এই ছুটির পর আইনপ্রণেতারা আবার আলোচনায় মিলিত হবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। নাগরিকদের চরম দুর্দশা লাঘবে আরেকটি নাগরিক প্রণোদনা দিতে হোয়াইট হাউস, রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটরা নিজেদের মতো করে কথা বলে আসছেন। নাগরিকদের স্বার্থ নিয়ে তারা সমঝোতায় পৌঁছানোর চেষ্টাও করছেন নিজ নিজ অবস্থান থেকে। এখন সেপ্টেম্বরে আবার আলোচনা হবে—এমন অবস্থার দিকেই যাচ্ছে আমেরিকার নাগরিকদের আরেক দফা প্রণোদনার ভবিষ্যৎ।