ট্রাম্পের অভিবাসন নীতির পক্ষে আদালতের রায়

নতুন এই রায়ের কারণে ট্রাম্পের এ আদেশ কার্যকর হলে ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা অধিক ক্ষমতা পাবেন
নতুন এই রায়ের কারণে ট্রাম্পের এ আদেশ কার্যকর হলে ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা অধিক ক্ষমতা পাবেন

আমেরিকার ফেডারেল আদালত অভিবাসীদের বিরুদ্ধে আরেকটি রায় দিয়েছেন। রায়ে বলা হয়েছে, অভিবাসীদের গ্রিন কার্ড পাওয়ার জন্য পাবলিক চার্জ নিয়ম আরোপে ট্রাম্প প্রশাসনের নীতিমালা কার্যকর করতে পারবে। আদালতের আদেশে নিউইয়র্ক, কানেকটিকাট ও ভারমন্ট রাজ্যকে আপাতত বাদ রাখা হয়েছে। 

ট্রাম্প প্রশাসন গত বছর এক প্রশাসনিক সিদ্ধান্তে গ্রিন কার্ড পাওয়ার জন্য পাবলিক চার্জ নীতি কার্যকর করার উদ্যোগ গ্রহণ করে। এ নির্দেশের ফলে আমেরিকার অভিবাসীদের মধ্যে সরকারি সাহায্য গ্রহণ করলে নাগরিকত্ব অস্বীকার করার কথা বলা আছে। এ ছাড়া অর্থনৈতিক সচ্ছলতা নেই, এমন গ্রিন কার্ড আবেদনকারীদের আমেরিকায় প্রবেশও অস্বীকার করা হতে পারে। যদি ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা মনে করেন, আবেদনকারী আমেরিকায় প্রবেশের পর সরকারি সাহায্যের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়বেন—এমন আবেদনকারীকে ভিসা না দেওয়ার কথা বলা আছে এ নির্দেশনায়।

ট্রাম্প প্রশাসনের এমন নির্দেশনার পর আমেরিকাজুড়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া হয়। যেসব অভিবাসী স্বাস্থ্য সুবিধা, আবাসন সুবিধা, ফুড স্ট্যাম্পসহ সরকারি সুবিধা গ্রহণ করছেন, তাঁদের মাথায় হাত পড়ে। অনেকেই আমেরিকার অভিবাসন সুবিধার জন্য স্বাস্থ্য সুবিধা গ্রহণ বা ফুড স্ট্যাম্প গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে দেখা যায়। এ নিয়ে অভিবাসন অধিকার গ্রুপের পক্ষ থেকে মামলা হয়। নিউইয়র্ক, কানেকটিকাট ও ভারমন্ট রাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেলরা মামলা করলে আদেশের ওপর নিম্ন আদালতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।

গত বছরের অক্টোবর মাস থেকেই এ আদেশ কার্যকর করার কথা থাকলেও নিম্ন আদালতের একাধিক মামলায় এর কার্যকারিতা স্থগিত হয়ে পড়ে। এর মধ্যে করোনা মহামারির প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে সুপ্রিম কোর্টের এক আদেশে আসছে ফেব্রুয়ারি থেকে বিষয়টির কার্যকর করার কথা বলা হয়।

১২ আগস্ট ফেডারেল সার্কিট জজ পিটার হল এক প্যারার এক আদেশে ট্রাম্প প্রশাসনের ইমিগ্রেশন সংক্রান্ত এ আদেশ কার্যকর করার পক্ষে রায় দিয়েছেন। যদিও এ রায়ে নিউইয়র্ক, কানেকটিকাট ও ভারমন্টকে বাদ রাখা হয়েছে। সার্কিট আদালতের রায়টি অভিবাসীদের বিপক্ষে ট্রাম্প প্রশাসনের বিজয় হিসেবে দেখা হচ্ছে।

গত এপ্রিলে নিউইয়র্ক, কানেকটিকাট ও ভারমন্টের অ্যাটর্নি জেনারেলরা সুপ্রিম কোর্টের আদেশটি পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন। সুপ্রিম কোর্ট তাঁদের আবেদন প্রত্যাখ্যান করে নিম্ন আদালতে সুবিধা পাওয়ার জন্য আবেদন করার নির্দেশ দেন।

রাজ্য অ্যাটর্নি জেনারেলদের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্যসেবী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মতামতসহ বিষয়টি বাতিল করার আবেদন জানানো হয়েছিল। মহামারির সময়ে স্বল্প আয়ের অভিবাসীরা নিজেদের স্বাস্থ্যঝুঁকির সঙ্গে ইমিগ্রেশনের সুবিধা হারানো নিয়ে উৎকণ্ঠার কথা বলা হয়েছিল আবেদনে। সুপ্রিম কোর্ট এসব মতামত বিবেচনা করেই আগামী ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এর কার্যকারিতা পিছিয়ে দেওয়ার আদেশ দিয়েছিলেন।

সুপ্রিম কোর্টের ১২ আগস্টের আদেশের পর ইমিগ্রেশন এবং কাস্টম বিভাগের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। আদেশটি তিনটি রাজ্য ছাড়া কার্যকর করতে এখন ইমিগ্রেশন বিভাগের কোনো বাধা নেই। ট্রাম্পের এ আদেশ কার্যকর হলে ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা অধিক ক্ষমতা পাবেন। ইমিগ্রেশনের জন্য আবেদনকারী সম্ভাব্য পাবলিক চার্জে পড়ার ধারণা থেকেই আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হতে পারে।

পারিবারিক ভিসার আবেদনেও আবেদনকারীর সম্পদ, শিক্ষাগত বা কারিগরি যোগ্যতা, বয়স, স্বাস্থ্যসহ নানা বিষয় বিবেচনা করে ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা ভিসা আবেদন প্রত্যাখ্যান করতে পারবেন।