আজব বোতাম

আমি রুশনি। আজ আমার হঠাৎ অর্পার কথা মনে পড়ল। ওকে দেখতে খুব ইচ্ছা করছে। অর্পা আমার বন্ধু। ক্লাস সেভেনে আমরা একসঙ্গে পড়তাম। এখন পড়ি ক্লাস নাইনে। ক্লাস সেভেনে অর্পার সঙ্গে যখন শেষ দেখা হয়েছিল, তখন ও বলেছিল, ‘আমরা সবাই গ্রিনল্যান্ডে চলে যাচ্ছি।’ গ্রিনল্যান্ড গেছে তো কী হয়েছে? এমন একটা সময়ের কথা বলছি, যখন পৃথিবী অনেক এগিয়ে গেছে। চাইলেই আমি অর্পাকে আমার কাছে নিয়ে আসতে পারি।

বিছানায় ক্লিক করলাম। সঙ্গে সঙ্গে অর্পা আমার সামনে এসে পড়ল। দুজনে অনেক গল্প করলাম। তখন অর্পার মনে পড়ল, ওর স্কুল শুরু হয়ে গেছে। অর্পা চলে গেল। আবার একা হয়ে গেলাম।

আমার স্কুল ছুটি। একটু মহাকাশ থেকে ঘুরে এলে কেমন হয়! আমি একটা সৌরজগতের ছবি নিয়ে নেপচুন গ্রহের ওপর ক্লিক করলাম। সঙ্গে সঙ্গে পৌঁছে গেলাম নেপচুন গ্রহে। কিন্তু সেখানে বেড়াতে গিয়েও কোনো মজা লাগল না। কারণ সেখানকার এলিয়েনগুলোর দুই চোখ। আমার দুই চোখ ভালো লাগে না। আমি কত গ্রহে বেড়াতে গিয়েছি। ১ চোখওয়ালা এলিয়েন দেখেছি, ১০ চোখওয়ালা এলিয়েনও দেখেছি। কিন্তু দুই চোখওয়ালা এলিয়েনগুলো কেমন যেন।

নাহ, এখানে বেশিক্ষণ থাকা যাবে না। যখনই চলে আসব ভাবছি, হঠাৎ কে যেন আমার কাঁধে হাত রাখল। পেছনে তাকালাম, কাউকে দেখলাম না। হঠাৎ দেখি একটি দুই চোখওয়ালা এলিয়েন। আমি অবাক হয়ে গেলাম।

তখন এলিয়েনটা বলল, ‘কে তুমি?’

বললাম, ‘আমি রুশনি।’

‘এখানে কী চাই? কেন এসেছ?’

‘আগে তুমি বলো। তুমি তো একটু আগেও ছিলে না। হঠাৎ কোথা থেকে এলে?’

ও বলল, ‘আমার এই জামায় একটা বোতাম আছে। বোতামে টিপ দিলেই আমি অদৃশ্য হয়ে যাই। আবার টিপ দিলেই চলে আসি। তোমার যদি এটা লাগে, তাহলে নিতে পারো। আমার কাছে অনেক আছে।’

সে আমাকে বোতামটা দিয়ে বলল, ‘নাও। জামায় লাগিয়ে নাও।’

বোতামটা জামায় লাগিয়ে আমি টিপ দিলাম আর অদৃশ্য হয়ে গেলাম। আবার টিপ দিতেই দৃশ্যমান হলাম।

এরপর আমি আমার নিজ গ্রহে ফিরে এলাম। তখন থেকে সব সময় বোতামটা আমার জামায় লাগানো থাকত।

একদিন স্কুলে গেছি। আমি আর আমার কয়েকজন বন্ধু ভাবছিলাম কী করা যায়। একজন বলল, ‘চলো, লুকোচুরি খেলি।’

আমি বললাম, ‘এটা তো বাচ্চাদের খেলা।’

ওরা বলল, ‘তাতে কী হয়েছে? অনেক দিন তো খেলিনি।’

খেলা শুরু হলো। একজন গুনতে শুরু করল। সবাই লুকাল। গোনা শেষ হলে সে একে একে সবাইকে খুঁজে বের করে ফেলল। কিন্তু আমাকে আর পেল না। অথচ আমি তার সামনেই দাঁড়িয়ে ছিলাম, আর টুক করে বোতামটা টিপে দিয়েছিলাম।


চতুর্থ শ্রেণি, সাউথ পয়েন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা