পুরস্কার পেল ‘কালাশনিকভের গোলাপ’ ও ‘উয়ারী বটেশ্বর: শেকড়ের সন্ধানে’

১৪১৮ বাংলা সনের বাংলাদেশি প্রকাশনা থেকে প্রকাশিত বইয়ের সৃজনশীল শাখায় ওয়াসি আহমেদের গল্পসংকলন কালাশনিকভের গোলাপ এবং মননশীল শাখায় সুফি মোস্তাফিজুর রহমান ও মুহাম্মদ হাবিবুল্লা পাঠানের গবেষণাগ্রন্থ উয়ারী বটেশ্বর: শেকড়ের সন্ধানে ‘প্রথম আলো বর্ষসেরা বই’-এর পুরস্কার পেয়েছে। নয় বছর ধরে প্রথম আলোর উদ্যোগে এ পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে।ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের সভাপতিত্বে সদ্যপ্রয়াত লেখক আবদুশ শাকুর, কবি বেলাল চৌধুরী, অধ্যাপক আহমদ কবির ও লেখক শাহীন আখতারের সমন্বয়ে গঠিত বিচারকমণ্ডলী পুরস্কারের জন্য বই দুটি চূড়ান্তভাবে নির্বাচন করে। ২২ জানুয়ারি সন্ধ্যায় রূপসী বাংলা হোটেলের বলরুমে প্রথম আলো এই তিন লেখককে আনুষ্ঠানিকভাবে পুরস্কৃত করবে। প্রকাশনা সংস্থা শুদ্ধস্বর কালাশনিকভের গোলাপ এবং প্রথমা প্রকাশন উয়ারী বটেশ্বর: শেকড়ের সন্ধানে বইটি প্রকাশ করেছে।ওয়াসি আহমেদ কর্মজীবনে ছিলেন সরকারি কর্মকর্তা। বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশনের সদস্য থাকাকালে তিনি স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ করেন। বর্তমানে তিনি দৈনিক ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস-এ সম্পাদকীয় উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করছেন। সাহিত্যে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে এর আগে আলাওল সাহিত্য পুরস্কার ও জেমকন সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। তাঁর অন্যান্য বই—উপন্যাস: মেঘপাহাড়, রৌদ্র ও ছায়ার নকশা, শীতপাখিরা; ছোটগল্প: ছায়াদণ্ডি ও অন্যান্য, বীজমন্ত্র, তেপান্তরের সাঁকো, ত্রিসীমানা, শিঙ্গা বাজাবে ইস্রাফিল; কিশোর উপন্যাস: এক যে ছিলাম আমি।সুফি মোস্তাফিজুর রহমান জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক। মাঠপর্যায়ের এই প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষক ‘ঐতিহ্য অন্বেষণ’ নামের একটি প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণাকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেছেন। তাঁর অন্য বই আর্কিওলজিক্যাল ইনভেস্টিগেশন ইন বগুড়া ডিস্ট্রিক্ট (ফ্রম আরলি হিস্টোরিক টু আরলি মিডিভ্যাল পিরিয়ড )। তিনি প্রত্নতাত্ত্বিক ঐতিহ্য এবং আরকিওলজিক্যাল হেরিটেজ (কালচারাল সার্ভে অব বাংলাদেশ সিরিজ-১) শীর্ষক দুটি গ্রন্থ সম্পাদনা করেন। ২০১২ সালে তিনি বাংলাদেশ ট্যুরিজম ফাউন্ডেশন পুরস্কার লাভ করেন।মুহাম্মদ হাবিবুল্লা লোকসাহিত্য ও প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন সংগ্রহ এবং বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করছেন দীর্ঘদিন ধরে। জীবনব্যাপী অনুসন্ধানের মাধ্যমে উয়ারী-বটেশ্বর অঞ্চল থেকে সংগৃহীত দুর্লভ প্রত্ননিদর্শন নিয়ে নিজের বাড়িতে একটি সংগ্রহশালা গড়ে তুলেছেন। তাঁর অন্যান্য বইয়ের মধ্যে রয়েছে: নরসিংদীর কবি ও সাহিত্যিক, নরসিংদীর লৌকিক খেলাধুলা, প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন: উয়ারী বটেশ্বর, বাংলাদেশের লোককাহিনি (প্রথম খণ্ড নরসিংদী, দ্বিতীয় খণ্ড নেত্রকোনা ও তৃতীয় খণ্ড ব্রাহ্মণবাড়িয়া), নরসিংদী গাজীপুরের লোকঐতিহ্য: বিবাহ ও মেয়েলী ছড়াগীত, বাংলাদেশের ভাট কবি ও কবিতা। ২০০৯ সালে তিনি বাংলা একাডেমীর অনারারি ফেলো নির্বাচিত হন। জসীমউদ্দীন পরিষদ তাঁকে সম্মাননা দেয় ১৪০১ বঙ্গাব্দে।১৪১০ বাংলা সন থেকে বর্ষসেরা বইয়ের পুরস্কার দিয়ে আসছে প্রথম আলো। পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের তালিকা: ১৪১০ সনে সৃজনশীল শাখায় শাহীন আখতারের উপন্যাস তালাশ ও মননশীল শাখায় বর্ষসেরা বইয়ের পুরস্কার পায় আবদুশ শাকুরের প্রবন্ধগ্রন্থ গোলাপসংগ্রহ।১৪১১ সনে সৃজনশীল শাখায় সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের গল্পগ্রন্থ প্রেম ও প্রার্থনার গল্প এবং মননশীল শাখায় সেরা বই হয় যতীন সরকারের আত্মস্মৃতি: পাকিস্তানের জন্মমৃত্যু-দর্শন ও হায়দার আকবর খান রনোর আত্মজীবনী শতাব্দী পেরিয়ে।১৪১২ সনে সেরা বইয়ের পুরস্কার পায় সৃজনশীল শাখায় হাসান আজিজুল হকের উপন্যাস আগুনপাখি ও মননশীল শাখায় গোলাম মুরশিদের প্রবন্ধগ্রন্থ হাজার বছরের বাঙালি সংস্কৃতি।১৪১৩ সনে সৃজনশীল শাখায় আহমাদ মোস্তফা কামালের গল্পগ্রন্থ ঘরভরতি মানুষ অথবা নৈঃশব্দ ও মননশীল শাখায় পুরস্কার পায় দ্বিজেন শর্মার প্রবন্ধগ্রন্থ কুরচি তোমার লাগি।১৪১৪ সনে সৃজনশীল শাখায় আলতাফ হোসেনের কাব্যগ্রন্থ পাখি বলে ও মননশীল শাখায় শরীফ খানের প্রবন্ধগ্রন্থ বাংলাদেশের পাখি পুরস্কার পায়।১৪১৫ সনে সেরা বইয়ের পুরস্কার পায় সৃজনশীল শাখায় শহীদুল জহিরের উপন্যাস আবু ইব্রাহীমের মৃত্যু ও মননশীল শাখায় সাইমন জাকারিয়ার প্রবন্ধগ্রন্থ বাংলাদেশের লোকনাটক: বিষয় ও আঙ্গিক-বৈচিত্র্য।১৪১৬ সনে সৃজনশীল শাখায় পুরস্কার পায় হরিশংকর জলদাসের উপন্যাস দহনকাল ও মননশীল শাখায় সাইম রানার প্রবন্ধগ্রন্থ বাংলাদেশের গণসংগীত: বিষয় ও সুরবৈচিত্র্য। ১৪১৭ সনে সৃজনশীল শাখায় অদিতি ফাল্গুনীর গল্পগ্রন্থ অপৌরুষেয় ১৯৭১ ও মননশীল শাখায় সনৎকুমার সাহার প্রবন্ধগ্রন্থ কবিতা-অকবিতা রবীন্দ্রনাথ বর্ষসেরা বইয়ের পুরস্কার পায়।