আমাদের চিরকালীন বই-আনন্দের ভেলা

এবারের বইমেলার দুয়ার খোলা মুহূর্তেই জার্নিম্যান স্টলে আড্ডা দিচ্ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। তারপর সেখানে গিয়ে উপস্থিত হলেন বাংলা ভাষার দুই বিশিষ্ট লেখক বুদ্ধদেব বসুর কন্যা মীনাক্ষী দত্ত ও জ্যোতির্ময় দত্ত। এসেছেন জাতীয় কবিতা উৎসবে, কিন্তু এক ফাঁকে একুশের বইমেলা ঘুরে না গেলে কি হয়! বলছিলেন তাঁরা পিতৃমাতৃভূমি বাংলাদেশে বইয়ের এমন বড় উৎসব তাঁদের মনের মাঠে বইয়ে দিচ্ছে আনন্দের ঢল। বইয়ের স্টলে সাধারণ পাঠক থেকে দেশের শিক্ষামন্ত্রীর উপস্থিতিও তাঁদের দুজনকে আনন্দ দিয়েছে ঢের। এই তো বাংলাদেশ, যে দেশের মানুষ বিশ্বাস করে জ্ঞানের বিহনে প্রেম নেই কোনো।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ—সবাই একুশের বইমেলাকে বলে থাকেন ‘প্রাণের মেলা’। সংগত এই বিশেষণ, কারণ প্রাণে প্রাণে এমন যোগ পৃথিবীর খুব কম মেলাতেই সুলভ। এই মেলা ক্রমেই নিজেকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে, ব্যাপ্ত হচ্ছে প্রত্যাশার দিগন্ত অনুপাতে; পুরোটা না হলেও কিছুটা তো বটে। বইমেলা কোনো অনড় জায়গায় আটকে নেই—প্রাণের ধর্মও তো তাই; সততপ্রবাহিনী। একসময় ভাবা যায়নি যে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণের বাইরে মেলাটি বিস্তৃত হবে। আর আজ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিশাল প্রান্তরে গিয়েও প্রতিবছর মেলা তার পরিসর বিস্তৃত করতে চাইছে। তবে আয়তনের বিস্তৃতির চেয়ে বেশি জরুরি গুণগত ঋদ্ধি।
‘বিজয়: ১৯৫২ থেকে ১৯৭১ নবপর্যায়’—এই প্রতিপাদ্যকে ধারণ করে শেষ হলো ৩৫তম অমর একুশে বইমেলা। বলা ভালো, এই প্রতিপাদ্য অনুযায়ীই সাজানো হয়েছিল পুরো মেলাঙ্গন। স্বাধীনতা স্তম্ভের সঙ্গে বইমেলা—মাঠের কোনো সীমানা প্রাচীর খাড়া করা হয়নি এবার; ফলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বিদ্যমান নিসর্গ ও স্থাপত্যকাঠামোর সঙ্গে মেলায় আগত মানুষের মর্মের যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা হয়েছে।
সরকারপ্রধানের পাশাপাশি বইমেলার উদ্বোধনে বিশ্ববরেণ্য মনীষার উপস্থিতির বিষয়টি এক দশক যাবৎ এক ইতিবাচক রেওয়াজ হয়ে উঠেছে। এ বছর যেমন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে মিসরের লেখক–সাংবাদিক মোহসেন আল-আরিশি এবং কবি শঙ্খ ঘোষ ছিলেন মঞ্চ আলো করে। উদ্বোধনী বক্তৃতায় শঙ্খ ঘোষের মিত-গহন কথামালা ছুঁয়ে গেছে আমাদের সবাইকে, নতুন করে স্মরণ করিয়ে দিয়েছে একুশের সীমান্তভেদী আবেদনকে:
কৃতজ্ঞতা জানাই সেই একুশের স্মৃতিকে, যার মধ্য দিয়ে আমাদের প্রিয় বাংলা ভাষার এত দূর বিশ্বজনীন মর্যাদা আজ। ১৯১৩ সালের বিশ্বসাহিত্য জগতে রবীন্দ্রনাথের আবির্ভাব, ১৯৫২ সালে ঢাকা শহরে একুশে আন্দোলন, ১৯৭১-এ নতুন দেশ হিসেবে বাংলাদেশের জন্ম আর ১৯৯৯ সালে আন্তর্জাতিক ভাষা দিবস হিসেবে সেই একুশে ফেব্রুয়ারিকে বিশ্বজগতের স্বীকৃতি—আমার কাছে, আর আশা করি, আরও অনেকেরই কাছে এই চারটি মুহূর্ত হলো আমাদের ভাষার জন্য এক জয়গর্বের মুহূর্তে।
সেই গর্ব নিয়ে আজ উচ্চারণ করতে চাই, পঞ্চাশের দশকে লেখা সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের একটি উচ্চারণ, ‘ওপারে যে বাংলাদেশ/এপারেও সে বাংলা।’ শুধু ঢাকায় দাঁড়িয়ে কথাটা বলছি বলে লাইনটা একটু ঘুরিয়ে নিতে চাই। এপারে যে বাংলাদেশ ওপারেও সেই বাংলা।
একটি কথা ভেবে বিস্মিত হই মাঝেমধ্যে যে কত আগেই তৈরি হয়ে গিয়েছিল এই ‘বাংলাদেশ’ নামটি। সেই বাংলাদেশের সমস্ত স্বপ্ন সফল হয়ে উঠবে একদিন, এই পরম প্রত্যাশা নিয়ে আজ এই গ্রন্থমেলার উদ্বোধন হোক।
এবারের মেলায় তাৎপর্যপূর্ণ কিছু সংযোজন মেলার প্রস্তুতিপর্ব থেকে চোখে পড়েছে সবার। অনলাইনে মেলার স্টল বরাদ্দের আবেদনপত্র বিতরণ-গ্রহণ এবং ভাড়ার অর্থ পরিশোধের বিষয়টি এ ক্ষেত্রে উল্লেখনীয়। যদিও এ বিষয়ে সব পক্ষের আরও আগ্রহ প্রত্যাশিত।
বইমেলার ২৮ দিনে প্রায় সাড়ে চার হাজার নতুন বইয়ের প্রকাশ নিশ্চয় প্রমাণ করে ‘মুদ্রিত বইয়ের ভবিষ্যৎ অন্ধকার’—এ কথাটা অন্তত বাংলাদেশের ক্ষেত্রে বলা যাবে না। তবে সংখ্যাই যে সমৃদ্ধির সূচক নয়, সেটাও আমরা মানি। তাই যেনতেন প্রকারে সম্পাদনাবিহীন একটি বই প্রকাশ এবং তার মৌসুমি প্রচারে লিপ্ত হওয়াটা আশঙ্কার বিষয় বৈকি। প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যাচ্ছে, প্রকাশিত বইয়ের মধ্যে কবিতা বই–ই সংখ্যা শীর্ষে অবস্থান করছে, এক মেলায় দেড় হাজার কবিতা বইয়ের প্রকাশ! মেলায় মানুষ যে কেবল নতুন বই-ই খুঁজে তা নয়, ধ্রুপদি জ্ঞানবিশ্বের প্রতি আগ্রহও দেখেছি অপার। নয় তো, বাংলা একাডেমির প্রতিটি বিক্রয়কেন্দ্রে পুরোনো বইয়ের সন্ধানে ক্রেতাপাঠকের সর্বোচ্চ ভিড় ও বিক্রয় লক্ষ করা যেত না। একাডেমি গল্প, কবিতা, উপন্যাস বা বিজ্ঞান কল্পকাহিনির বই সেভাবে প্রকাশ করে না; গত ছয় দশকে একাডেমি প্রকাশিত গবেষণা, অনুবাদ, রচনাবলি, জীবনী ইত্যাদি বইয়ের যে সুনির্বাচিত প্রকাশনা গড়ে তুলেছে, তার প্রতি বিপুল আগ্রহ পাঠকের বৈচিত্র্যপিপাসারও প্রমাণবহ। বইমেলায় আর কখনই দেখা যাবে না শামসুর রাহমান, সৈয়দ শামসুল হক, আল মাহমুদ, শওকত আলী, হুমায়ূন আহমেদ কিংবা হুমায়ুন আজাদকে, কিন্তু মেলা ঘুরে দেখা গেছে ফিরে ফিরে তাঁদের পুরোনো বইপত্রের প্রতি সব বয়সী পাঠকের আগ্রহ এখনো নবীন।
এবারের বইমেলায় বাংলা একাডেমি মাসব্যাপী সেমিনারে শ্রোতাদের আগ্রহ ছিল অন্য যেকোনো বারের তুলেনায় বেশি। আলোচনার বিষয়বস্তুও ছিল লক্ষ করার মতো। সম্ভবত এই আয়োজনেই সূত্রপাত ঘটল উনসত্তরের গণ–অভ্যুত্থান এবং ‘বঙ্গবন্ধু’ অভিধার সুবর্ণজয়ন্তী-বিষয়ক একাডেমিক আলোচনার। এ ছাড়া প্রখ্যাত সব বাঙালি মনীষা—যেমন সিকান্দার আবু জাফর, সুভাষ মুখোপাধ্যায়, মুহম্মদ আবদুল হাই, আবদুল হক, অমিয়ভূষণ মজুমদার, বুলবুল চৌধুরী, মনিরউদ্দীন ইউসুফ প্রমুখকে যেমন স্মরণ করা হয়েছে শতবর্ষের আলোয়, তেমনি সম্প্রতি প্রয়াত কবি-লেখক সৈয়দ শামসুল হক, রফিক আজাদ, বেলাল চৌধুরী, নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, সৈয়দ জাহাঙ্গীর, মৃণাল সেন, আমজাদ হোসেন, আনোয়ার হোসেনকে স্মরণ করা হয়েছে শ্রদ্ধায়-ভালোবাসায়। প্রকাশের শতবর্ষে ফিরে দেখা হয়েছে সওগাত ও বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য পত্রিকাকে। আলোচনার টেবিল থেকে বাদ যায়নি বইমেলা, বাংলাদেশের প্রকাশনা কিংবা বলধা গার্ডেনও। এবার একুশে বক্তৃতা প্রদান করেছেন একজন ভাষাসংগ্রামী রফিকুল ইসলাম এবং সে অনুষ্ঠানে সভাপতিত্বও করেছেন আর একজন ভাষাসংগ্রামী আনিসুজ্জামান। প্রথমবারের মতো ছিল প্রতিদিন কবিকণ্ঠে কবিতা পাঠ ও বাচিকশিল্পীদের পরিবেশনা। সাংস্কৃতিক আয়োজনে সংগীত, নৃত্য, নাটকের পাশাপাশি বইমেলা বিস্মৃত হয়নি এ দেশের ঐতিহ্যবাহী যাত্রাশিল্পকে।

এ বছর মেলার অন্যতম আকর্ষণবিন্দু ছিল ‘লেখক বলছি’ মঞ্চ। প্রতিদিন এই মঞ্চে পাঁচজন করে নবীন-প্রবীণ লেখক তাঁদের নতুন প্রকাশিত বই নিয়ে কথা বলেছেন, আগ্রহী শ্রোতাদের জিজ্ঞাসার উত্তর দিয়েছেন, যা লেখক-পাঠক মৈত্রীবন্ধন সৃজনে হয়েছে সহায়ক। ‘রাইটার্স মিট’-এর এমন প্রস্তাব বহু আগে থেকেই করা হচ্ছিল। ২০১৯-এর একুশে মেলায় এর যে শুভসূচনা ঘটল তা ভবিষ্যতে আরও বর্ণিল হবে বলে আশা করা যায়।
বইমেলার সংবেদনশীল চরিত্রটির কথাও উল্লেখ করতে চাই আমরা। হুইলচেয়ার সেবার মাধ্যমে শারীরিকভাবে অসুবিধাগ্রস্ত মানুষকে অবাধে মেলায় প্রবেশ এবং ঘুরাফেরার সুযোগ সৃষ্টির আর শিশুদের জন্য মাতৃদুগ্ধসেবা প্রদানের বিষয়টিও বিশেষভাবে উল্লেখ করার মতো।
শিশু–কিশোরদের জন্য মেলায় নানান নৈমিত্তিক আয়োজনের সঙ্গে এবার যুক্ত ছিল কৈশোর–তারুণ্যের বইমেলার সরব উপস্থিতি। মেলায় ঘুরতে গিয়ে দেখেছি প্রিয় লেখকদের সঙ্গে শিশু–কিশোরেরা তাদের প্রিয় বই নিয়ে কথা বলছে, বিনিময় করছে কোমল মনে গুঞ্জরিত ভাবনা। তবে শিশু–কিশোরদের প্রসঙ্গ এল বলে একটি বিষয় না বললেই নয়। বইমেলা শুরুর পরপর শুরু হয়েছে মাধ্যমিক পরীক্ষা। আমাদের প্রশ্ন এই পরীক্ষাটি কি বইমেলার আগে-পরে হতে পারত না? দেশের লাখ লাখ বইপ্রেমী ছাত্রছাত্রী বইমেলার আনন্দ থেকে পরীক্ষাজনিত কারণে যে অনেকটাই বঞ্চিত হয়েছে, সেটা আর উল্লেখের অপেক্ষা রাখে না। আমরা আশা করি, ভবিষ্যৎ-বছরে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে সুদৃষ্টি দেবেন যাতে সব স্তরের শিক্ষার্থীর সঙ্গে বইমেলার প্রাণের যোগ প্রতিষ্ঠিত হয়।
বাংলা একাডেমি সাপ্তাহিক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বইমেলাকেন্দ্রিক উদ্ভূত সমস্যা নিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছে। খোলামেলা আলোচনা করেছেন একাডেমির মহাপরিচালক কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী, সবাইকে সঙ্গে নিয়ে খোঁজা হয়েছে সমাধানের সড়ক।
বইমেলাকে উপলক্ষ করে প্রতিবছর যে বিপুলসংখ্যক লেখক-পাঠক প্রবাস থেকে দেশে আসেন তার একটা শুমারিও হতে পারে। এবার মেলা শুরুর প্রহর থেকেই যুক্তরাষ্ট্র থেকে জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত, পূরবী বসু, হাসান আলআবদুল্লাহ, আহমাদ মাযহার, বিশ্বজিৎ সাহা, জার্মানি থেকে নাজমুন্নেসা পিয়ারি, কানাডা থেকে সালমা বাণী, লুৎফর রহমান রিটন, সাইফুল্লাহ মাহমুদ দুলাল, ফেরদৌস নাহার, জসীম মল্লিক, যুক্তরাজ্য থেকে সাগুফতা শারমীন তানিয়া, মালয়েশিয়া থেকে আফসানা বেগমকে আসতে দেখলাম এই নগর ঢাকায়। ব্যক্তিগত ব্যস্ততার কারণে আসতে পারেননি কানাডা থেকে ইকবাল হাসান, যুক্তরাজ্য থেকে শামীম আজাদ, জাপান থেকে প্রবীর বিকাশ সরকার এবং হয়তো এমন আরও অনেকেই। কিন্তু ফেসবুকে মেলাকে কেন্দ্র করে তাঁদের সপ্রাণ পোস্ট প্রমাণ করছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ছাপিয়ে বইমেলা ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্ববাঙালির অন্তরের অঙ্গনে। মেলা হচ্ছে ঢাকায়। আর উৎসবের ঢাকের বাদ্যি ছড়িয়ে পড়েছে দেশের কোনায় কোনায়। তাই ফেব্রুয়ারি মাসেই একুশে বইমেলার আদলে এবার মেলা জমে উঠেছে চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, জামালপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া এবং আরও বহু জায়গায়।
ফেব্রুয়ারির শেষ তারিখে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের নির্বাচন-তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। নির্বাচন প্রস্তুতি সময়সহ নির্বাচন মওসুমে সে অঞ্চলের মানুষ মেলায় আসতে কিছুটা হলেও বিঘ্ন অনুভব করেছেন নিশ্চয়ই, বিশেষত নির্বাচনের দিন। নির্বাচন কমিশনও যেন ভবিষ্যতে এ বিষয়টি মাথায় রাখেন, আমরা সে আশা করতেই পারি। কারণ আমরা চাই দেশের একজন বইপ্রেমী নাগরিকও যেন বইমেলার আনন্দ-হিল্লোল থেকে বঞ্চিত না হন।
বইমেলা শেষ হয়ে গেল। মেলাকেন্দ্রিক পুরোনো প্রত্যাশাগুলো নতুন করে মনে এল। এত বড় একটি মেলার জন্য এখন জরুরি হয়ে পড়েছে স্থায়ী মাঠ। সেই সঙ্গে প্রায় চার দশক বহমান এই বইমেলার প্রামাণ্য-সচিত্র একটি ইতিহাসগ্রন্থ প্রকাশ পাওয়াও জরুরি, যাতে এই মহান জাতীয় জ্ঞান-উৎসবের সঙ্গে পরিচয় ঘটতে পারে সবার। আর লিটল ম্যাগাজিন চত্বরকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্থানান্তর এবং একে প্রকৃতই লিটল ম্যাগাজিনময় করে তোলাও প্রয়োজন।
প্রকৃতির িললা েবাঝা বড় দায়। এবারের বই বসন্তে হঠাৎ বৃষ্টি এলমেল করে িদল অনেক িকছুই। তবে বৃিষ্টতে কাকভেজা হয়েও ছেড়ে বুড়ো—নানা বয়সের পাঠককে যেভাবে ছুটতে দেখা গেছে বইয়ের তৃষ্ণায়, তাতে বইভিত্তিক বাংলাদেশ নিয়ে আমরা আশা করতেই পারি। এক মাসের বই উৎসব আমাদের জীবনকে যুক্ত করুক চিরকালীন বই-আনন্দের ভেলায়।