জুলাই অভ্যুত্থান
দেয়ালে লেখা মানে কাগজের চেয়ে বেশি
দেয়াল হলো শহরের শরীর, যার পাশ দিয়ে মানুষ চলাচল করে, যেখানে চোখ রাখে, থামে। দেয়ালে লেখা মানে কাগজের চেয়ে বেশি। দেয়াল দৃশ্যমান থাকে, আলোচনার অংশ হয়, শাসকের পক্ষে দেয়াল মুছে ফেলা বা চাপা দেওয়া সহজ নয়।
পৃথিবীর আন্দোলনের ইতিহাসে কেবল রাজপথের মিছিল নয়, বারবার দেয়ালও হয়ে উঠেছে সংগ্রামের শরীর। চিলির গণ–আন্দোলন থেকে শুরু করে প্যারিসের আটষট্টির ছাত্র অভ্যুত্থান, হংকংয়ের ‘লেনন ওয়াল’ থেকে আরব বসন্ত—প্রতিটি বিপ্লবই তার রাজনৈতিক স্বপ্ন, ক্ষোভ ও চেতনা ফুটিয়ে তুলেছে শহরের দেয়ালে।
২০২৪ সালের জুলাইয়ে বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনও দাঁড়িয়েছে সেই ধারাবাহিকতায়। এই আন্দোলনের দৃঢ় ও গভীর প্রকাশ ছিল গ্রাফিতিতে, স্লোগানে, রঙের ভাষায়।
এই দেয়ালচিত্রগুলো নিছক শৈল্পিক প্রয়াস ছিল না। এগুলো হয়ে উঠেছিল রাষ্ট্রীয় দমন, নিষ্পেষণ ও একমুখী বয়ানের বিরুদ্ধে এক বিকল্প বয়ান নির্মাণের হাতিয়ার। ভাষার রাজনীতিতে যখন নিয়ন্ত্রণ কায়েম হয়, তখন দেয়ালে লেখা হয় প্রতিরোধের ভাষা। এই প্রতিরোধ শুধু রাজনৈতিক প্রতিবাদ নয়, বরং সাংস্কৃতিক জাগরণের ইঙ্গিতও বয়ে আনে।
২০২৪ সালের জুলাই-পরবর্তী সময়টায় বাংলাদেশের শহরগুলো যেন এক বিশাল উন্মুক্ত গ্যালারিতে রূপ নিয়েছিল। আন্দোলনের ভাষা শহরের প্রতিটি প্রাচীরে, সিমেন্ট আর ইটের গায়ে স্লোগান তুলে সরব ছিল।
বিশেষ করে ঢাকার কেন্দ্রস্থলে—টিএসসি, নীলক্ষেত, শাহবাগ, আজিজ মার্কেট, বাংলা একাডেমি, কিংবা কোনো কলেজের দেয়াল বা বাসস্ট্যান্ডের পিলারে—যেদিকে চোখ যায়, সেদিকেই ছড়িয়ে ছিল সাহসের রং। বইয়ের দোকানের পাশ থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল করিডর, এমনকি ছোট ছোট পাড়ার স্কুলের বাইরের দেয়ালেও এই গ্রাফিতি এক নতুন রাজনৈতিক আবহ তৈরি করেছিল।
প্রতিটি স্ট্রোক যেন সময়ের স্পন্দন ধারণ করছিল। ছাত্রদের হাতে আঁকা এসব প্রতিবাদী চিত্রকর্ম নিছক নান্দনিকতার বিষয় ছিল না; বরং তা ছিল একটি প্রজন্মের রাজনৈতিক আত্মপ্রকাশ, ছিল রাষ্ট্রক্ষমতার বিরুদ্ধে বিকল্প ভাষা নির্মাণের প্রচেষ্টা।
এই ভাষা আর কেবল আন্দোলনের নয়, হয়ে ওঠে নাগরিক সাংস্কৃতিক রূপ। একটি প্রজন্ম নিজেদের অস্তিত্ব, প্রত্যয় ও সম্ভাবনা—দেয়ালের গায়ে লিখে রেখে যায় যেন ইতিহাসের কাছে এক প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে: ‘আমরা দেখেছি, আমরা লিখেছি, তুমি কি শুনতে পেয়েছ?’
এগুলো কেবল আবেগময় উচ্চারণ ছিল না; বরং একটি সুস্পষ্ট দর্শন—নাগরিক অধিকারের পুনরাবিষ্কার এবং ন্যায্যতার দাবিতে রাষ্ট্রকে চ্যালেঞ্জ জানানোর এক ভাষাগত কৌশল। এই বার্তাগুলো দেয়ালের গায়ে আটকে থাকেনি। দ্রুত তা ছড়িয়ে পড়ে মানুষের মনের ভেতরেও। শহরের ভেতর এক অদৃশ্য সাংস্কৃতিক স্রোত বইতে থাকে।
এই ভাষা তাই আর কেবল আন্দোলনের নয়, হয়ে ওঠে নাগরিক সাংস্কৃতিক রূপ। একটি প্রজন্ম নিজেদের অস্তিত্ব, প্রত্যয় ও সম্ভাবনা—দেয়ালের গায়ে লিখে রেখে যায় যেন ইতিহাসের কাছে এক প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে:
‘আমরা দেখেছি, আমরা লিখেছি, তুমি কি শুনতে পেয়েছ?’
স্লোগানগুলোর সবচেয়ে শক্তিশালী দিক ছিল এদের সরলতা ও ছন্দ। এতে কোনো জটিল শব্দচয়ন ছিল না, ছিল না দুর্বোধ্য আদর্শবাদী বুলি। বরং ছিল সহজ ভাষায় বলা কঠিন সত্য, যা একজন পথচারী, একজন রিকশাচালক, কিংবা কলেজপড়ুয়া শিক্ষার্থী—সবাই অনায়াসে বুঝতে পারতেন এবং অনুধাবন করতে পারতেন। এই স্লোগানগুলো একধরনের গণভাষা হয়ে উঠেছিল। এগুলোর মধ্যে কিছু ছিল তাৎক্ষণিক আবেগ থেকে উঠে আসা—যেমন ‘বুকের ভেতর অনেক ঝড়, বুক পেতেছি গুলি কর’। আবার কিছু ছিল দীর্ঘদিনের সামাজিক বঞ্চনা ও প্রত্যাখ্যান থেকে সঞ্চিত ক্ষোভের ভাষান্তর। দেয়ালের এই শব্দচিত্র একধরনের সামাজিক সংহতির প্রতীক হয়ে দাঁড়ায়।
এসব গ্রাফিতি ও স্লোগান ক্ষণিকের প্রতিবাদকে অতিক্রম করে হয়ে উঠেছিল ঐক্যবদ্ধতার প্রতীক, রাজনীতির ভাষার বিকল্প রূপ। দেয়ালগুলো এক নতুন ধারার রাজনৈতিক ভাষ্য নির্মাণ করেছিল—যেখানে রং, শব্দ ও ছবি মিলেমিশে তৈরি করেছিল গণচেতনার এক শক্তিশালী ক্যানভাস।
এই স্লোগানগুলো আমাদের মনে করিয়ে দেয়, ভাষা কেবল ভাব প্রকাশের মাধ্যম নয়, এটি একধরনের রাজনৈতিক ক্ষমতা। এবং জুলাই ২০২৪-এর ছাত্র আন্দোলনে তরুণেরা সেই ভাষার রূপকার হয়েছিলেন। তাঁরা প্রমাণ করেছেন, একটি জাতির আত্মা কখনো পুরোপুরি নিঃশেষ হয় না—দেয়ালে দেয়ালে লেখা কিছু বাক্যই পারে তাকে জাগিয়ে তুলতে। এই আন্দোলনের সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ দিকগুলোর একটি ছিল এর স্লোগানভিত্তিক রাজনৈতিক জাগরণ।
এসব গ্রাফিতি ও স্লোগান ক্ষণিকের প্রতিবাদকে অতিক্রম করে হয়ে উঠেছিল ঐক্যবদ্ধতার প্রতীক, রাজনীতির ভাষার বিকল্প রূপ। দেয়ালগুলো এক নতুন ধারার রাজনৈতিক ভাষ্য নির্মাণ করেছিল—যেখানে রং, শব্দ ও ছবি মিলেমিশে তৈরি করেছিল গণচেতনার এক শক্তিশালী ক্যানভাস। দেশের দেয়ালজুড়ে এসব চিত্র ও নির্মিত শব্দ একটি সুসংগঠিত, ধারাবাহিক ও রাজনৈতিকভাবে পরিপক্ব প্রতিক্রিয়া, যার শিকড় ঐতিহাসিক ছাত্র আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় এবং তার দৃষ্টিপাত ছিল একটি কাঙ্ক্ষিত রাষ্ট্র–ভবিষ্যতের দিকে।
ছাত্ররা জানতেন, কেবল রাজপথে অবস্থান বা পতাকা বহন নয়, বিপ্লবের ভাষা নির্মাণ করাও একটি রাজনৈতিক কাজ। তাই তাঁরা বেছে নিয়েছিলেন দেয়াল। যেখানে বার্তাগুলো দৃশ্যমান, দীর্ঘস্থায়ী এবং সর্বসাধারণের নাগালের মধ্যে। সে কারণেই আমরা দেখতে পাই এমন চিত্রে, আবু সাঈদের রক্তাক্ত মুখ, পাশে লেখা—‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো জুলাই’। একটি রাজনৈতিক ধারার আন্তসংযোগ, যেখানে একুশের চেতনার সঙ্গে গাঁথা হচ্ছে বর্তমানের দাবি।
আন্দোলনের ভাষা সময়ের সঙ্গে যেমন বিবর্তিত হয়, তেমনি হয় এর কৌশলও। প্রথম দিকে দেয়ালচিত্রে যেভাবে সরাসরি শাসকের বিরুদ্ধে স্লোগান—‘খুনি হাসিনা’, ‘স্টেপডাউন হাসিনা’ প্রাধান্য পেয়েছিল, সময়ের পরিক্রমায় সেখানে জায়গা করে নেয় রাজনৈতিক দাবি ও আদর্শের পাঠ। এই রূপান্তরকে কেবল একটি স্ট্র্যাটেজিক পরিবর্তন হিসেবে দেখা যথেষ্ট নয়। এটি আন্দোলনের দৃষ্টিভঙ্গির পরিণত অবস্থার পরিচয় বহন করে।
বিশ্ব ইতিহাসের অনেক গণ–আন্দোলনের মতো, বাংলাদেশের এই আন্দোলনও তার নিজস্ব চিহ্ন রেখে যেতে চেয়েছে। কাগজে বা কেবল ডিজিটাল পোস্টে নয়, মানুষের দৃষ্টিসীমার মধ্যে, শহরের শরীরে। সে জন্যই দেয়ালগুলো হয়ে উঠেছিল এক বিকল্প পাঠ্যবই, এক অনানুষ্ঠানিক রাজনৈতিক ভাষ্য।
এসব বিচারে, শিক্ষার্থীদের আঁকা প্রতিটি দেয়ালচিত্র ও স্লোগান ছিল সুপরিকল্পিত রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ। এই চিত্র ও শব্দের নির্মাণ ছিল রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণাধীন মিডিয়া ও বয়ানের বিরুদ্ধে বিকল্প ন্যারেটিভ তৈরির প্রয়াস। রাষ্ট্রের সুষম ও পরিচর্যাজাত জনমত নির্মাণের বিপরীতে এই দেয়াল-ভাষা দাঁড় করিয়েছিল এক গণচেতনার পরিস্ফুটন। যাকে সমাজবিজ্ঞানীরা বলে থাকেন counter-hegemonic narrative, অর্থাৎ প্রচলিত শাসকের ভাষার বিপরীতে দাঁড়িয়ে থাকা ভাষা। এই ‘প্রতিপক্ষীয় ভাষা’ নির্মাণে শিক্ষার্থীরা দেয়ালকে বেছে নিয়েছিলেন সচেতনভাবে।
এসব গ্রাফিতি ও স্লোগান ক্ষণিকের প্রতিবাদকে অতিক্রম করে হয়ে উঠেছিল ঐক্যবদ্ধতার প্রতীক, রাজনীতির ভাষার বিকল্প রূপ। দেয়ালগুলো এক নতুন ধারার রাজনৈতিক ভাষ্য নির্মাণ করেছিল—যেখানে রং, শব্দ ও ছবি মিলেমিশে তৈরি করেছিল গণচেতনার এক শক্তিশালী ক্যানভাস।
দেয়াল হলো শহরের শরীর, যার পাশ দিয়ে মানুষ চলাচল করে, যেখানে চোখ রাখে, থামে। দেয়ালে লেখা মানে কাগজের চেয়ে বেশি। দেয়াল দৃশ্যমান থাকে, আলোচনার অংশ হয়, শাসকের পক্ষে দেয়াল মুছে ফেলা বা চাপা দেওয়া সহজ নয়। দেয়ালের ওপর ভাষা ও চিত্রের এই আক্রমণ এক অর্থে দৃষ্টিসীমার দখল।
জুলাইয়ের আন্দোলনের দার্শনিক দিক হলো—এই আন্দোলনে কেবল ছাত্ররা ছিলেন না, ছিল তাঁদের ভাষাও। যখন পুলিশি নির্যাতন, গ্রেপ্তার ও নিপীড়নে সরাসরি উপস্থিতি সম্ভব হয়নি, তখন এই দেয়াল–ভাষা হয়ে উঠেছিল আন্দোলনের বিকল্প রাস্তা। দেয়ালে থাকা প্রতিকৃতি—যেমন আবু সাঈদের রক্তাক্ত মুখ, শহীদদের ছায়া কিংবা দেশপ্রেমে উদ্দীপ্ত মুখচ্ছবি—এগুলো ছিল একধরনের ‘visual presence of resistance’, যা আন্দোলনকে ভেতর থেকে ধরে রেখেছিল। এই চিত্রের মধ্য দিয়ে ছাত্ররা নিজেদের অবস্থান জানিয়ে দিয়েছেন, এমনকি যখন তাঁরা রাজপথে নেই।
আন্দোলনের গ্রাফিতিগুলোর একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হচ্ছে—এসব মুছে ফেলার ইতিহাস। আন্দোলনের অবসান বা নিস্তব্ধতার পর সরকার ও তার মদদপুষ্ট গোষ্ঠী বিভিন্ন জায়গায় এই দেয়ালচিত্র মুছে ফেলেছে, সাদা রং দিয়ে ঢেকে দিয়েছে। কিন্তু এখানে প্রশ্ন দাঁড়ায়—মুছে ফেলা মানেই কি এই ভাষার মৃত্যু? না। বরং ইতিহাস বলে, যেসব ভাষা ও চিত্র মুছে ফেলা হয়, তারাই সবচেয়ে বেশি সময় টিকে থাকে গণচেতনায়। চিলির স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে ইরানের ‘মহিলাদের চুল খোলা’ প্রতিরোধ—দেয়ালচিত্র ও রাজনৈতিক শিল্প মোছা হয়েছে বারবার, কিন্তু তারা ইতিহাসে থেকে গেছে অমলিন।
বাংলাদেশেও এর ব্যতিক্রম নয়। এই আন্দোলনের প্রতীকী চিত্র ও স্লোগান হয়তো কোথাও কোথাও আর দৃশ্যমান নয়, চিরদিন থাকবে না, কিন্তু জুলাইয়ের দেয়াল এই জাতির গণস্মৃতির অনিবার্য অঙ্গ হয়ে গেছে।
ভবিষ্যতের কোনো গবেষক, ইতিহাসকার কিংবা নাগরিক যদি জানতে চায়—২০২৪ সালের বাংলাদেশের ছাত্রসমাজ কী প্রত্যাশা করছিল, কোন রাষ্ট্রনৈতিক ব্যর্থতার বিরুদ্ধে তাদের প্রতিবাদ, কোন আদর্শিক কাঠামোর ভিত গড়তে তারা রাস্তায় নেমেছিল, তবে এই দেয়ালচিত্রগুলোর মধ্যেই পাওয়া যাবে তার নির্ভরযোগ্য পাঠ।
জুলাই আন্দোলনের দেয়ালচিত্রগুলোতে প্রতিফলিত হয়েছে ইতিহাস-সচেতনতা এবং ভবিষ্যৎ নির্মাণের যৌথ তাগিদ। একটি সামাজিক ও ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন কীভাবে সাংস্কৃতিক হয়ে ওঠে, রাষ্ট্রবিরোধী কণ্ঠ কীভাবে নাগরিক চেতনায় রূপান্তরিত হয়, তা এই চিত্রভাষা আমাদের দেখিয়ে দিয়েছে। ‘বাংলার হিন্দু, বাংলার বৌদ্ধ, বাংলার খ্রিষ্টান, বাংলার আদিবাসী সুরক্ষার দায়িত্ব সবার’—এ ধরনের স্লোগান শুধু সহনশীলতা নয়, বহুসাংস্কৃতিক গণতন্ত্রের এক সুস্পষ্ট রাজনৈতিক ইশতেহারও বটে।
বাংলাদেশের দেয়ালচিত্র আন্দোলন যুক্ত হয় আন্তর্জাতিক গ্রাফিতি-অ্যাকটিভিজমের প্রবাহে—রিও ডি জেনেইরো, কায়রো, হংকং কিংবা ব্রিস্টলের আন্দোলন ধারার মতোই এখানে প্রতিরোধ প্রকাশ পেয়েছে দৃশ্যভাষায়। ব্যাঙ্কসি বলেছিলেন, ‘If you don’t own the means of expression, graffiti becomes your last form of negotiation.’ এই বক্তব্যের প্রেক্ষাপটে জুলাইয়ের দেয়ালচিত্র আমাদের নাগরিক সংলাপের এক সাহসী উদাহরণ।
জুলাই আন্দোলনের দেয়ালচিত্র বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক সংগ্রামের নবতর একটি অধ্যায়, এখানে দৃশ্য হয়ে উঠেছিল উচ্চারণের সমান্তরাল বাহন। এই দেয়ালগুলো এখনো দাঁড়িয়ে আছে, নিছক শারীরিক কাঠামো হিসেবে নয়, রাজনৈতিক চেতনার এক উন্মুক্ত পাঠশালা হিসেবে।