মনের ক্যানভাস : আরাফাত শাকুর

নতুন কিছু না। ও ব্যাগে জামা ভরছে, আজও ঝগড়া হয়েছে। তবে মুখ দেখে মনে হচ্ছে, আজকের ব্যাপারটা অন্য দিনের মতো নয়। 

তারপরও আমি প্রতিবারের মতো হাসি-হাসি মুখে জিজ্ঞেস করলাম, যাচ্ছ তাহলে?
ও উত্তর দিল ঝকঝকে চাহনি হেনে, কী মনে হয়? আমাকে দেখে মজা করছি মনে হচ্ছে?
আমি কিছু একটা বলতে গিয়েও থেমে গেলাম।
ব্যাগ হাতে তুলে নিয়ে দরজার দিকে এগোতে গিয়েও মনে হলো থামল, ফিরে তাকাল, ফ্রেমে বাঁধানো আমাদের ছবিটা হাতে নিল।
দেখে হাসলাম আমি। আমার দিকে তাকিয়েই রাগী ভঙ্গিতে বলল, নিব না। তুমিই দেখো এটা।
আমি বললাম, আমার লাগবে না। আমার মনের মধ্যে তোমার অনেক ছবি আঁকা আছে। ওই ফ্রেমে বাঁধানো ছবি না হলেও আমার চলবে।
আমাকে কারও মনে রাখার দরকার নাই! সব তো শেষ করেই যাচ্ছি!
আমি হাত ধরতে গিয়েও জায়গাতেই দাঁড়ায়ে থাকলাম।

ও চলে যাবার পর মনে হলো, কী করলাম আমি! ও তো সত্যি চলে গেল। শরীর কাঁপতে শুরু করল আমার। আগের যাওয়াগুলো কিছুতেই এ রকম ছিল না!

খালি ঘরে আমি একা। রূপা এখন নেই। কতক্ষণ খাটে স্থানু হয়ে বসে আছি মনে করতে পারব না। রূপা আমার বুকজুড়ে আছে। ওকে ছাড়া এক দিনও চলবে না আমার। দ্রুত কাপড় পরে নিলাম।
ঘড়ি দেখলাম, ৬টা ১৪। দুপুর গড়িয়ে কখন সন্ধ্যা হয়ে গেছে। রূপা চলে গেছে কতক্ষণ হবে! ঘরের বাতি জ্বালানো হয়নি। এ কাজগুলো রূপাই করে। দরজা খুলে বাইরে এসে বুঝলাম, এই বাতিটাও জ্বালানো হয়নি। পুরো সিঁড়ি অন্ধকার। হঠাৎ মনে হলো, সিঁড়ির কোণের দিকে কেউ যেন বসে আছে!
একটু এগিয়ে গিয়ে দেখি, রূপা! গুটিয়ে বসে আছে।
আরেহ! বিস্ময়, আনন্দ চেপে রাখতে পারলাম না, যাওনি?
রূপা উঠে দাঁড়িয়ে আমাকে অগ্ৰাহ্য করে ঘরে ঢুকতে ঢুকতে বলল, আজকে যাওয়ার ইচ্ছা নেই।
আমি দাঁড়িয়েই আছি, বুকের হাজারটা বাদ্যি বাজছে। খুশির গলায় বললাম, খাবার নিয়ে আসি।
লাগবে না। নিয়ে এসেছি। আপনার প্রিয় খাবার।
ঘরে ঢুকে দাঁড়াতেই যেন ঢেউ হয়ে ছুটে রূপা। বুকে মুখ গুঁজে দিয়ে বলল, আমাকে ছাড়া তো একা থাকতে পারবে না। তাই ফিরে এসেছি। এত ভালোবাসো কেন?

আমি ছদ্মবিস্ময়ের মুখ করে বললাম, আমি তোমাকে ভালোবাসি! কে বলল?
রূপা মুখ খোলার আগেই আমার ঠোঁট চেপে বসেছে ওর অধরের ওপর।
না। আমি তোমার নিশ্বাস ভালোবাসি।

নিয়ম: ১০০ শব্দের গল্প লিখুন প্রথম আলোর সাহিত্য অনলাইন ম্যাগাজিন অন্যআলো ডটকমের জন্য। নিজের ফেসবুকের টাইমলাইনে পাবলিক করে প্রকাশ করুন। #শশব্দগল্প #ছোট্টগল্প #অন্যআলো দিতে পারেন। এই তিনটা হ্যাশট্যাগের যেকোনো একটা থাকলে আমরা ধরে নেব এটা আপনারা অন্যআলো ডটকমে প্রকাশ করতে দিতে রাজি আছেন। আপনি গল্প লিখে ফেসবুকের সাত বন্ধুকে চ্যালেঞ্জ জানাবেন। তাঁদের ট্যাগ করবেন। যাঁদের ট্যাগ করবেন, তাঁরা আবার শত শব্দের একটা গল্প নিজেদের টাইমলাইনে পোস্ট করবেন। আর নিয়মকানুনগুলো গল্পের নিচে কপি পেস্ট করে দেবেন। পেশাদার লেখক হতে হবে, এমন নয়। বরং নতুন প্রতিভা, নতুন লেখক লেখা শুরু করুক...।

কেউ সরাসরিও লেখা পাঠাতে পারেন:
[email protected]
[email protected]