কাহ্নপাদ হায়দারের কবিতা
>
‘আট মিনিট ছেচল্লিশ সেকেন্ড’ নামের এই কবিতার প্রেক্ষাপটে রয়েছে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের কৃষ্ণাঙ্গ নাগরিক জর্জ ফ্লয়েডের হত্যাকাণ্ড এবং প্রতিবাদে মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন। সর্বোপরি এই কবিতায় শুভময়তা এবং মানুষের মুক্তির কথাই উচ্চারণ করেছেন কবি কাহ্নপাদ হায়দার।
কাহ্নপাদ হায়দার নামে কবিতা লিখলেও এই কবির মূল নাম হায়দার আলী খান। তিনি আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অর্থনীতিবিদ। বর্তমানে ডেনভার বিশ্ববিদ্যালয়ের জোসেফ কর্বেল স্কুল অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের জন এভান্স ডিস্টিংগুইশড ইউনিভার্সিটি প্রফেসর। পড়াশোনা করেছেন ঢাকা কলেজ ও যুক্তরাষ্ট্রের কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ে। অর্থনীতি ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিষয়ে তাঁর একাধিক গ্রন্থ রয়েছে। এ ছাড়া বিদেশি ভাষা থেকে নিয়মিত কবিতা অনুবাদ করেন তিনি।
আট মিনিট ছেচল্লিশ সেকেন্ড
আট মিনিট ছেচল্লিশ সেকেন্ড—
এখন এই সময়
যখন ঘড়ির কাঁটা জানান দিচ্ছে
প্রতিটি মুহূর্তকে মিলিয়ে
প্রতিটি মিনিটকে সবাক সচল করে
চলো ঘড়ির খোলস ফেলে রেখে
চলো কবিতা থেকে মিছিলে চলো
এখন সেই সময়
যখন পৃথিবীর ঘড়িতেই সময়ের হিসাব
স্তব্ধ হয়ে আছে
গোটা পৃথিবীই থমকে গেছে
থমকে গেছে গাছপালার আন্দোলন
পাতাদের সালোকসংশ্লেষণ
এখন শুধুই ঝড় আসার আগের
গাঢ় নিস্তব্ধতা
বাস্তবের অতি গভীরে আছে
আরও এক রূঢ় গহিন
বাস্তব
সেই বাস্তব থেকেই জন্ম হয়
আর এক আন্দোলনের
যার গভীরে লুকিয়ে আছে
এক সংগ্রামী প্রেম... সত্যিকার
মানুষি ভালোবাসা
সংগ্রাম ছাড়া
প্রেমকে যায় কি চেনা?
ভালোবাসা প্রেমের অমাবস্যা তারার আলোয়
পথ চিনে জ্যোৎস্নার অভিসারে ধায়
মধ্যবিত্তের মুখোশ খুলে
নীল আকাশের নিচে এলে
ভালোবাসার দেখা মেলে
আট মিনিট ছেচল্লিশ সেকেন্ড
আট মিনিট ছেচল্লিশ সেকেন্ড
আট মিনিট ছেচল্লিশ সেকেন্ড
বিপর্যস্ত মানুষের
মরণের জন্য যদি যথেষ্ট
মানুষের মতো বাঁচার সংগ্রামে কি পর্যাপ্ত নয়?
গহিন
ভালোবাসার স্বর-সংগতির জন্য যথেষ্ট?
লক্ষ-কোটি মানুষের অনেক অনেক
আট মিনিট ছেচল্লিশ সেকেন্ড সময়ের যোগফল
হার্মাদের প্রবল
জালেমের কবল
থেকে
মানবিক মূল্যবোধ
সাহসী ভালোবাসাকে
বাঁচাবে চিরদিনই...
তাই
ম্লান সূর্যমুখীর মতো
নতুন সূর্যের প্রত্যাশায়
চেয়ে আছি
আমরা সবাই
সূর্য থেকে আলো আসতে
মাত্র
আট মিনিট উনিশ সেকেন্ড...
অন্য আলোতে লেখা পাঠানোর ঠিকানা: [email protected]